নীলফামারীতে পুরোদমে বইছে নির্বাচনি হাওয়া। জনগণের মধ্যে চলছে উন্নয়ন আর প্রাপ্তির বিষয় নিয়ে হিসাবনিকাশ। জেলার চারটি আসনের সবকটিই এর আগে দখলে ছিল আওয়ামী লীগের। এবার এ দলটি নিষিদ্ধ থাকায় বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামী উভয়েই চাইছে আসনগুলো কবজা করতে। ভোটাররা মনে করছেন, আসনগুলোতে মূলত বিএনপি-জামায়াতের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে।
নীলফামারী-১ (ডোমার-ডিমলা) আসন : ডোমার ও ডিমলা উপজেলা এবং একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত নীলফামারী-১ আসন। এ আসনে বিএনপি কখনো সুবিধা করতে পারেনি। সব নির্বাচনে জাতীয় পার্টি অথবা আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা জয় পেয়েছিলেন। এবার তাদের অনুপস্থিতিতে আসনটি দখলে নিতে বিএনপি যেমন মরিয়া তেমন মরিয়া জামায়াতে ইসলামী ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম। এ আসনে এবার বিএনপি জোটের প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী। বিপরীতে রয়েছেন জামায়াতের প্রার্থী দলের জেলা আমির অধ্যক্ষ আবদুুস সাত্তার। আরও রয়েছেন ইসলামী আন্দোলন ডোমার উপজেলা শাখার সভাপতি মাওলানা আবদুুল জলিল। এ ছাড়া এনসিপি ও গণঅধিকার পরিষদের প্রার্থীরাও মাঠে রয়েছেন।
নীলফামারী-২ (সদর) আসন : এ আসনে তৃণমূলের অনেকেই মনে করেন, আগামী নির্বাচনে এলাকায় সংখ্যালঘু ভোটার বড় ফ্যাক্টর। তারা কোন দলকে ভোট দেবেন তার ওপরই নির্ভর করবে জয়-পরাজয়। আসনটি এবার পেতে চাইছে বিএনপি। সদর উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে আসনটি গঠিত। জেলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এ আসনে বিএনপির প্রার্থী হয়েছেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ এইচ এম সাইফুল্লাহ রুবেল। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হয়েছেন জেলা জামায়াতে সহকারী সেক্রেটারি আল ফারুক আবদুল লতিফ। আরও রয়েছেন ইসলামী আন্দোলনের প্রাথী রংপুর বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট হাফেজ মাওলানা এম. হাছিবুল ইসলাম ও জাতীয় নাগরিক পাটি নীলফামারী জেলা শাখার সদস্য সচিব ডাক্তার কামরুল ইসলাম দর্পন।
নীলফামারী-৩ (জলঢাকা) আসন : এ আসনটি ১১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। আসনটিতে এখনো প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি বিএনপি। এটি জামায়াতের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত।
নীলফামারী-৪ (সৈয়দপুর-কিশোরগঞ্জ) আসন : এ আসনটিতে অবাঙালিদের একটি বিরাট ভোটব্যাংক রয়েছে। তাই সব প্রার্থী নানাভাবে তাদের মন জয় করার চেষ্টা করছেন।
তারা কোন দলকে ভোট দেবেন তার ওপরই নির্ভর করবে জয়-পরাজয়। তৃণমূলের মানুষ বলছেন, এ আসনে অবাঙালি ভোটার একটা বড় ফ্যাক্টর।
সৈয়দপুর ও কিশোরগঞ্জ উপজেলা ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত নীলফামারী-৪ আসন। এ আসনে বিএনপির প্রার্থী সৈয়দপুর রাজনৈতিক জেলা বিএনপি সভাপতি অধ্যক্ষ আবদুুল গফুর সরকার। জামায়াতের প্রার্থী সৈয়দপুর উপজেলা আমির হাফেজ মাওলানা আবদুুল মুনতাকিম। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর প্রার্থী মুজাহিদ কমিটি রংপুর বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ শহিদুল ইসলাম।
বিএনপি প্রার্থী অধ্যক্ষ আবদুল গফুর সরকার বলেন, সৈয়দপুরকে শিক্ষানগরী হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছি। নির্বাচিত হলে কৃষি সম্পদ সংরক্ষণে কাজ করব, কিশোরগঞ্জ উপজেলাকে পৌরসভায় রূপান্তর করব ও সৈয়দপুরকে শিল্পনগরী হিসেবে গড়ে তুলব।
জামায়াতের প্রার্থী হাফেজ মাওলানা আবদুুল মুনতাকিম বলেন, নির্বাচিত হলে সুষম উন্নয়ন ও ইনসাফভিত্তিক সমাজ গঠন, সৈয়দপুর রেল কারখানা আধুনিকীকরণের পাশাপাশি কারখানার কর্মসংস্থান সৃষ্টির খাতগুলো চালু, সৈয়দপুর বিমানবন্দরে কার্গো বিমান চালু, কিশোরগঞ্জ উপজেলায় কৃষিবান্ধব প্রকল্প গ্রহণ ও শিল্প স্থাপন করব।