গোপালগঞ্জের পাঁচটি উপজেলা নিয়ে গঠিত তিনটি সংসদীয় আসন দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের দখলে ছিল। এ আসনগুলো ‘আওয়ামী লীগের দুর্গ’ হিসেবে পরিচিত। উন্নয়ন, কর্মসংস্থান ও আর্থ-সামাজিক উন্নতির কারণে অধিকাংশ ভোটার সবসময় আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের ভোট দিয়ে এসেছেন। কিন্তু এবার ভিন্ন প্রেক্ষাপট। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেই। সে কারণে তাদের দুর্গ দখলে নিতে বিএনপি এবং জামায়াত উভয়েই মরিয়া। খোঁজ নিয়ে ধারণা পাওয়া যাচ্ছে, মূলত ভোটের ময়দানে বিএনপির সঙ্গে লড়াই হবে জামায়াতের।
এদিকে আওয়ামী লীগবিহীন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তরুণদের নতুন পার্টি এনসিপিও বসে নেই। তারা দুর্গের দখল নিতে শহর ও গ্রাম এলাকার হাটবাজারে মোটরসাইকেল বহর নিয়ে শোডাউনের পাশাপাশি প্রচার চালাচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে ধারণা পাওয়া গেছে, নির্বাচনি মাঠে এখন কার্যত বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি ও অন্যান্য দল প্রচার প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছে। বিভিন্ন দলের প্রার্থীরা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে নিজের ও দলের পক্ষে সভাসমাবেশে অংশ নিচ্ছেন। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে কুশল বিনিময় ও আগামী নির্বাচনের জন্য ভোট প্রার্থনা করছেন।
গোপালগঞ্জ-১ আসন : এ আসনে বিএনপির প্রার্থী হলেন দলটির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক মো. সেলিমুজ্জামান সেলিম। জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী সাবেক জেলা আমির অধ্যক্ষ মাওলানা আবদুল হামিদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী জেলা শাখার সহসভাপতি অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান, গণঅধিকার পরিষদের আল আমিন সরদার, স্বতন্ত্র প্রার্থী আনিসুর রহমান ভুলু মিয়া।
গোপালগঞ্জ-২ আসন : এই আসনে (সদর) জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ডা. কে এম বাবরকে বিএনপি থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এ আসন থেকে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ইউনিট সদস্য ও সাবেক গোপালগঞ্জ জেলা আমির অ্যাডভোকেট আজমল হোসেন সরদার, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ থেকে গোপালগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি মাওলানা তসলিম হুসাইন সিকদার, গণফোরাম থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহ মফিজকে প্রার্থী করা হয়েছে। জানা গেছে, এ আসনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুব অধিকার পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মো. মুনায়েম গণঅধিকার পরিষদের প্রার্থী হতে প্রত্যাশী। গোপালগঞ্জ-৩ আসন : এ আসনে বিএনপির প্রার্থী স্বেচ্ছাসেবক দল কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এস এম জিলানী, জামায়াতে ইসলামীর অধ্যাপক এম এম রেজাউল করিম, এনসিপির মো. আরিফুল দাড়িয়া, ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশের প্রকৌশলী মারুফ শেখ, গণঅধিকার পরিষদের কাজী রনি, স্বতন্ত্র অ্যাডভোকেট মো. হাবিবুর রহমান প্রার্থী হয়েছেন।
দলীয় নেতাদের ভাষ্য : এবারের নির্বাচনটি হবে ব্যতিক্রমী। আমরা বিএনপির সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে তিনটি আসনেই বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করে বিজয় ছিনিয়ে আনতে পারব বলে প্রত্যাশা করি।
গোপালগঞ্জ জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির এম এম রেজাউল করিম বলেন, আশা করছি আমরাই সফল হব। হিন্দুরাও এবার আমাদের ভোট দেবে। প্রতিটি এলাকায় আমরা ভালো সাড়া পাচ্ছি এবং তিনটি আসনেই আমরা বিজয়ী হব ইনশাল্লাহ। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা তসলিম হোসাইন সিকদার বলেন, তিনটি আসনেই আমাদের প্রার্থী গণসংযোগ করছেন। আশাকরি জনগণ আমাদের সঙ্গে থেকে বিজয় ছিনিয়ে আনতে আমাদের ভোট দেবেন।