 
              আবারও আলোচনায় উঠে এসেছেন গাজীপুরের টঙ্গির টিএনটি বাজার জামে মসজিদের খতিব মুফতি মহিবুল্লাহ মিয়াজি। কয়েক দিন নিখোঁজ থেকে ‘অপহৃত’ দাবি করা এই আলোচিত মুফতির আচরণ এখন আরও অস্বাভাবিক হয়ে উঠেছে। স্থানীয়দের ধারণা, তাঁর ওপর নাকি ‘কালো জাদু’ করা হয়েছে। তবে অনেকেই মনে করছেন—এটিও আগের মতোই সাজানো নাটকের নতুন পর্ব।
ঘটনার শুরু গত ২২ অক্টোবর। মুফতি মহিবুল্লাহ কয়েকটি ‘হুমকি চিঠি’ প্রকাশ করে নিখোঁজ হন। পরদিন ২৩ অক্টোবর তাঁকে পাওয়া যায় পঞ্চগড়ের হিলপ্যাড এলাকায় একটি গাছের সঙ্গে শিকলবন্দি ও বিবস্ত্র অবস্থায়। সে সময় তিনি দাবি করেন, নামাজ শেষে হাঁটতে বেরিয়ে অজ্ঞাতপরিচয় পাঁচজন তাঁকে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে নিয়ে নির্যাতন করেছে।
তিনি বলেন, অপহরণকারীরা বাংলায় কথা বলছিল এবং ‘ইস্কনের চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুর জামিন’ প্রসঙ্গে আলোচনা করছিল। তাঁর দাবি—ইসকনের বিরুদ্ধে কথা বলায় তাঁকে একাধিকবার হুমকি দেওয়া হয়েছিল এবং এমনকি এক কোটি টাকার প্রস্তাবও দেওয়া হয় তাদের পক্ষে কথা বললে।
এ ঘটনার পর ধর্মীয় মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। ইসকন নিষিদ্ধের দাবিও ওঠে। কিন্তু ২৭ অক্টোবর ঘটনার মোড় ঘুরে যায়—মুফতি মহিবুল্লাহ নিজেই স্বীকার করেন, অপহরণের গল্পটি ছিল সম্পূর্ণ সাজানো। তিনি জানান, “সব কিছু আধ্যাত্মিকভাবে ঘটেছে, আমি কী করছি কিছুই জানতাম না।”
পরে প্রকাশিত সিসিটিভি ফুটেজেও দেখা যায়, তিনি একাই বাড়ি থেকে বেরিয়ে টঙ্গি–কালিগঞ্জ সড়কে হাঁটছেন, কারও দ্বারা অপহৃত হওয়ার কোনো প্রমাণ নেই। পুলিশও বলেছে, ফুটেজে তাঁর একা চলাফেরার বিষয়টি পরিষ্কারভাবে দেখা গেছে।
এদিকে সাম্প্রতিক ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে—মুফতি মহিবুল্লাহ আবারও অস্বাভাবিক আচরণ করছেন। স্থানীয়রা তাঁকে আটকানোর চেষ্টা করলে তিনি পালানোর চেষ্টা করেন। কেউ কেউ দাবি করেন, “ওনার ওপর জিন বা কালো জাদুর প্রভাব রয়েছে।” এক পর্যায়ে একজন তাঁকে মাটিতে ফেলে ‘জিন ছাড়ানোর চেষ্টা’ করছেন—এ দৃশ্য দ্রুত ভাইরাল হয় সামাজিক মাধ্যমে।
পুলিশ বলছে, প্রাথমিকভাবে ঘটনাটিকে মানসিক অস্থিরতা হিসেবে দেখা হচ্ছে। তবে এটি সত্যিই কোনো ‘আধ্যাত্মিক প্রভাব’ নাকি আগের মতোই সাজানো নাটক—তা তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না।
 
       
                 
                
 
                                                  
                                                  
                                                  
                                                  
                                                 