বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়া। একদিকে সংস্কৃতি ও শিক্ষার প্রাণকেন্দ্র, অন্যদিকে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ-সংঘাতের জন্য কুখ্যাত। স্থানীয়দের ভাষায় এখানে পান থেকে চুন খসলেই শুরু হয় মারামারি।
কখনো ফুটবল খেলায় হেরে যাওয়া, কখনও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মন্তব্য করা আবার তুচ্ছ বিষয় নিয়ে কথাকাটাকাটির জেরে শুরু হয় মারামারি।
পুলিশের তথ্যমতে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সংঘটিত অনেক মারামারি শুরু হয়েছে সহজ ও স্বাভাবিক বিষয় নিয়ে। কখনও টিস্যু না দেওয়া, কখনও হাঁস পারাপার, আবার কখনও রাজনৈতিক র্যালিতে ধাক্কাধাক্কি নিয়ে সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আলোচিত মারামারিগুলো ছোট বিষয় থেকেই বড় সংঘর্ষে রূপ নেয়।
সচেতন সমাজের দাবি, আবেগপ্রবণতা, সহনশীলতার অভাব এবং ক্ষুদ্র বিষয়কে বড় করে দেখার প্রবণতা এই জেলার সংঘর্ষ প্রবণতার বড় কারণ। তবে যে এলাকাগুলোতে শিক্ষার হার কম, সেসব এলাকায় মারামারির ঘটনা বেশি বলে মনে করেন সমাজ বিশ্লেষকরা।
সোশ্যাল মিডিয়া এক্টিভিস্ট, কবি ও লেখক লিটন হোসাইন জিহাদ বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মানুষ ঝগড়াটে না, বরং সাহসী। সোশ্যাল মিডিয়ায় এধরণের মন্তব্য ভাইরাল হয়। যেকারণে এই এলাকার মানুষ গুজবে প্রভাবিত হয়ে মারামারিতেও ঝুঁকে পড়ে।
কথিত আছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ইতিহাস ও সংস্কৃতির জেলা। এখানে বহু জ্ঞানী, গুণী ও আলেম-উলামার জন্ম হয়েছে, যাদের অবদান এই জেলার গৌরব বৃদ্ধি করেছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, মাঝে মাঝে কিছু অনাঙ্ক্ষিত বিভ্রান্তিকর ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধ বাড়ানো, শিক্ষার হার বৃদ্ধি ও সচেতনতামূলক প্রচারণাই পারে এই প্রবণতা কমাতে। সংঘর্ষ নয়, সহনশীলতার চেতনা ছড়িয়ে পড়লেই বদলে যাবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চিত্র।