Image description
তারেক রহমানের ওপর আস্থা সবার

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক কূটনীতিক ও মানবাধিকারকর্মী এলিয়ানর রুজভেল্টের মতে, ‘একজন ভালো নেতা মানুষকে নেতার ওপর আস্থা রাখতে অনুপ্রাণিত করেন। কিন্তু একজন মহান নেতা মানুষকে নিজের ওপর আস্থা রাখতে অনুপ্রাণিত করেন।’ মার্কিন সাবেক ফার্স্ট লেডির এই উক্তির সূত্র ধরেই বলতে হয়, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফেরার পর জনমনে এক ধরনের ইতিবাচক মনোভাব তৈরি হয়েছে। মানুষ তার ওপরে আস্থা রেখেছেন। অনেকেই তাকে এই মুহূর্তে দেশের রাজনীতিতে একমাত্র বিকল্প হিসাবেই দেখছেন। কারণ ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের পর আওয়ামী লীগ পালিয়ে গেছে। দলটির কার্যক্রমও নিষিদ্ধ। অন্যদিকে জামায়াত বড় দল হলেও নির্বাচনে তারা ক্ষমতায় আসতে পারবেন কিনা-তা নিশ্চিত নয়। বরং কোনো কোনো ইস্যুতে দলটিকে নিয়ে জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বড় দল হিসাবে বিএনপি ও তারেক রহমানকে ঘিরেই প্রত্যাশা বেশি। তবে তিনি কতখানি সক্ষম হবেন সেই প্রত্যাশা পূরণে ইতোমধ্যেই সে আলোচনা শুরু হয়েছে।

ইংরেজ কবি ও নাট্যকার শেকসপিয়ার বলেছেন, প্রত্যাশা সব মর্মবেদনার কেন্দ্রবিন্দু। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশে দীর্ঘদিন ধরে চলা রাজনৈতিক শূন্যতার মধ্যে তারেক রহমানের দেশে ফেরা মানুষের মধ্যে নতুন করে আশার সঞ্চার করেছে। তিনি রাজনৈতিক নেতা হিসাবে জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য। রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহ মনে করেন, তারেক রহমানকে তার পিতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এবং মা বেগম খালেদা জিয়ার আদর্শের প্রতি অটল থেকে কাজ করতে হবে। রাষ্ট্রচিন্তক অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হকের মতে, অতীতের ভুল ও ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে এবং অভিজ্ঞতার আলোকে তাকে পথ চলতে হবে। সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, যে প্ল্যানের কথা তারেক রহমান বলেছেন, সেটির প্র্যাকটিস এখনই শুরু করতে হবে। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামানের মতে, অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে জনগণের প্রত্যশা বিশাল। তারা কর্তৃত্ববাদী আচরণ পরিহার চান।

তারেক রহমানকে নিয়ে রাজনীতি বিশ্লেষকদের ধারণা আরও প্রতিষ্ঠা পেয়েছে বৃহস্পতিবার সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তার দেওয়া বক্তব্যকে কেন্দ্র করে। বক্তব্যে তিনি দুহাত তুলে আল্লাহর দরবারে দোয়া করে রহমত চেয়েছেন। বলেছেন মহানবীর ন্যায়পরায়ণতার কথা। যে কোনো মূল্যে শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার প্রত্যয়ের পাশাপাশি সব ধরনের উসকানির মুখে শান্ত থাকারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, হিন্দুসহ সবাই মিলে নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ার কথা বলেছেন। তিনি সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে বলেছেন। তরুণ প্রজন্মকে ইতিবাচক বার্তা দিয়েছেন। দেশ ও মানুষকে নিয়ে পরিকল্পনার বিষয়ে বলেছেন, ‘আই হ্যাভ এ প্ল্যান’। বিশ্লেষকরা তার এ বক্তব্যকে রাষ্ট্রনায়কোচিত বলে মন্তব্য করেছেন। জনগণের নেতা হয়ে উঠে এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নকেই তারা এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ হিসাবে দেখছেন। এক্ষেত্রে তিনি কতটা সফল হবেন সুধী মহল থেকে সর্বত্র চলছে সেই আলোচনা।

এদিকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন ফ্যাসিস্ট সরকার বিদায়ের পর বস্তুত বাংলাদেশের রাজনীতি এক ধরনের শূন্যতা তৈরি হয়। সরকারপ্রধান হিসাবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করে। অন্যদিকে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিভিন্ন ইস্যুতে শুরু হয় মতবিরোধ। সঙ্গে ছিল মব ভায়োলেন্স ও রাজনৈতিক সহিংসতা। এসব ঘটনা মানুষকে উদ্বিগ্ন করে তোলে। ফ্যাসিস্ট সরকারের সময়ে দেশের রাষ্ট্রীয় কাঠামোগুলো ভেঙে পড়েছিল। পুলিশ ছিল সবচেয়ে ভঙ্গুর অবস্থায়। বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনও নানা সুবিধা আদায়ের দাবি নিয়ে মাঠে নামে। বিশৃঙ্খল এই পরিস্থিতি আলোচনা শুরু হয়, এখন তাহলে জনগণের ত্রাণকর্তা কে হবেন? কে এই পরিস্থিতি থেকে দেশকে রক্ষা করবেন? এমন পরিস্থিতির মধ্যে তারেক রহমান স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন। পরিশীলিত ও ভারসাম্যমূলক বক্তব্যের মধ্য দিয়ে আলোচনায় স্থান করে নেন তিনি। তার দেওয়া বক্তব্য সমাজে এক ধরনের আশার সঞ্চার করেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানতে চাইলে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু যুগান্তরকে বলেন, তারেক রহমান এতদিন ভার্চুয়াল মাধ্যমে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে যেসব মেসেজ ও বক্তব্য জাতির উদ্দেশে দিয়েছেন তা আমরা রাজনৈতিক সচেতন সবাইই ওয়াকিবহাল ছিলাম। কথা হলো, দেশে ফেরার পর তিনি নতুন কোনো কথা বলেছেন বা মেসেজ দিয়েছেন কিনা? দেশে ফেরার পর আমি তার বক্তব্যে শক্তিশালী যে ইঙ্গিত পেলাম সেটা হলো দেশকে নিয়ে, দেশের জনগণের জন্য, উনার একটা প্ল্যান আছে। আমার মনে হয় এখন মানুষের প্রধান কৌতূহল বা প্রত্যাশা হলো মানুষ জানতে চায় সেই প্ল্যানটা কী? উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ধরা যাক একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসাবে আমার প্রত্যাশা হলো-ভিন্নমতের রাজনীতির গণতান্ত্রিক স্পেস তৈরিতে তিনি কী ভাবছেন সেটা জানা। একজন বেকার হয়তো চাইবেন দেশের বিশাল জনগোষ্ঠীর বেকারত্ব নিরসনে তার পরিকল্পনাটা কী? দেশের ব্যবসায়ীরা ভাববেন হয়রানি, চাঁদাবাজি থেকে তাদের মুক্তি দিতে তারেক রহমানের কার্যকর প্ল্যানটা কি ইত্যাদি।

ড. মাহবুব উল্লাহ : রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. মাহবুব উল্লাহ যুগান্তরকে বলেন, প্রত্যাশা হলো বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ন রাখতে যা যা করা দরকার, সেসব পদক্ষেপ তিনি নেবেন। দ্বিতীয়ত, দেশ শাসনে বা দেশ পরিচালনায় নেতৃত্বে কোনোরকম অসহিষ্ণুতার স্থান থাকবে না। তৃতীয়ত, অভিজ্ঞ মানুষের পরামর্শ শুনে কাজ করবেন। এছাড়া তিনি তার পরিকল্পনার কথা বলেছেন। যদিও এই পরিকল্পনা সম্পর্কে আমরা এখনো কিছু জানি না। তবে এটা নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিত। এটা নিয়ে তিনি সভা-সেমিনারের আয়োজন করতে পারেন। অভিজ্ঞরা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পরামর্শ দিতে পারেন। কারণ তার এই পরিকল্পনা শুধু তার নিজের নয়; এটা জনগণের সম্পত্তি। এখানে জনগণকে সম্পৃক্ত করা উচিত।

তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে ভঙ্গুর। এটাকে স্বমহিমায় প্রদর্শিত করতে না পারলে দেশের সামনে সমূহ বিপদ আছে। কারণ আমি মনে করি, রাষ্ট্রটা এখন ইংরেজিতে বললে ‘ফ্রাগমেন্টেড অ্যান্ড ফ্র্যাক্টচার্ড’। তার মানে ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গেছে। আমলাতন্ত্র ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গেছে। পুলিশ ধ্বংস হয়ে গেছে। তারা তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারছে না। তাদের মধ্যে নানারকম রাজনৈতিক ক্রিয়া এখনো ক্রিয়াশীল রয়েছে। বিচার বিভাগের অবস্থাও তথৈবচ। হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনের পর সেনাবাহিনীর মর্যাদাও পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে যে বিচার শুরু হয়েছে, তা অব্যাহত রাখা এবং যৌক্তিক পরিণতিতে নিয়ে যেতে হবে। বিডিআর হত্যাকাণ্ডের বিচারের ব্যবস্থাও করতে হবে। তারেক রহমানকে দলের মধ্যে যারা অবাঞ্ছিত কার্যকলাপে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থার নিতে হবে। তিনি বলেন, শেষ কথা হলো, তারেক রহমানকে তার পিতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এবং তার মা বেগম খালেদা জিয়ার আদর্শের প্রতি অটল থাকতে হবে।

আবুল কাসেম ফজলুল হক : বাংলা একাডেমির সভাপতি ও সমাজচিন্তক অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক যুগান্তরকে বলেন, দেশে দীর্ঘদিন ধরেই রাজনীতিতে একটা শূন্যতা আছে। রাজনৈতিক চিন্তাভাবনা বা রাজনৈতিক বক্তব্য সেই অর্থে ছিল না। এই শূন্যতার মধ্যে তারেক রহমান এসেছেন। তিনি রাজনৈতিক নেতা হিসাবে জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হচ্ছেন। এটা তো আনন্দের কথা। এখন তিনি যা বলেছেন সেটা তো শুধু জনগণের মন জয় করার জন্য নয়। রাজনৈতিক নেতা হিসাবে এখন তাকে কাজের মধ্য দিয়ে এগুলো প্রমাণ করতে হবে। তিনি যদি সেভাবে দেশবাসীকে নেতৃত্ব দিতে পারেন, তাহলে সেটা আমাদের সবার জন্যই খুব সৌভাগ্যের ব্যাপার হবে। এখন তার কাজ দিয়ে ধীরে ধীরে প্রমাণ হবে। তিনি আরও বলেন, রাজনীতি করতে গেলে অনেক কঠিন ও কঠোর পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়। অতীতে যারা আমাদের বড় নেতা হয়েছেন, তারা প্রত্যেকে জেল খেটেছেন। নির্যাতন সহ্য করেছেন। আবার জনগণের মধ্যে গিয়ে জনগণের দ্বারা অভিনন্দিত হয়েছেন।

অন্তর্ভুক্তিমূল বা ইনক্লুসিভ সোসাইটি করার জন্য যা যা করা দরকার সেগুলো অবশ্যই তারেক রহমানের করা উচিত মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, সমাজের সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে। অতীতে রাজনীতিবিদরা যেসব ভুল করেছে একই ভুল যদি তিনি করেন তাহলে রাষ্ট্রের জন্য ভালো হবে না। অতীতের ভুল ও অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে কাজ করতে হবে এবং এগিয়ে যেতে হবে। অতীতে যারা আমাদের বড় নেতা হয়েছেন, শেরেবাংলা একে ফজলুল হক, মওনালা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, শেখ মুজিবুর রহমান; তারা প্রত্যেকেই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে এগিয়েছেন। তাদেরও অনেক সীমাবদ্ধতা ছিল। তারপরও এই তিনজনই আমাদের বড় নেতা।

বদিউল আলম মজুমদার : সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার যুগান্তরকে বলেন, আসলে এখন তো তারেক রহমানের বিকল্প নেই। তাকেই (তারেক রহমান) বিকল্প হয়ে উঠতে হবে। তাই তারেক রহমানের কাছে মানুষের প্রত্যাশাও অনেক। জনগণ চায় অতীতের অন্যায়-অবিচার, দুর্নীতি-দুর্বৃত্তায়ন সবকিছুর অবসান হোক। মানুষ একটা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ চায়। শুধু ভোটের অধিকার নয়, মানুষের চাওয়া গণতান্ত্রিক উত্তরণ; যেন সামনের দিনে আর কোনো ফ্যাসিবাদের সৃষ্টি না হয়। অতীতেও মানুষ অনেকের কাছে প্রত্যাশা করেছিল। কিন্তু সেগুলো তারা বাস্তবে রূপান্তরিত হতে দেখেনি।

তিনি আরও বলেন, এখন তারেক রহমানের কাছেও মানুষের আকাশচুম্বী প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে। তাকে সেই লিডার হয়ে উঠতে হবে এবং সেই ধরনের নেতৃত্ব প্রদর্শন করতে হবে। সেটাই এখন তার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। তাকে নিজের ঘর থেকেই শুরু করতে হবে। এটা করতে না পারলে কিন্তু তিনি সফল হবেন না। কারণ আগের পলাতক সরকারও তার দিনবদলের সনদের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে ব্যাপক প্রত্যাশা তৈরি করেছিল। কিন্তু তাদের কথা ও কাজে মিল ছিল না। তাছাড়া এখন পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। চারদিক থেকে বহু রকম চাপ আছে। ফলে এটা কঠিন। তবে তারেক রহমান সুন্দর বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আই হ্যাভ অ্যা প্ল্যান’। আমি মনে করি-এখন প্রধান কাজ হবে তার প্ল্যানটি প্র্যাকটিস করা।

ড. ইফতেখারুজ্জামান : ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, জুলাই অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে যারা সরকারি বা বিরোধী দল হিসাবে নির্বাচিত হবেন, তাদের কাছে জনগণের প্রত্যাশা বিশাল। কারণ এ দলগুলো নিজেরাই রক্তক্ষয়ী আন্দোলন করে কর্তৃত্ববাদের পতন ঘটিয়েছে। জনগণ চাইবে নির্বাচিত রাজনৈতিক দলগুলো যেন কর্তৃত্ববাদী আচরণ পরিহার করে সরকার ও জনপ্রতিনিধি যে বাস্তবেই জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য তা নিশ্চিতে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর দলীয়করণ থেকে বিরত থাকে। ‘সরকারের হাত-পা বেঁধে দেওয়া যাবে না’, এই যুক্তিতে আবারও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে পেশাগত দেউলিয়াপনার মাধ্যমে ক্ষমতার অপব্যবহারের বিচারহীনতা অব্যাহত থাকুক-জনগণ এটা আর চায় না।

তিনি আরও বলেন, ‘এবার আমাদের পালা’ এই চর্চায় যেভাবে ৫ আগস্টের পর থেকেই সারা দেশে বিভিন্ন পর্যায়ে রাজনৈতিক, আমলাতান্ত্রিক, আইনপ্রয়োগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দলবাজি, দখলবাজি, চাঁদাবাজি, মামলা-বাণিজ্য, ট্যাগ-বাণিজ্য, জামিন-বাণিজ্য, ক্ষমতার লড়াই ও অন্তর্দ্বন্দ্বের মাধ্যমে অব্যাহত রয়েছে, দেশের মানুষ তার অবসান চায়। অন্যদিকে রাজনৈতিক ও নির্বাচনি পুঁজি হিসাবে অর্থ, পেশি ও ধর্মের অপব্যবহারের বিপরীতে জনস্বার্থের, বিশেষ করে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশার প্রতিফলন কীভাবে ও কতটুকু হবে, তা নিয়ে জনগণের উদ্বেগের জবাব রাজনৈতিক নেতৃত্বকেই দিতে হবে। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপরিচালনার মূলনীতি হিসাবে সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচার, ধর্মীয় স্বাধীনতা, সম্প্রীতি ও সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি জেন্ডার, জাতি ও গোষ্ঠীগত, সংস্কৃতি ও ভাষাগতসহ বিভিন্ন বৈচিত্র্যের মানুষের বৈষম্যমুক্ত সম-অধিকারের স্বপ্ন; কী ধর্মান্ধতা ও গরিষ্ঠতন্ত্রের কাছে বরাবরের মতোই জিম্মি হয়ে থাকবে, জনগণের এই জিজ্ঞাসার জবাবও নতুন সরকার ও রাজনৈতিক নেতৃত্বকে শুধু কথায় নয়, কাজের মাধ্যমে দিতে হবে।