
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে মুড়াপাড়া ডিগ্রি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি কার্যক্রম চলছে। এ কাজে ফরম পূরণে সহায়তা করার জন্য ছাত্রছাত্রীদের সুবিধার্থে হেল্প ডেস্ক খুলেছিল ইসলামি ছাত্রশিবির কলেজ শাখা।
রোববার সকালে সেখানে হামলা চালান ছাত্রদল নেতাকর্মীরা। তারা টেবিল-চেয়ার ভাঙচুর করেন, ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন এবং শিবির নেতাকর্মীদের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন।
হামলার বিষয়ে জানাতে বিকালে কলেজ প্রাঙ্গণে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে শাখা ছাত্রশিবির। এ সময় লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, রোববার সকালে হেল্প ডেস্ক কার্যক্রমের মাধ্যমে একাদশ শ্রেণির ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করা হচ্ছিল। এ সময় নেতাকর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালান ছাত্রদলের চঞ্চল মিয়া, মাহবুব ভুঁইয়া ও লিখন প্রধান।
তাদের নেতৃত্বে ২০ থেকে ২৫ সন্ত্রাসী হামলায় অংশ নেয়। এতে কয়েকজন আহত হন এবং কলেজের শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তারা শিবির নেতাকর্মীদের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এতে ব্যর্থ হয়ে মোবাইল ফোন থেকে হামলার ঘটনায় ধারণ করা ভিডিও ফুটেজ ডিলিট করতে বাধ্য করেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত বক্তারা অবিলম্বে এ হামলায় জড়িতদের শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। পাশাপাশি কলেজে একটি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রশাসনের প্রতি জোর আহ্বান জানান।
এই ন্যক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছে জামায়াতে ইসলামী। দলটির কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ জেলা আমির মুহাম্মদ মমিনুল হক সরকার এবং কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও জেলা সেক্রেটারি মুহাম্মদ হাফিজুর রহমান যৌথ বিবৃতিতে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে তারা বলেন, জুলাই বিপ্লব সাধিত হয়েছে একটি বৈষম্যহীন উদার গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোনো ছাত্রসংগঠনের কল্যাণমূলক কার্যক্রমে হামলা ও তাদের আটক করে রাখার মতো ঘটনা জুলাই স্পিরিটের চেতনায় আঘাত।
হামলা ও জুলুম-নির্যাতন করে সাধারণ ছাত্রদের সমর্থন পাওয়া যায় না। যারা নির্যাতিত হয়, যাদের আওয়াজকে স্তব্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়, দিন শেষে তারাই সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের সমর্থন ও ভালোবাসায় সিক্ত হয়। যারা পেশিশক্তির ওপর ভর করে রাজনীতি করার চেষ্টা করছেন, তাদের সারা দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দিকে তাকানোর আহ্বান জানান তিনি।
হামলার অভিযোগের বিষয়ে জানতে উপজেলা ছাত্রদলের একাধিক নেতার মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হয়। কিন্তু তারা কেউ এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
রূপগঞ্জ থানার ওসি লিয়াকত হোসেন বলেন, মুড়াপাড়া ডিগ্রি কলেজে হামলার অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।