Image description

থানার ভেতরেই অনশন করছেন প্রাথমিক শিক্ষক আন্দোলন থেকে আটক ৫ জন। এছাড়া দশম গ্রেডসহ তিন দফা দাবি আদায় এবং শাহবাগে শিক্ষক সমাবেশে পুলিশি হামলার প্রতিবাদে দেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি (পাঠদান বন্ধ) পালন করছেন আন্দোলনরত শিক্ষকরা। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে বলেও জানিয়েছেন সংগঠনের নেতারা।

আজ রবিবার (৯ নভেম্বর) সকালে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের আহবায়ক ও প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি শামসুদ্দিন মাসুদ দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, গতকাল আটক ৫ শিক্ষক থানাতেই অনশন করছেন। পুলিশ আমাদের বলেছে, আন্দোলন বন্ধ করলে তাদের ছেড়ে দেবে। কিন্তু আমরা আমাদের কর্মসূচি চালিয়ে যাবো। সারাদেশে আজ থেকে কর্মবিরতি চলছে। এছাড়া শহীদ মিনারেও আমাদের লোকজন আছেন।

পুলিশের হাতে আটক পাঁচ শিক্ষক হলেন—মু. মাহবুবুর রহমান, মো. আব্দুল কাদের, মো. নূরুল ইসলাম (লিটন), মো. শরীফুল ইসলাম ও সোহেল। পুলিশ হেফাজতে থাকা এই পাঁচ শিক্ষকই থানার ভেতরে অনশন শুরু করেছেন বলে জানা গেছে।

এর আগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত অবস্থান কর্মসূচি থেকে ‘কলম বিসর্জন কর্মসূচি’ পালনের ঘোষণা দেন শিক্ষকরা। এরপর তারা তিন দফা দাবিতে মিছিলসহ শাহবাগের দিকে যাত্রা করেন, কিন্তু পুলিশ বাধা দিলে সংঘর্ষের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপের পর শিক্ষকরা ছত্রভঙ্গ হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় আশ্রয় নেন। এতে অনেক শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েন।

শিক্ষকদের দাবির মধ্যে রয়েছে সহকারী শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের দাবি অনুযায়ী বেতন-ভাতা দশম গ্রেডে উন্নীত করা, ১০ ও ১৬ বছর চাকরি পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রদানে জটিলতার স্থায়ী সমাধান এবং সহকারী শিক্ষকদের জন্য শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির নিশ্চয়তা প্রদান।

 

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৫৬৭টি এবং এসব বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক সংখ্যা প্রায় ৩ লাখ ৮৪ হাজার। গত ২৪ এপ্রিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রধান শিক্ষকদের বেতন ১১তম থেকে ১০তম এবং ১৩তম থেকে ১২তম গ্রেডে উন্নীত করার উদ্যোগ নেয়। তবে এই পদক্ষেপে সহকারী শিক্ষকরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে আন্দোলনে নেমেছেন।

এদিকে প্রাথমিক শিক্ষকদের আরেক অংশ ‘প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদ’-এর ব্যানারে সরকারের কাছে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা দিয়েছে। তাদের দাবি পূরণ না হলে ২৩ ও ২৪ নভেম্বর অর্ধদিবস কর্মবিরতি, ২৫ ও ২৬ নভেম্বর পূর্ণদিবস কর্মবিরতি এবং ২৭ নভেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। তারা আরও হুঁশিয়ারি দিয়েছে—১১ ডিসেম্বরের মধ্যে দাবি বাস্তবায়নে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে পরীক্ষা বর্জন ও আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করা হবে।