Image description

রাজশাহী মহানগর বিএনপির এক নেতার বিরুদ্ধে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রেলওয়ে স্টেশনের একটি কক্ষ দখল করে দলীয় কার্যক্রম পরিচালনার অভিযোগ উঠেছে।

 

সম্প্রতি ওই রেলওয়ে স্টেশনটির একটি পরিত্যক্ত কক্ষ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও রং করে চেয়ার-টেবিল বসিয়ে ‘রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড’ চালাচ্ছেন  বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

স্থানীয় লোকজন বলছেন, দখলকৃত কক্ষটিতে নেতৃত্ব দেওয়া নেতার নাম মো. একরাম আলী। তিনি রাজশাহী মহানগর বিএনপির মতিহার থানা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। দিনের বেলা কক্ষটি তালাবদ্ধ থাকে। সন্ধ্যা বা রাতের দিকে মাসখানেক ধরে লোকজন নিয়ে তিনি সেখানে বসেন।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রেলওয়ে স্টেশনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সোহরাওয়ার্দী হলের উত্তর পাশে স্টেশনবাজার এলাকায় অবস্থিত। এটি বাংলাদেশ রেলওয়ের মালিকানাধীন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের চলাচলের সুবিধার্থে এই স্টেশনটি চালু করা হয়েছিল। তবে দীর্ঘদিন ধরেই স্টেশনটি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। কিছু লোকাল ট্রেন এখানে দাঁড়ায়। বেশ কয়েকজন ছিন্নমূল মানুষ সেখানে রাত কাটান।

৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ওই কক্ষটি দখলে নিয়ে তালাবদ্ধ করে করেছিল তারা। তবে মাসখানেক আগে থেকে ওই কক্ষটিতে তারা নিয়মিত বসছেন। সেটি রঙিন রং করে চেয়ার-টেবিল বসিয়ে ‘পার্টি অফিস’ বানিয়ে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। সরকারি ও পাবলিক ফাংশনের মতো জায়গায় কক্ষ দখলকে কেন্দ্র করে স্থানীয় মানুষের মনে আলোচনার খোরাক হয়েছে।  

সরেজমিন দেখা যায়, কক্ষটিতে একটি টেবিল বসানো আছে। টেবিলটির চারপাশে চেয়ার রয়েছে। সেখানে মহানগর মতিহার থানা বিএনপির সভাপতি একরাম আলী একটি চেয়ারে বসে আছেন। তার অন্তত ৮-১০ জনকেও সেই কক্ষে চেয়ারে বসে ও দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেল। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্টেশন বাজারের এক চায়ের দোকানি বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের পর কক্ষটি দখলে নেওয়া হয়েছিল। এরপর থেকে সেটি তালাবদ্ধ অবস্থায় ছিল। তবে সম্প্রতি রঙ করে চেয়ার-টেবিল বসিয়ে সেখানে নিয়মিত বসছেন তারা। শুনেছি বসার জায়গা হিসেবে কক্ষটি নিয়েছে। একরাম ভাই এই কক্ষ দখলে নেতৃত্ব দিয়েছেন।

আরেক ফল দোকানি জানান, ওই কক্ষটি আগে পরিত্যক্ত ও অপরিষ্কার ছিল। কক্ষের দরজাও ছিল না। তবে যারা কক্ষটি দখলে নিয়েছেন, ওই কক্ষে দুটি নতুন দরজাসহ দেয়ালে রং করেছেন।

কক্ষ দখলের বিষয়ে জানতে চাইলে মতিহার থানা বিএনপির সভাপতি মো. একরাম আলী বলেন, কক্ষটি জরাজীর্ণ অবস্থায় দীর্ঘদিন পড়েছিল। সেখানে মাদক সেবন ও অসামাজিক কাজ হয়। আমি খুলে সেটি পরিষ্কার করেছি। আমি দখল করছি না, জনগণের স্বার্থে সেটি জনগণ ব্যবহার করছে। সবাই বসে চা খায়। এখানে দখল করার কোনো বিষয় নেই।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ রেলওয়ের রাজশাহী পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক ফরিদ আহমেদ বলেন, আমি নতুন জয়েন করেছি। বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নই। আমি মাত্রই জেনেছি। আমি খোঁজখবর নিয়ে যদি এমন তথ্যের সত্যতা পাই, তাহলে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।