
মানিকগঞ্জের পদ্মা-যমুনায় মা'ইলিশ রক্ষা অভিযানের প্রায় শেষ সময়ে চলছে ইলিশ শিকারের মহোৎসব। ইলিশর প্রধান প্রজনন মওসুমে সরকারীভাবে তা শিকারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলেও মানিকগঞ্জের শিবালয়, হরিরামপুর ও দৌলতপুরের পদ্মা-যমুনার প্রায় ৭০ কিলোমিটার এলাকায় চলছে মা’ইলিশ নিধন! থেমে নেই প্রশাসনের অভিযান।
অভিযানে প্রায়শই আটক হচ্ছে নানা বয়সী চোরা শিকারি, জব্দ হচ্ছে অবৈধ জাল-নৌকা ও ইলিশ।
জব্দকৃত প্রায় তিন মেট্রিকটন ইলিশ বিতরণ করা হয়েছে শিবালয়সহ জেলার বিভিন্ন এতিমখানা ও ধাতব্য প্রতিষ্ঠানে। আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে ১০৮ দশমিক ৩৯০ লাখ মিটার অবৈধ কারেন্ট জাল ও জেল জড়িমানা করা হয়েছে নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারী ৭০ চোরা শিকারীক।
মানিকগঞ্জ মৎস্য বিভাগ ও শিবালয় উপজেলা প্রশাসন সুত্রে জানাগেছে, গত ৪ হতে ২১ অক্টোবর পর্যন্ত ১৭ দিনে শিবালয়, হরিরামপুর ও দৌলতপুরের বিস্তিত পদ্মা-যমুনায় ২১৩টি অভিযানে ৬৫টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়েছে। এতে মা’ইলিশ নিধনে মামলা হয়েছে ১০৭টি ও বিভিন্ন মেয়াদে জেল দেওয়া হয়েছে ৭০ জনকে। জরিমানা আদায় করা হয়েছে ১ দশমিক ৭৬০ লাখ টাকা। আগুন পুড়িয় ধংস করা হয়ছ ১০৮ দশমিক ৩৯০ লাখ মিটার অবৈধ কারেন্ট জাল। জব্দ করা হয়েছে ২ দশমিক ৯৭৬ মেট্রিকটন ইলিশ।
যা জেলার বিভিন্ন এতিমখানা, মাদ্রাসা ও ধাতব্য প্রতিষ্ঠানে সুষ্ঠভাবে বিতরণ করা হয়েছে। এত শিবালয় উপজলা প্রশাসনের ভুমিকা রয়েছে উল্ল্যেখ করার মত।
অপরদিকে, চলমান অভিযানে প্রশাসনের জেল-জড়িমানা উপেক্ষাকরে চোরা শিকারীরা সুযোগ বুঝে জাল-রশি ও নৌকা নিয়ে ইলিশ শিকারে নেমে পড়ছে নদীতে। এরি মধ্যে দন্ড প্রাপ্ত এক শিকারী জলখানায় মত্যু বরণ করছেন। তার পরেও বন্ধ নেই শিকারীদের অপতৎপরতা। অভিযোগ রয়েছে অভিযানে অংশ নেয়া প্রশাসনের ভিতরে ঘাপটি মেরে থাকা অসাধু ব্যক্তি ও স্থানীয় সোর্স অভিযানের খবর আগেই পৌছে দিচ্ছে শিকারীদের কাছে। এ সুযোগে চোরা শিকারী ও নদীপাড়ে ইলিশ বিক্রতারা হয়ে উঠেছে বেপরোয়া। যা রোধে প্রশাসনকে পোহাতে হচ্ছে বাড়তি ঝামেলা।
অপর একটি সুত্র জানিয়েছে, জেলার প্রায় ৭০ কিলোমিটার বিস্তৃত পদ্মা-যমুনা বক্ষে দিন-রাত বিপুল সংখ্যক ইঞ্জিনচালিত নৌকায় অবৈধ কারেন্ট জালের মাধ্যমে নির্বিঘ্নে ইলিশ শিকার চলছে। এ কাজে প্রকৃত জেলেরা নিরব থাকলেও মওসুমী জেলেরা বেশ তৎপর রয়েছে। ধৃত ইলিশ ক্রয়ে আগ্রহী একশ্রেণীর লোকজন নদী পাড়ে নিয়মিত ভিড় জমাচ্ছে। বিশেষকরে শিবালয়ের আলোকদিয়া চরে প্রতি কেজি ইলিশ প্রকার ভেদে ১২ শত থেকে ১৬ শত টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এসব রোধে যৌথ অভিযানের দাবী জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
চলমান অভিযানের বিষয়ে শিবালয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ জাকির হাসেন জনকন্ঠকে বলেন, মা'ইলিশের প্রধান প্রজনন মওসুমে সরকারি নিষধাজ্ঞা অমান্য কারীদর বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চলছে। অভিযানে জাল-দরি, নৌকা জব্দসহ আটক শিকারীদের মোবাইল কোর্টর মাধ্যমে জেল-জড়িমানা করা হচ্ছে। ইলিশ রক্ষায় শিবালয়ের চরাঞ্চল ও নদী পাড়ের মানুষকে সচেতনতা করা হয়েছে। জেলেদেরকে খাদ্য সহায়তায় দেয়া হয়েছে। আমাদর অনুরোধ ও কথা রক্ষায় অনেকেই এবার নদীতে নামছেন না। তারা নিষিদ্ধ সময় মাছ ধরা থেকে বিরত রয়েছেন। এর পরও যারা নামছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। আগামী ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।