Image description
টার্গেট জাতীয় সংসদ নির্বাচন

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কবে অনুষ্ঠিত হবে-তা নিয়ে সুস্পষ্ট ঘোষণা না থাকলেও নির্বাচনি প্রস্তুতিতে থেমে নেই ইসলামি দলগুলো। তবে নির্বাচনের বিষয়ে তারা গুরুত্ব দিচ্ছে ঐক্যে। চাইছে ৩০০ আসনেই দলগুলোর পক্ষে একক প্রার্থী দিতে। অর্থাৎ পারস্পরিক সমঝোতার মাধ্যমে এক আসনে ইসলামি দলগুলোর একাধিক প্রার্থী দাঁড়াবে না। এ লক্ষ্যে দলগুলোর মধ্যে সমন্বয় জোরদার এবং সম্ভাব্য জোট গঠনের বিষয়েও আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে তারা। এ পর্যন্ত জোট গঠনের বিষয়ে সুস্পষ্ট বক্তব্য না দিলেও আগামী নির্বাচনের আগে ইসলামি দলগুলোর নির্বাচনি ঐক্যের সম্ভাবনা ক্রমেই আরও সুসংহত হচ্ছে বলে মনে করছেন দলগুলোর নেতারা। জানা যায়, দেশে নিবন্ধিত ৫৩টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ইসলামি দল রয়েছে ১১টি। এর মধ্যে ইসলামী আন্দোলন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও খেলাফত মজলিসের প্রভাব বেশি। তবে বর্তমানে নিবন্ধন না থাকলেও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে রাজনৈতিক অঙ্গনে ইসলামি দলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে প্রভাবশালী বিবেচনা করা হয়। এ ছাড়া অন্য নিবন্ধিত দলগুলোর মধ্যে রয়েছে- বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, ইসলামী ঐক্যজোট, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, ইসলামিক ফ্রন্ট, বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশন, জাকের পার্টি ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি। এর বাইরে নিজেদের অরাজনৈতিক সংগঠন দাবি করা হেফাজতে ইসলামেরও ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রয়েছে। ইসলামি দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আগামী নির্বাচনে ইসলামি দলগুলোর মধ্যে নির্বাচনি ঐক্য হতে পারে। এ বিষয়ে দলগুলোর মধ্যে নিয়মিত সভাও হচ্ছে। যদিও তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। বর্তমানে দলগুলো এককভাবে নির্বাচনের জন্য নিজেদের প্রার্থীদের প্রস্তুত করছে। এসব দল রাজনৈতিক প্রভাব বাড়ানো এবং নিজেদের অবস্থান আরও শক্তিশালী করতে কৌশল নির্ধারণ করছে। প্রায় সব আসনে জামায়াত সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করলেও ঐক্যের প্রচেষ্টাও চালিয়ে যাচ্ছে। নিয়মিত ইসলামি দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে যাচ্ছে। দলটির নেতৃবৃন্দ বিভিন্ন জেলায় সভা-সমাবেশ করছেন।

এ বিষয়ে ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, ইসলামের পক্ষে ভোট কেন্দ্রে আমরা যেন একটি ব্যালট বাক্স বসাতে পারি। সে চেষ্টাই চলছে। ৫৩ বছর ধরে ইসলামি দলগুলোকে বিভিন্ন কৌশলে দূরে রাখা হয়েছে। আগে অনেক রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় যেতে আমাদের সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করেছে। জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ইসলামি অন্যান্য দলগুলোর সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ চলছে। আমরা একে অপরের সঙ্গে বসছি। আগের চেয়ে আমাদের মধ্যে সম্পর্ক আরও মজবুত হয়েছে। একক না জোটগতভাবে ভোট হবে তা দলীয় ফোরামে আলোচনা করেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

নির্বাচন ঘিরে ইসলামি দলগুলোতে ঐক্যের আলোচনা চলছে স্বীকার করে খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় প্রচার ও তথ্য সম্পাদক আবদুল হাফিজ খসরু বলেন, ইসলামি দলগুলোর মধ্যে নির্বাচনি সমঝোতার বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। অর্থাৎ এক আসনে অধিক ইসলামি দলগুলোর প্রার্থী দাঁড়াবে না। তবে এটা প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার কতদিন থাকবে সেটা অনিশ্চিত। তবে নির্বাচন যখনই হয়, আমরা প্রস্তুত রয়েছি। বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে আমির মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদি বলেন, নির্বাচন সামনে রেখে বৃহত্তর ঐক্য গঠনের চেষ্টা করছি। আশা করছি এতে সফল হব। ইসলামি দলগুলো এক প্ল্যাটফর্মে এসে একক প্রতীকে ভোট করলে ফলাফল ভিন্ন হবে। দেশবাসী অতীতে তিন দলের শাসন দেখেছে। তারা সুশাসন প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থ হয়েছে। মানুষ এবার নতুন কিছু প্রত্যাশা করছে।

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী বলেন, ইসলামি দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা হলে তখন আলোচনা করেই প্রার্থীদের চূড়ান্ত করা হবে। তবে এটা এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। আপাতত আমরা নিজেদের প্রস্তুতি নিচ্ছি।