সিএনজিচালিত অটোরিকশা চুরি হওয়ার পর সাধারণত দিশাহারা হয়ে পড়েন মালিক। সিএনজি অটোরিকশা উদ্ধারের জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন। এরই মধ্যে ফোন করে অটোরিকশার সন্ধান দেন অজ্ঞাত ব্যক্তি। পুলিশকে না জানানোর শর্তে দাবি করা হয় মোটা অঙ্কের টাকা। চাহিদামতো টাকা পাঠানো হলে নির্দিষ্ট জায়গায় রেখে যাওয়া হয় সিএনজি অটোরিকশাটি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ধরা পড়ার ভয়ে চোরচক্র এ রকম অভিনব কৌশল বেছে নিচ্ছে। গাড়ি চুরি করে মুক্তিপণের নামে হাতানো হচ্ছে টাকা। চুরির পর টাকার বিনিময়ে গাড়ি ফেরত দেওয়ার এমন বেশ কয়েকটি চক্র গড়ে উঠেছে ঢাকায়। যাদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে সিএনজি অটোরিকশা মালিকরা। এমনই একটি চোরচক্রের মূলহোতাসহ চার সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর চোরচক্রের নিত্যনতুন কৌশলের তথ্য পায় ডিবি পুলিশ।
গ্রেপ্তাররা হলেন, চক্রের মূলহোতা আরব আহম্মেদ বেলাল মিনা ওরফে বিল্লাল ওরফে বাদশা মিয়া। তার সহযোগী জাকির হোসেন শেখ, মো. মামুন ও মো. নীল চান মিয়া। গত রবিবার রাজধানীসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওয়ারী বিভাগ। গত মঙ্গলবার গ্রেপ্তার চারজনসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করে মুগদা থানায় মামলা করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে চোরাই ৩টি সিএনজি অটোরিকশা।
ডিবি সূত্র বলছে, রাজধানীতে এ রকম কয়েকটি চোর চক্রের অর্ধশত সদস্য সক্রিয় রয়েছে। এই সিন্ডিকেটগুলোর কেউ কেউ শুধু সিএনজি অটোরিকশা ঘিরে তৎপর রয়েছে। চক্রের সদস্যরা এতই ভয়াবহ যে, কারও সিএনজির ওপর নজর পড়লে সেটি চুরি হয়ে যায় কয়েকদিনের মধ্যেই। এজন্য সিএনজি অটোরিকশা চুরির পর থানায় মামলা না করে চোর চক্রের ফোনের অপেক্ষায় থাকছেন মালিকরা। এদিকে চোর চক্রের চাহিদামতো টাকা দিতে না পারলে সিএনজির রং পরিবর্তন করে বিক্রি করে দেওয়া হতো প্রত্যন্ত এলাকায়। সম্প্রতি যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে চুরি হয় একটি সিএনজি অটোরিকশা। মুক্তিপণ দিয়ে সিএনজি ফেরত আনলেও আবার চুরি হওয়ার ভয়ে মামলা করেননি তিনি। চুরি হওয়া একটি সিএনজি অটোরিকশার মালিক বলেন, চাহিদামতো টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় পুলিশে অভিযোগ করা হতে পারে এমন সন্দেহে হুমকি দেওয়া শুরু করে চোর চক্রের সদস্যরা। একপর্যায়ে চক্রের সদস্যদের দেওয়া মোবাইল ব্যাংকিং নম্বরে টাকা পাঠিয়ে সিএনজি অটোরিকশাটি বুঝে নেন।
ডিবির ওয়ারী বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন বলেন, সিএনজি, মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকার ঘিরে ঢাকায় বিভিন্ন চত্রু সক্রিয় রয়েছে। আমরা একটি চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছি। এ চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।