Image description
এসিড নিক্ষেপের অভিযোগ

মারধর ও এসিড নিক্ষেপের অভিযোগে চলচ্চিত্র অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজলের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আলমের আদালতে মো. রাশিদা আক্তার নামের পোশাক কারখানার এক কর্মী এই মামলার আবেদন করেন। পরে আদালত মামলাটি গ্রহণ করে অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) তদন্তের নির্দেশ দেন। মামলায় ডিপজলের পিএস মো. ফয়সালকে প্রধান আসামি করা হয়েছে।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, বাদী রাশিদা আক্তার অভিনেতা ডিপজলের ভক্ত। গত ২ জুন তিনি গাবতলী গরুর হাটে ঈদুল আজহা উপলক্ষে গরু দেখার জন্য যান। তিনি জানতে পারেন, সেখানে ডিপজল এসেছেন এবং হাটের অফিসে আছেন। তখন বাদী অফিসের ভেতরে গিয়ে ডিপজলকে সালাম দিয়ে বলেন, ‘ভাই, আপনি কেমন আছেন? আমি আপনার খুব ভক্ত, আপনি আছেন শুনে আপনার সঙ্গে দেখা করার জন্য তেতরে এলাম।

 
’ তখন ডিপজল তাঁর পিএস ফয়সালকে ধমক দিয়ে বলেন, ‘এই, এই মহিলা ভেতরে কিভাবে ঢুকল? বের কর এখান থেকে।’ তখন বাদী ডিপজলকে বলেন, ‘ভাই, আমি আপনার সঙ্গে একটু কথা বলেই চলে যাব, আমাকে বের করে দিতে বলছেন কেন?’ ডিপজল রেগে বলেন, ‘এই, তোরা এই মহিলাকে পিটিয়ে এখান থেকে বের কর।’ এরপর ডিপজলের হুকুমে ও প্ররোচনায় আসামি ফয়সাল এবং তাঁর সঙ্গে থাকা অজ্ঞাতপরিচয় দুই ব্যক্তি বাদীকে তাঁর ঘাড় ও হাত ধরে এবং তাঁর পিঠে হাত দিয়ে জোর করে অফিস থেকে টেনে বের করেন। তখন তিনি জামা-কাপড় পেঁচিয়ে মাটিতে পড়ে যান।

অভিযোগে আরো বলা হয়, বাদী রাশিদা মাটি থেকে উঠে ফয়সালকে বলেন, ‘আমি তো ডিপজল ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করে চলেই যেতাম, আপনারা আমার শরীরে হাত দিলেন কেন, আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলেন কেন?’ তখন ফয়সাল তাঁকে বলেন, ‘এখান থেকে না গেলে তোর হাত-পা ভেঙে পাশের তুরাগ নদে ফেলে দেব।’ রাশিদা প্রতিবাদ করে বলেন, ‘ভাঙেন হাত-পা, দেখি আপনাদের কত সাহস।’ এই কথা বলার সঙ্গে সঙ্গেই ফয়সাল আশপাশে থাকা অজ্ঞাতপরিচয়দের বলেন, ‘এই রশি আনত, আমার সঙ্গে প্রতিবাদ করে, কত বড় সাহস ওর।’ তখন এক ব্যক্তি গরুর রশি এনে ফয়সালের হাতে দেন। তিনি অন্য ব্যক্তিদের বলেন, ‘এই, তোরা এই মহিলাকে ধর।’ এর পরই অজ্ঞাতপরিচয় ৮-১০ জন ব্যক্তি তাঁকে চেপে ধরেন। এ সময় ফয়সাল বাদীর হাত বেঁধে ফেলেন এবং ৮-১০ জন অজ্ঞাতপরিচয় আসামি বাদীর শরীরে কিল-ঘুষি-লাথি মারতে থাকেন। আর বাদী কাঁদতে কাঁদতে বলতে থাকেন, ‘আমাকে ছাড়, আমি ডিপজল ভাইয়ের কাছে বিচার দেব।’

তখন ফয়সাল বলেন, ‘ভেতরে গেলে ডিপজল ভাই তোকে খুন করে ফেলবে।’ ফয়সাল আরো ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, ‘ওকে এইভাবে মেরে মনের জিদ কমবে না।’ এর পরই তিনি একজন ব্যক্তিকে বলেন, ‘ভেতরে এসিডের একটা ছোট গ্যালন আছে, ওটা নিয়ে আয়।’ ওই ব্যক্তি অফিসের ভেতর থেকে গ্যালন নিয়ে এসে ফয়সালের হাতে দেন। ফয়সাল গ্যালনের মুখ খুলে বাদীর শরীরে ঢেলে দেন। এতে তাঁর শরীরের ৬ শতাংশ পুড়ে যায়। পরে ৪ থেকে ১১ জুন পর্যন্ত তিনি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেল বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা নেন।