Image description

সত্তরোর্ধ্ব ব্যবসায়ী খুইল্লা মিয়া সওদাগর। তার হাতে-পায়ে মোটা দড়ি দিয়ে শক্ত করে বাঁধা জানালার সঙ্গে। যে অংশে বাঁধা সেখানে কালচে দাগ পড়ে গেছে। তার ওপর চালানো হয় পাশবিক নির্যাতন। ১৪ দিন ধরে তাকে এভাবে নির্যাতন করা হয়। অভিযোগ উঠেছে, সম্পত্তি লিখে নিতে তার স্ত্রী-সন্তানেরাই এই নির্যাতন চালিয়েছেন।

চট্টগ্রাম নগরীর পশ্চিম বাকলিয়া শান্তিনগর নিরাপদ হাউজিং সোসাইটির নিজ মালিকানাধীন ভবনের একটি কক্ষে তাকে (খুইল্লা মিয়া) দিনের পর দিন এমন নির্যাতনের ঘটনা ঘটলেও এতদিন কেউ টের পায়নি। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় স্থানীয়রা পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ওই বাসায় গিয়ে খুইল্লা মিয়াকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করেন। একই সময় নির্যাতনের শিকার ব্যক্তির দুই সন্তান আব্দুল আউয়াল ও আব্দুল রহিমকে ধরে বাকলিয়া থানা-পুলিশে সোপর্দ করেন। তাদের মধ্যে আব্দুল আউয়াল পরিবারের বড় সন্তান।

জানা গেছে, খুইল্লা মিয়ার সব সম্পত্তি লিখে দিতে বেশ কিছুদিন ধরে সন্তানেরা চাপ দিচ্ছিলেন। খুইল্লা মিয়া সন্তানদের বোঝাতে চেষ্টা করছিলেন- তিনি মারা গেলে নিয়ম অনুযায়ী সম্পত্তি তারাই পাবেন। তবে এসব কথা মানতে রাজি ছিলেন না সন্তানেরা। তারা ১৪ দিন আগে খুইল্লা মিয়াকে ঘরের একটি কক্ষে রশি দিয়ে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন চালান। তাকে আটকে রাখেন।

 

খুইল্লা মিয়াকে উদ্ধারে যাওয়া নগর ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল কাদের জানান, গত শুক্রবার রাত আনুমানিক ১১টার সময় সাবেক কাউন্সিলর আরিফুল ইসলাম ফোন করে জানান, মদিনা ভবনের দ্বিতীয় তলায় এক বৃদ্ধকে ঘরের ভেতরে বেঁধে নির্যাতন করা হচ্ছে। পাশের ভবন থেকে লোকজন বিষয়টি দেখেছে। খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যায়।

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ব্যবসায়ী খুইল্লা মিয়ার স্ত্রী, দুই মেয়ে ও দুই ছেলে রয়েছেন। তিনি জানান, নির্যাতনের ঘটনায় দুজনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে

বাকলিয়া থানার এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, সম্পত্তিসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে সন্তানদের হাতে লোকটি নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। শনিবার দুপুরে অভিযুক্ত দুজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ৫৪ ধারায় অভিযোগ এনে আটকে রাখার আবেদন করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা।