
২০০৮ সালের নির্বাচন পরিকল্পিত ছিল। সেই নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি বলেও মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড.আব্দুল মঈন খান বলেন, কোটি কোটি ভুয়া ভোটারের দায় বিএনপির উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল। অনেকেই শহর এবং গ্রামে দুই জায়গায় ভোটার হয়েছিল কিন্তু ভোট এক জায়গায় দিত।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল গত ১৫ বছর ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিল। আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করায় বিএনপির বিরুদ্ধে এক লক্ষ মামলায় প্রায় পঞ্চাশ লক্ষ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছিল।
শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান ও ফ্যাসিবাদ পতনের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ঢাকা কলেজ এলমোনাই অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃক আয়োজিত আলোচনাসভা ও দোয়া মাহফিলে এসব কথা বলেন তিনি।
ড. আব্দুল মঈন খান আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সব দিক দিয়েই দেশকে ধ্বংস করেছে। শিক্ষা ব্যবস্থাকেও পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করেছে। শেখ হাসিনার আমলে বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে ঢালাওভাবে মামলা করা হয়েছে। এসময় দেশের মানুষ কখনো আধিপত্যবাদ মেনে নেয়নি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, গত ১৫ বছরে লুটতারাজ, খুন, ছিনতাই, চাঁদাবাজি সহ এমন কোন অপকর্ম নেই যা আওয়ামী ফ্যাসিবাদীরা করে নাই । শেখ হাসিনা চলে গেলেও আরেকটি দলের ধর্মের নামে ভিন্ন চেতনার উদ্ভব পরিলক্ষিত হচ্ছে। ফ্যাসিব একমাত্রিক দেশ গঠনের গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। নতুন চেতনার আবরণ গায়ে দিয়ে মাঠে নামছে। যদি আমরা একে অপরে চিন্তাকে শ্রদ্ধা করতে শিখি তাহলে প্রকৃত গণতন্ত্র টিকে থাকবে।
ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ইলিয়াস হোসেন বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থান এবং জুলাই বিপ্লবের চেতনা ভুলে যাওয়া যাবে না। নতুন বাংলাদেশ গঠনে যেই প্রত্যাশা নিয়ে এই জুলাই বিপ্লব সংগঠিত হয়েছে সেই নতুন বাংলাদেশ গঠনে আমাদের কাজ করে যেতে হবে। আবার যেন কোনো মায়ের বুক খালি না হয়।
অপরদিকে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, এক চেতনার বদলে দেশে আরেক চেতনার উদ্ভব হয়েছে। জুলাই আন্দোলনে শিশু-কিশোররা আবাবিল পাখির ঝাঁকের মতো রাজপথে নেমে এসেছিল। এর মাধ্যমে আমরা মুক্তি পেয়েছি, গণতন্ত্রও মুক্তি পেয়েছে।
ধর্মের নামে নতুন একধরনের চেতনার উত্থান লক্ষ করা যাচ্ছে উল্লেখ করে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, একটি নির্দিষ্ট সংগঠনের লোকজন সর্বত্র অবস্থান করে আছে। তার অভিযোগ, শেখ হাসিনার প্রভাব যেন আবারও নতুন ভাবে দেশের ওপর ভর করেছে।
সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা কলেজের সাবেক ভিপি মীর সরফত আলী সপু বলেন, জুলাই আগস্ট যদি না হতো, তাহলে আমরা একত্রিত হতে পারতাম না। ফ্যাসিস্ট আমলে আমাদের পারিবারিক জীবন নিয়ে কোন নিশ্চয়তা ছিল না। ফ্যাসিবাদ যাদের জন্য মুক্ত হয়েছে সেই শহীদ আহতদের আমরা সম্মান করব। তারা হচ্ছে জাতির বীর। তারা জাতির সূর্য সন্তান।
এই দেশটা আমাদের, আমাদেরই গড়তে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারকে আমরা ধন্যবাদ জানাই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছে। আপনারা কি চান ফ্যাসিবাদ আবার নিয়ে আসতে চান? কখনোই এই বাংলাদেশে আর ফ্যাসিবাদ আসবে না।