
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেছেন, জামায়াতে ইসলামী যেনতেন নির্বাচন চায় না, জনগণও যেনতেন নির্বাচন করতে দেবে না।
যারা বলে জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য তারা বিগত ১৭ বছর আন্দোলন করেছে, তারা কি হাসিনা মার্কা নির্বাচন করে জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চায় প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে অবশ্যই আগে রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার করতে হবে, গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করতে হবে এবং প্রবাসীদের ভোটের ব্যবস্থা করতে হবে।’
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চকবাজার-বংশাল জোনের ওয়ার্ড দায়িত্বশীল সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রবাসীরা জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে উল্লেখ করে ড. মাসুদ বলেন, ‘প্রবাসীরা শুধু অর্থ দিয়ে, বুদ্ধি-পরামর্শ দিয়ে নয় বরং তাদের পুরো পরিবার দেশে জিম্মি থাকার পরও প্রবাসীরা বিদেশের মাটিতে বসে জীবনবাজি রেখে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। তাই প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে।’
দলীয় স্বার্থে নয়, জাতীয় স্বার্থে জামায়াতে ইসলামী সমাবেশের ডাক দিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দলীয় স্বার্থে যদি জামায়াতে ইসলামী সমাবেশ করতো তাহলে এ টি এম আজহারুল ইসলামের মুক্তির দাবিতে করতে পারতো, দলের নিবন্ধন ফেরতের দাবিতে করতে পারতো এমনকি দলীয় প্রতীকের দাবিতেও সমাবেশ, বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধসহ যেকোনো কর্মসূচি করতে পারতো। কিন্তু জামায়াতে ইসলামী সেটি করেনি। কারণ জামায়াতে ইসলামী সবসময়ই দলীয় স্বার্থের আগে জাতীয় স্বার্থ বিবেচনা করে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আসন্ন ১৯ জুলাই ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সাত দফা দাবিতের জামায়াতে ইসলামী যেই সমাবেশের ডাক দিয়েছে তার একটি দাবিও জামায়াতে ইসলামীর দলীয় স্বার্থে নয়। বরং প্রতিটি দাবি জাতীয় স্বার্থে।’
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি, চকবাজার-বংশাল জোনের পরিচালক দেলাওয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে এবং চকবাজার-বংশাল জোনের সহকারী পরিচালক এস এম আহসান উল্লাহর পরিচালনায় এ সমাবেশে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জোনের টিম সদস্য শেখ আবুল কাশেম, বংশাল দক্ষিণ থানা আমির মো: মাহাবুব আলম ভুঁইয়া, চকবাজার দক্ষিণ থানা আমির মো: আনিছুর রহমান, কোতয়ালী থানা আমির মো: মতিউর রহমান, বংশাল উত্তর থানা আমির মাওলানা বিলাল হুসাইন, বংশাল পূর্ব থানা আমির মাওলানা তাজুল ইসলাম, চকবাজার উত্তর থানা আমির মাওলানা মাহফুজুর রহমান, চকবাজার পূর্ব থানা আমির মো: রফিকুল ইসলাম, চকবাজার পশ্চিম থানা আমির মো: আবুল হোসেন রাজন। এছাড়াও সকল থানা সেক্রেটারিসহ দায়িত্বশীল নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
পিআর পদ্ধতির নির্বাচনে কেউ একনায়কতন্ত্র কায়েম করতে পারবে না উল্লেখ করে ড. মাসুদ বলেন, ‘এজন্যই পিআর পদ্ধতির নির্বাচনে কেউ কেউ আপত্তি জানাচ্ছে। তারা চাচ্ছে কোনোমতে একবার ক্ষমতায় বসতে পারলে হাসিনার চেয়েও ভয়াবহ ফ্যাসিবাদ কায়েমের মাধ্যমে পরিবারতন্ত্রের রাজনীতিকে রাজতন্ত্রে রূপ দিতে। এজন্য তাদের সংস্কারে আপত্তি, পিআর পদ্ধতির নির্বাচনে আপত্তি, দু’ মেয়াদের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবে না প্রস্তাবেও আপত্তি। তারা তাদের নিজেদের মতো করে সংস্কার চায়। যাতে করে শেখ হাসিনার মতো ক্ষমতায় বসে, নিজেদের মতো করে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে পারে। দলীয় স্বার্থ পরিহার করে দেশ ও জাতির স্বার্থের রাজনীতি করতে তিনি সকল রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানান।