Image description

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় যত এগিয়ে আসছে, নির্বাচনী মাঠ ততই উত্তপ্ত হতে শুরু করেছে। এই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে বা আরো প্রায় এক মাস পর। কিন্তু এরই মধ্যে অনানুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রচার শুরু হয়ে গেছে এবং নির্বাচনসংশ্লিষ্ট সহিংসতায় ১১ জনের মতো নিহত হয়েছেন। অক্টোবর মাসে নিহত হয়েছেন ১০ জন।

বিএনপির দলীয় প্রার্থী ঘোষণার মাত্র দুই দিনের মাথায় চট্টগ্রাম নগরীর হামজারবাগ এলাকায় গত বুধবার চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর গণসংযোগে গুলির ঘটনা ঘটে। এতে এরশাদ উল্লাহসহ পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন আলোচিত ‘সন্ত্রাসী’ সরওয়ার হোসেন বাবলা (৪৩)। একই দিন রাত ১২টার দিকে চট্টগ্রামের রাউজানে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত পাঁচজন গুলিবিদ্ধসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।যদিও চট্টগ্রাম-৮ আসনের ঘটনাকে নির্বাচনসংশ্লিষ্ট না বলে বিবদমান দুটি সন্ত্রাসী গ্রুপকে দায়ী করা হচ্ছে।

নির্বাচনী সহিংসতা বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) এ এইচ এম শাহাদত হোসাইন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘নির্বাচনী সহিংসতা রোধে পুলিশ চেষ্টা করে যাচ্ছে। আমরা নির্বাচন-পূর্ববর্তী, নির্বাচনকালীন ও নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতা রোধে কাজ করে যাচ্ছি এবং করব। এখন আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

উল্লেখ্য, গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দিয়ে যায়। এ ছাড়া গণ-অভ্যুত্থানের সময় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর অনেক অস্ত্র লুট হয়। এগুলোর বেশির ভাগ উদ্ধার হয়নি।

বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, ১৯৯১ সাল থেকে দেশে যে আটটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে তার কোনোটিতেই সহিংস ঘটনা এড়ানো যায়নি। স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে সহিংসতার মাত্রা ছিল আরো অনেক বেশি।

সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সবচেয়ে কম সহিংতা ঘটলেও এই নির্বাচনের আগে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ছিল চরম উত্তপ্ত। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা লগি-বৈঠাসহ সমাবেশের ডাক দেন। একই দিনে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে পূর্বঘোষিত সমাবেশ ছিল। ফলে চলমান সংঘর্ষে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক হতাহতের ঘটনা ঘটে। জামায়াতের ছয় কর্মীকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। ওই দিন থেকে পরবর্তী এক মাসের মধ্যে ৪০ জন নিহত ও শতাধিক আহত হয়।

সবচেয়ে বেশি সহিংসতার ঘটনা ঘটে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে। ওই নির্বাচনের আগে ও পরে ১৪১ জন নিহত হন বলে জানা যায়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ওই নির্বাচন প্রতিহত করার ডাক দেয় আওয়ামী লীগ, জামায়াতে ইসলামীসহ বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল এবং তাতে হতাহতের ঘটনা বৃদ্ধি পায়। এই পরিস্থিতিতে ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ স্থায়ী হয় ১২ দিন এবং ওই সংসদে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিল পাস হয়। এরপর ওই বছরের ১২ জুন অনুষ্ঠিত হয় সপ্তম সংসদ নির্বাচন। এ নির্বাচনে ভোটের দিন তিনজন নিহত হন বলে জানা যায়।

মানবাধিকার সংস্থার তথ্য মতে, এবার নির্বাচনসংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক সহিংসতায় অক্টোবর মাসে ১০ জন নিহত হয়েছেন। নির্বাচন-পূর্ববর্তী সময় থেকে শুরু করে নির্বাচনকালীন এবং নির্বাচন-পরবর্তী সময়েও এই সহিংসতা দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি এবং স্থিতিশীলতার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে আবির্ভূত হয় বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।

গত মঙ্গলবার মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটির (এইচআরএসএস) নির্বাহী পরিচালক ইজাজুল ইসলাম জানান, গত অক্টোবর মাসে কমপক্ষে ৬৪টি রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনায় নিহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন এবং আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৫১৩ জন।

মানবাধিকারকর্মী আবু আহমেদ ফয়জুল কবির কালের কণ্ঠকে বলেন, নির্বাচন ঘিরে রাজনৈতিক দলগুলো প্রার্থী মনোনয়ন ও প্রচারণা শুরু করেছে, যা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অংশ। কিন্তু দুঃখজনকভাবে এরই মধ্যে সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। একজন প্রার্থী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন এবং একজন প্রাণ হারিয়েছেন। এটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক ও অগ্রহণযোগ্য। তিনি আরো বলেন, ‘আমরা জানি অতীতেও নির্বাচনী সহিংসতায় সাধারণ মানুষ হতাহত ও নানা ভোগান্তির শিকার হয়েছেন। সহিংসতার অবসান হওয়া জরুরি। সহিংসতার সংস্কৃতি থেকে আমরা বের হতে চাই। রাজনৈতিক দলগুলোকে তাদের কর্মীদের ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ রাখা ও সহিংসতায় জড়িতদের বিরুদ্ধে দলীয় ও আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার ধারায় থাকতে হবে।’

সহিংসতার প্রকৃতি ও প্রবণতা : বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনই কমবেশি সহিংসতার সাক্ষী হয়েছে। তফসিল ঘোষণার আগে ও পরে, মনোনয়নপত্র দাখিল, প্রতীক বরাদ্দ, প্রচারণার সময়, ভোটগ্রহণের সময় ক্রমে সহিংসতা বাড়ে। ভোটের পরও এর রেশ থেকে যায়। প্রতিপক্ষের অফিস ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, প্রার্থী ও কর্মীদের ওপর হামলা, বোমাবাজি এবং মারামারির ঘটনা সাধারণ ব্যাপার। নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্র দখল, ব্যালট ছিনতাই, জাল ভোট প্রদান, ভোটগ্রহণে বাধা দেওয়া, পোলিং এজেন্টদের ওপর হামলা এবং প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সরাসরি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সঙ্গেও সংঘাতের ঘটনা ঘটে থাকে। ফলাফল ঘোষণার পর বিজয়ী ও পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ, পরাজিত প্রার্থীর বাড়িঘরে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটে।

আগে যত সহিংস ঘটনা : বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, ১৯৯১ সালের পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় সহিংসতায় ১৮ জন নিহত হন। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বর্জনকৃত এই নির্বাচনে ১৪১ জন প্রাণ হারান। ১৯৯৬ সালের ১২ জুনের নির্বাচন তুলনামূলকভাবে শান্তিপূর্ণ হলেও বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনায় প্রাণহানি ঘটে। ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হন, যার মধ্যে নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার অভিযোগও ছিল। ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একজন নিহত হন। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে তুলনামূলকভাবে সবচেয়ে কম সহিংস নির্বাচন ছিল। ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দলের বর্জনের মুখে অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে ২১ জন নিহত হন। এ নির্বাচনে ভোটগ্রহণের দিনই একজন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারসহ ১২ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। এ ছাড়া ভোটকেন্দ্রে হামলা ও ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে।

নির্বাচন কমিশন সহিংসতা এবং ভোটকেন্দ্র পুড়িয়ে দেওয়ার কারণে ৫৯৬টি ভোটকেন্দ্রের নির্বাচন স্থগিত করে।

২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরুর দিন থেকে নির্বাচন শেষ হওয়া পর্যন্ত ২১ দিনে সারা দেশে ২২ জন নিহত ও দুই হাজার ১৭৯ জন আহত হন। এর মধ্যে ভোটের দিন ২৪ ঘণ্টায় নিহত ১৭ জন। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের তথ্য অনুযায়ী, ওই বছর ১০ থেকে ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্বাচনে ৫৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী (বেশির ভাগ বিএনপির, জাপা, সিপিবিসহ বামদলের) হামলার শিকার হন এবং এসব হামলায় মোট দুই হাজার ১৩২ জন আহত হন। ওই নির্বাচন সম্পর্কে ‘ক্রিয়েটিং প্যানিক : বাংলাদেশ ইলেকশন ক্র্যাকডাউন অন পলিটিক্যাল অপন্যান্টস অ্যান্ড ক্রিটিকস’ শিরোনামে ৩৭ পৃষ্ঠার এক প্রতিবেদনে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) বলছে, এ নির্বাচনে শুধু ৯ থেকে ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে ৪৭টি সহিংসতার ঘটনা ঘটে। সে সময় বিএনপি এক বিবৃতিতে দাবি করে, গত ১০ ডিসেম্বর থেকে ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিরোধী দলগুলোর (যাদের বেশির ভাগ বিএনপি, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মী) ওপর করা দুই হাজার ৮৩৩টি হামলায় ১২ হাজার ৯২৩ জন আহত হয়েছেন। ৮ নভেম্বর থেকে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জেলায় এক হাজার ৫৭৪টি মামলা দায়ের এবং ১৫ হাজার ৫৬৮ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ওই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ওই বছরের ১৪ নভেম্বর ঢাকা নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে দলটির নেতাকর্মীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এতে পুলিশের দুটি ভ্যান পুড়িয়ে দেওয়া হয়। দেড় ঘণ্টাব্যাপী এই সংঘর্ষে ২৩ জন পুলিশ সদস্য এবং অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হন বলে পুলিশ ও বিএনপি নেতাকর্মী উভয় পক্ষ থেকে দাবি করা হয়। ওই ঘটনায় তিন মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় ৫০ জন বিএনপির কর্মীকে। এ ছাড়া ওই নির্বাচনে ধানের শীষে ভোট দেওয়ায় নোয়াখালীর সূবর্ণ চরের চর জুবিলী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য ও আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক রুহুল আমীনের নেতৃত্বে ১০-১২ জন মিলে এক গৃহবধূকে ধর্ষণ করে।

ওই নির্বাচন সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের সংস্থা ন্যাশনাল এনডাউমেন্ট ফর ডেমোক্রেসি এবং ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের প্রতিবেদনে বলা হয়, সহিংসতার কারণে নির্বাচন মানসম্পন্ন হয়নি। একই সঙ্গে রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে সহিংসতা, নাগরিক স্বাধীনতার সংকোচন এবং বাকস্বাধীনতা ও সংগঠিত হওয়ার স্বাধীনতার অবনতিও এই নির্বাচনের মান ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ী।

সর্বশেষ ২০২৪ সালের একপক্ষীয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সহিংসতা নিয়ে হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি (এইচআরএসএস) নামের একটি সংগঠনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই বছরের ১৫ নভেম্বর তফসিল ঘোষণার পর থেকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত দুই মাসে নির্বাচনী সহিংসতায় অন্তত ১৮ জন নিহত হন। আহত হন দুই হাজার ২০০ জনের বেশি। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন শতাধিক। আর ৩৫০টি ঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।

সহিংসতার মূল কারণ : জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে সহিংসতার পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা বলছেন। মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, সহিংসতার কারণের মাঝে সবচেয়ে বেশি রয়েছে রাজনৈতিক অসহিষ্ণুতা। বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক অবিশ্বাস, অসহিষ্ণুতা ও ক্ষমতার একচ্ছত্র দখলের প্রবণতা সহিংসতার জন্ম দেয়। স্থানীয় পর্যায়ে আধিপত্য বিস্তার এবং অর্থনৈতিক সুবিধা লাভের আকাঙ্ক্ষা অনেক সময় সহিংসতাকে উসকে দেয়। আইনের প্রয়োগে শৈথিল্য এবং অপরাধীদের বিচার না হওয়া বা দেরিতে হওয়া সহিংসতা বাড়িয়ে তোলে। এ ছাড়া অবৈধ অস্ত্রের সহজলভ্যতা এবং এর ব্যবহার সহিংসতাকে আরো মারাত্মক করে তোলে। কিছু ক্ষেত্রে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর পক্ষপাতমূলক আচরণ বা নিষ্ক্রিয়তা সহিংসতার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। তাদের মতে, নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা ও কার্যকর পদক্ষেপের অভাবও সহিংসতাকে নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। প্রতিপক্ষকে শত্রুজ্ঞান করার একটি সংস্কৃতি সহিংসতার একটি অন্তর্নিহিত কারণ। সহিংসতা একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করে, যা গণতন্ত্রের মৌলিক ভিত্তিকে দুর্বল করে। ভোটাররা ভয়ে ভোটকেন্দ্রে যেতে দ্বিধাবোধ করে, যা ভোটদানের হার কমিয়ে দেয়। সহিংসতা মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন ঘটায়, যার মধ্যে জীবন, নিরাপত্তা ও চলাচলের স্বাধীনতা অন্যতম। ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ এবং ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ থাকার কারণে দেশের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়ে। সহিংসতা সমাজে বিভেদ সৃষ্টি করে এবং রাজনৈতিক মেরুকরণকে তীব্র করে।