Image description

প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মসূচি এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের দল গঠনের প্রক্রিয়া নিয়ে এই ফেব্রুয়ারিতে রাজনীতির মাঠ বেশ উত্তপ্ত থাকতে পারে। রাজনীতিসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতে, নতুন দল গঠন করা হলে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন মেরুকরণ হবে। আর আওয়ামী লীগের কর্মসূচি ঘিরে বিপক্ষের শক্তিগুলো সক্রিয় হলে রাজপথে উত্তেজনা ছড়াতে পারে। ফলে রাজনৈতিক নানা ঘটনার কারণে ফেব্রুয়ারি মাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।

এখনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না দিলেও মধ্য ফেব্রুয়ারিতে কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। আজ ১ ফেব্রুয়ারি থেকে টানা কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। ঘোষণা না দিলেও আওয়ামী লীগের কর্মসূচি ঠেকাতে মাঠে থাকবে জামায়াত। প্রধান তিন রাজনৈতিক শক্তির পাশাপাশি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতৃত্বে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন হওয়ারও কথা রয়েছে এই মাসে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামাটাই বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ বিএনপি-জামায়াতের পাশাপাশি বৈষম্যবিরোধীরাও রাজপথে তাদের মোকাবেলা করবে। তবে বিএনপি মাঠে নামলে সেটি রাজপথকে উত্তপ্ত করবে, তা বলা যায়। আর বৈষম্যবিরোধীদের রাজনৈতিক দল গঠন নিয়ে এরই মধ্যে একধরনের উত্তেজনা বিরাজ করছে।

বিএনপি অবশ্য আওয়ামী লীগের কর্মসূচিকে অতটা গুরুত্ব দিচ্ছে না। নতুন দল গঠনের বিষয়েও তারা তেমন চিন্তিত নয়। তবে এই দল গঠনে সরকারের সংশ্লিষ্টতা আছেএমন ধারণা থেকে আপত্তি জানাচ্ছে দলটি। জামায়াত আনুষ্ঠানিক কোনো কর্মসূচি না দিলেও তারা গতকাল শুক্রবারও জুলাই গণহত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। এর বাইরে ফ্যাসিবাদবিরোধী কর্মসূচি নিয়ে মাঠে খুবই সক্রিয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।

উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগের ফেসবুক পেজে নির্যাতন ও নিপীড়নের প্রতিবাদ, দেশের জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন দাবিতে ১ থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি লিফলেট বা প্রচারপত্র বিলি, ৬ ফেব্রুয়ারি প্রতিবাদ মিছিল ও সমাবেশ, ১০ ফেব্রুয়ারি বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ, ১৬ ফেব্রুয়ারি অবরোধ এবং ১৮ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা সর্বাত্মক কঠোর হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।

এই কর্মসূচির পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম গত বুধবার ফেসবুকে এক পোস্টে বলেন, আওয়ামী লীগের পতাকাতলে কেউ যদি অবৈধ বিক্ষোভ করার সাহস করে, তবে তাকে আইনের মুখোমুখি হতে হবে। তিনি বলেন, আমরা দেশকে সহিংসতার দিকে ঠেলে দেওয়ার কোনো ধরনের প্রচেষ্টাকে সুযোগ দেব না।

প্রেস সচিবের বক্তব্যে স্পষ্ট, আওয়ামী লীগের কর্মসূচির বিষয়ে সরকার কঠোর থাকবে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে সে রকম দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

আওয়ামী লীগকে গুরুত্ব দিচ্ছে না, নির্বাচনে মনোযোগ বিএনপির

আওয়ামী লীগকে ঠেকাতে পৃথক কোনো কর্মসূচি দেওয়ার সিদ্ধান্ত এখনো নেয়নি বিএনপি। এই ইস্যুতে ঘোষণা দিয়ে কোনো কর্মসূচি পালনের পক্ষেও নয় তারা। দলের নেতারা মনে করেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে এই মুহূর্তে আওয়ামী লীগের কোনো গুরুত্ব নেই। তাদের ঠেকাতে কর্মসূচি দিয়ে গুরুত্ব বাড়ানো এবং ইস্যু তৈরি করার কোনো মানে হয় না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য কালের কণ্ঠকে বলেন, নির্বাচন হচ্ছে সব সমস্যার সমাধান। নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা হলে আওয়ামী লীগের তৎপরতা থাকত না। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যে দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে চায়, তা তাদের কর্মসূচির ধরন দেখে বোঝা যাচ্ছে। নইলে এমন গণহত্যা চালানোর পর কী করে ছয় মাসের মাথায় হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচি দেয়! বিএনপি নেতা মনে করেন, আওয়ামী লীগের কোনো অনুশোচনা হয়নি। তাই তাদের দল হিসেবেও নিষিদ্ধ করতে হবে।

বিএনপি নেতারা মনে করেন, আওয়ামী লীগের কর্মসূচি জনজীবনে কোনো প্রভাবই ফেলতে পারবে না। জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগকে প্রতিহত করবে। বিএনপির প্রধান সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল এরই মধ্যে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগকে প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে।

তবে মধ্য ফেব্রুয়ারিতে বিএনপি দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র ফেরানোর দাবিতে ঢাকাসহ সারা দেশে কর্মসূচি দেবে। ফলে বিএনপি নেতাকর্মীরা রাজপথে সক্রিয় থেকে পাড়া-মহল্লায় একধরনের পাহারায় থাকবে। এর প্রভাব পড়বে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে। তাঁরা কেউ কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামতে সাহস পাবেন না বলে মনে করেন দলের নেতাকর্মীরা।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ কালের কণ্ঠকে বলেন, প্রকাশ্য কিংবা গোপনেকোনোভাবেই আওয়ামী লীগের কর্মসূচি পালনের নৈতিক অধিকার নেই। জুলাই গণহত্যার দায়ে দলটির নেতাদের নামে মামলা করা হয়েছে, বিচার শুরু হয়েছে। আমরা দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার চাইছি। এই দলটিকে বিচারের মাধ্যমে নিষিদ্ধ করতে হবে।

দল গঠনে সক্রিয় বৈষম্যবিরোধীরা

ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করতে বেশ সক্রিয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি। সংগঠনের নেতারা চাচ্ছেন ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নতুন দলের নাম ও আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করতে। জানা গেছে, দলের নেতৃত্বে কারা আসবেন সেটিতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। 

দল গঠন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত একজন সমন্বয়ক বলেন, দলের নাম চূড়ান্তকরণ, গঠনতন্ত্র প্রণয়নসহ বেশ কিছু কাজ চলছে। দল গঠনের বিষয়ে অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের মতামত নেওয়া হচ্ছে। প্রথমে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হবে। পরে কাউন্সিলের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে।

নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করলে নাহিদ ইসলাম অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করে দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে যেতে পারেন বলে গুঞ্জন আছে। অবশ্য এ বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি। গত বৃহস্পতিবার নাহিদ ইসলাম বলেন, রাজনৈতিক দল গঠন ও পদত্যাগের ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবে সরকারে থেকে কোনো রাজনৈতিক দলে থাকব না।

গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীকে আহ্বায়ক এবং আখতার হোসেনকে সদস্যসচিব করে জাতীয় নাগরিক কমিটি গঠন করা হয়। তখন থেকেই ছাত্রদের নতুন দল গঠন করার বিষয়ে নানা আলাপ-আলোচনা শুরু হয়। এখন এটিকে দলীয় কাঠামোতে রূপান্তর করার চেষ্টা চলছে।

ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জুলাই আন্দোলনে নাহিদ ইসলামের জনপ্রিয়তার বিষয়টি মাথায় রেখে তাঁকে দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়ার চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। তবে সেটি আহ্বায়ক কমিটিতে নাকি কাউন্সিলের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি হলে, তা এখনো নিশ্চিত নয়।

সম্প্রতি জাতীয় নাগরিক কমিটির একটি বৈঠকে বেশির ভাগ সদস্য মতামত দিয়েছেন যে অন্তর্বর্তী সরকারে থাকা এক বা একাধিক ছাত্র উপদেষ্টার পদত্যাগ করে নতুন দলের নেতৃত্বে সম্পৃক্ত হওয়া উচিত। তবে সরকারের ভেতরে প্রভাব ধরে রাখতে উপদেষ্টাদের এখনই পদত্যাগের পক্ষে নয় কেউ কেউ।

কলকাতার বৈঠক থেকে আওয়ামী লীগের কর্মসূচি  

১৮ দিনের কর্মসূচি নিয়ে আজ শনিবার থেকে মাঠে নামার ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। সরকার থেকে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার প্রায় ছয় মাস পর এটিই হতে যাচ্ছে দলটির সবচেয়ে বড় কর্মসূচি। বলা চলে, প্রথম রাজনৈতিক কর্মসূচি। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের পদত্যাগের দাবিতে হরতাল-অবরোধের মতোও কর্মসূচি পালন করবে দলটি। এর আগে ১০ নভেম্বর নূর হোসেন দিবস পালন করতে দলীয় নেতাকর্মীদের আহ্বান জানানো হয়েছিল। এবারের কর্মসূচি বাস্তবায়নকে মাঠে ফেরার পরীক্ষা হিসেবে দেখছে আওয়ামী লীগ। 

জানা গেছে, গত মঙ্গলবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার ট্যাঙ্গরা এলাকায় আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক বসে। সরকার পতনের পর এটিই ছিল দলের প্রথম ওয়ার্কিং কমিটির সভা। ওই অঞ্চলে একটি বাসায় অবস্থান করছেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। তাঁর বাসায়ই বৈঠকটি করা হয়। 

কলকাতাসহ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ওয়ার্কিং কমিটির যেসব সদস্য অবস্থান করছেন তাঁরা প্রায় সবাই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। ভারতে থাকছেন না এমন সদস্যরা এতে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও টেলিফোনে সভায় যুক্ত ছিলেন। তিনি সবার বক্তব্য শোনেন এবং দিকনির্দেশনা দেন। ওই বৈঠক থেকেই ফেব্রুয়ারির কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। 

এত দিন বিদেশের মাটিতে সভা-সমাবেশ করেছে আওয়ামী লীগ। বাইরে থেকে ধীরে ধীরে ঘরে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিল দলটি। এ যাত্রায় ১৮ দিনে পাঁচ ধরনের কর্মসূচির প্রস্তাব করে দলের ওয়ার্কিং কমিটি। সহজ থেকে ধারাবাহিকভাবে কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে আজ থেকে আগামী বুধবার পর্যন্ত সারা দেশে জনমত গড়ে তুলতে লিফলেট বা প্রচারপত্র বিলি করা হবে। আগামী বৃহস্পতিবার প্রতিবাদ মিছিল ও সমাবেশ পালন করা হবে। মাঝে তিন দিন বিরতি দিয়ে ১০ ফেব্রুয়ারি সোমবার সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ পালিত হবে। এর পরের সপ্তাহে অবরোধ ও হরতাল ডাকা হয়েছে। ১৬ ফেব্রুয়ারি অবরোধ কর্মসূচি এবং ১৮ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা সর্বাত্মক কঠোর হরতাল পালন করবে আওয়ামী লীগ।

কর্মসূচি ঘোষণার বিবৃতিতে দলটি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, দেশের মানুষের রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের এসব কর্মসূচিতে কোনো প্রকার বাধা দেওয়া হলে আরো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

ওয়ার্কিং কমিটির সেই বৈঠকে অংশ নেওয়া এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালের কণ্ঠকে বলেন, দলের নীতিনির্ধারণী ফোরাম থেকে কর্মসূচির ঘোষণা এসেছে। দলের সভাপতি শেখ হাসিনা কর্মসূচি সফল করতে সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন।

দলীয় কর্মসূচি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকার, প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত নেতারা আওয়ামী লীগের সামনে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবেনএটি স্পষ্টত বোঝা যাচ্ছে। দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও মামলার প্রকোপ তুলনামূলক কিছুটা কমলেও ভয় কাটেনি। এমন পরিস্থিতিতে কর্মসূচি পালনের ক্ষেত্রে মাঠে হামলা ও মামলার ঝুঁকি দুটিই থাকছে।

এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম কালের কণ্ঠকে বলেন, আওয়ামী লীগ যুগে যুগে গড়ে ওঠা দল। এই দল এক দিনে বড় হয়নি। কোটি কোটি মানুষ আওয়ামী লীগকে হৃদয়ে ধারণ করে। হামলা ও মামলার ভয় দেখিয়ে আমাদের দমিয়ে রাখা যাবে না। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে স্বৈরাচারী ইউনূসের পতন ঘটাবে আওয়ামী লীগ।

কর্মসূচির বিষয়ে আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের একাধিক নেতা কালের কণ্ঠকে বলছেন, এত বড় দল, এটার ফাংশন লাগবে। তৃণমূলের নেতাকর্মীদের বাগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। কর্মীদের উজ্জীবিত করতে হবে, মাঠে ফিরতে হবে। গণতন্ত্রচর্চায় এমন কর্মসূচির বিকল্প নেই।

আওয়ামী লীগের অভিযোগ, তৃণমূল পর্যায়ের কয়েক শ সাবেক জনপ্রতিনিধির সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা যোগাযোগ করছেন। তাঁরা যে দলটি করবেন সেখানে আওয়ামী লীগের মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের তাঁরা যুক্ত করতে চান। এটিও দল ভাঙার একটি কৌশল হিসেবে কাজ করছে।

দলের সভাপতিমণ্ডলীর এক সদস্য কালের কণ্ঠকে বলেন, দল ভাঙার একটা চেষ্টা চলছে, সামনে এটা আরো বাড়বে। ক্লিন নেতাকর্মীদের ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। দলের ভাঙন ঠেকাতে কর্মসূচি গুরুত্বপূর্ণ।

এদিকে মাঠের আন্দোলনের সঙ্গে টেবিলের আলোচনায় জোর দিচ্ছে আওয়ামী লীগ। দেশের বাইরে বৈঠকের পাশাপাশি দেশেও বৈঠক করা হচ্ছে। গত ডিসেম্বরে জাতিসংঘের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে ঢাকায় আওয়ামী লীগের বৈঠক হয়েছে। দলের হয়ে বৈঠকে নেতৃত্ব দেন আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী। বৈঠকটি প্রথমে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে অবস্থিত দলীয় কার্যালয়ে হওয়ার কথা থাকলেও পরে সাবের হোসেন চৌধুরীর বাসায় হয়। শিগগিরই ঢাকায় আসছে যুক্তরাজ্যের সর্বদলীয় সংসদীয় দল। তাদের সঙ্গেও ঢাকায় আওয়ামী লীগের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।