
কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার গোয়ালমারী ইউনিয়ন বিএনপির কমিটিতে কাঙ্ক্ষিত পদ না পেয়ে উপজেলা কৃষকদল নেতার মাথা ফাটালেন ঘোষিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান প্রধান।
বৃহস্পতিবার (৩জুলাই) রাতে উপজেলার গোয়ালমারী বাজারে এ ঘটনা ঘটে। আহত দাউদকান্দি উপজেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক আহমেদ হোসেন তালুকদারকে দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রাতেই ঢাকা মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছে।
দলীয় সূত্র জানায়, গত মাসে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলন সম্পন্ন করে দলটি।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দলটির নয়টি ইউনিয়নের পাঁচ সদস্য করে কমিটি ঘোষণা করা হয়। এরমধ্যে গোয়ালমারী ইউনিয়নে দলটির সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন রায়হান উদ্দিন রেনু মুন্সি ও মিজানুর রহমান প্রধান। বৃহস্পতিবার দাউদকান্দি উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক লতিফ ভূইয়া ও সদস্য সচিব ভিপি জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত গোয়ালমারী ইউনিয়নে রায়হান উদ্দিন রেনু মুন্সিকে সভাপতি এবং মিজানুর রহমান প্রধানকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করেন। এরপর মিজানুর রহমানের সমর্থকরা উপজেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক সাবেক চেয়ারম্যান আহমদ হোসেন তালুকদারের উপর হামলা চালায়। হামলায় আহত আহমদ হোসেন ঢাকা মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আহমেদ হোসেনের ছোট ভাই শাহাদাত হোসেন সাকু বলেন, আমার ভাই মিজানুর রহমানকে সমর্থন করেনি বলে সে সভাপতি হতে পারেনি এমন অভিযোগে আমার ভাইকে প্রাণে মারার উদ্দেশ্যে হামলা চালিয়েছে।
এদিকে এ হামলার ঘটনায় মিজানুর রহমান প্রধানকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন উপজেলা বিএনপি।
উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব ভিপি জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত নোটিশে উল্লেখ করা হয় যে, বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সন্ধ্যায় দাউদকান্দি উপজেলার আওতাধীন গোয়ালমারীসহ ৯টি ইউনিয়ন বিএনপির আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটি ঘোষণার পর রাত আনুমানিক সাড়ে ৯ টায় দাউদকান্দি উপজেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক ও গোয়ালমারী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আহমেদ হোসেন তালুকদারের উপর কিছু সন্ত্রাসী অতর্কিত হামলা চালিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। অনুসন্ধানে জানা যায়, এই হামলার পেছনে আপনার (মিজানুর রহমান প্রধান) সরাসরি ইন্ধন ও নির্দেশ ছিল।
এর আগেও গোয়ালমারী গ্রামের চারটি পরিবারের বাসিন্দাদের ঘরছাড়া ও গোয়ালমারী বাজারে দোকানপাটে বন্ধের পেছনে মদদদাতা হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়েছে মিজানুর রহমান প্রধানকে। এছাড়াও, গোয়ালমারী হাই স্কুলে একটি অনুষ্ঠানে মিজানুর রহমানের লোক প্রধান শিক্ষককে চেয়ার দিয়ে মারার চেষ্টা করেছিল বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে । এছাড়া ৫ আগস্টের পর থেকে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ উঠেছে মিজানুর রহমানের নামে।
উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব ভিপি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আহমেদ হোসেন তালুকদারের ওপর হামলার ঘটনায় সরাসরি ইন্ধন ও সংশ্লিষ্টতা থাকায় কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা আগামী ২৪ (চব্বিশ) ঘণ্টার মধ্যে লিখিতভাবে ব্যাখ্যা চেয়ে মিজানুর রহমানকে নোটিশ দেয়া হয়েছে। অন্যথায়, দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এবিষয়ে জানতে মিজানুর রহমান প্রধানকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এদিকে এ হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে হামলাকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী সদস্য ড. খন্দকার মারুফ হোসেন। তিনি তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে দেয়া বিবৃতিতে বলেন, সন্ত্রাসীর কোনো দল নাই। সন্ত্রাসী যে দলেরই হোক না কেনো তাকে ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নাই। অনতিবিলম্বে এই সকল সন্ত্রাসী ও দুর্বৃত্তদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।