সিলেট-৪ আসনে আরিফুল হক চৌধুরীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে কি না, তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন এই আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। তারা বলছেন, দল থেকে ঘোষণা দেওয়ার আগে প্রার্থীর নিজের ঘোষণা দেওয়া দলের শৃঙ্খলা ও নিয়মবহির্ভূত।
বুধবার (০৬ অক্টোবর) রাতে আরিফুল হক চৌধুরীর বরাত দিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়—বিএনপি চেয়ারপারসন তাকে ডেকে নিয়ে সিলেট-৪ আসনে নির্বাচন করার নির্দেশ দিয়েছেন। যদিও আরিফুল হকের প্রার্থিতার বিষয়টি নিশ্চিত করেনি বিএনপির হাইকমান্ড।
দলীয় সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে বৈঠক হলেও সিলেট-৪ আসনে প্রার্থিতার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত বেরিয়ে আসেনি।
সিলেট-৪ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন—বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী, সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-স্বেচ্ছাসেবা বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সামসুজ্জামান জামান ও জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হাকিম।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বাংলানিউজকে এই তিন নেতা জানান, আমরা আনুষ্ঠানিক কোনো কাগজ এখনো পাইনি। তবে বিএনপি যাকে মনোনয়ন দেবে, তাকেই প্রার্থী হিসেবে মেনে নিয়ে নির্বাচনে ধানের শীষকে বিজয়ী করতে কাজ করে যাবেন বলে জানান তারা।
বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী বলেন, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জি কে গউস ফোন করে জিজ্ঞেস করেছেন—এ সংক্রান্ত খবরের সত্যতা জানা গেছে কি না। তিনিও বিষয়টি নিশ্চিত না। আমি অফিসিয়ালি কোনো কাগজ পাইনি।
মিফতাহ সিদ্দিকী বলেন, বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী। সিলেট-৪ আসনে এক সময় দল তাকে মনোনয়ন দিতে চেয়েছিল। কিন্তু তিনি সেখানে নির্বাচন করতে যাবেন না, বারবার বলেছেন। এখন দল যদি মনে করে তাকে বা অন্য কাউকে মনোনয়ন দেবে, তবে তিনিই হবেন বিএনপির প্রার্থী। এখানে আমার ব্যক্তিগত ইচ্ছার কোনো স্থান নেই। তবে আপাতত বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্তের অপেক্ষায়। দলের সিদ্ধান্তের প্রতি আস্থাশীল।
সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-স্বেচ্ছাসেবা বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সামসুজ্জামান জামান বাংলানিউজকে বলেন, সিলেট-৪ আসনে কাউকে প্রার্থী দেওয়ার ব্যাপারে অফিসিয়ালি কোনো নির্দেশনা পাইনি। আর দলের হাইকমান্ড ডিক্লেয়ার দেওয়ার আগে কেউ তা প্রচার করলে শৃঙ্খলা ও নিময়বহির্ভূত পর্যায়ে পড়ে।
তিনি বলেন, দল যাকে প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত করবে, সিদ্ধান্ত মেনে নেতাকর্মীদের নিয়ে ধানের শীষকে বিজয়ী করতে প্রচারণা চালাব। বিশেষ করে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৩১ দফা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি, তা অব্যাহত থাকবে।
এই আসনের আরেক প্রার্থী সিলেট জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হাকিম বাংলানিউজকে বলেন, কাউকে প্রার্থী দেওয়া হয়েছে, আমি এ ধরনের অফিসিয়াল কোনো চিঠি বা নির্দেশনা পাইনি। তবে প্রাথমিকভাবে সম্ভাব্য প্রার্থী দিলেও চূড়ান্ত বাছাই অর্থাৎ ডিসেম্বর পর্যন্ত নেতাকর্মীদের নিয়ে দলীয় তথা তারেক রহমান প্রণীত ৩১ দফার প্রচারণা চালিয়ে যাব।
এ বিষয়ে বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী বুধবার রাতে বাংলানিউজকে বলেন, দলীয় চেয়ারপার্সন আমাকে ডেকে নিয়ে সিলেট-৪ আসনে প্রার্থী হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। একইভাবে অন্যান্য গণমাধ্যমেও তিনি বক্তব্য দেন। তবে বৃহস্পতিবার আরিফুল হক চৌধুরীর মোবাইল ফোনে কল করলে তিনি রিসিভ করেননি।
ঘটনার সত্যতা জানতে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার প্রেস উইংয়ের সদস্য সামসুদ্দিন দিদার বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেননি।
সিলেট-৪ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী অন্যরা হলেন—সিলেট মহানগরের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম, সাবেক সংসদ সদস্য দিলদার হোসেন সেলিমের স্ত্রী জেবুন্নাহার সেলিম।