Image description
 

বাংলাদেশ ব্যাংক ইসলামী ব্যাংকিং কার্যক্রমের শরীয়াহ্ অনুশাসন নিশ্চিত ও তত্ত্বাবধান জোরদারে নিজস্ব ‘শরীয়াহ অ্যাডভাইজরি বোর্ড (এসএবি)’ গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এ লক্ষ্যে “বাংলাদেশ ব্যাংকের শরীয়াহ অ্যাডভাইজরি বোর্ড (এসএবি) এর গঠন, সদস্য নিয়োগ-অপসারণ ও দায়িত্ব-কর্তব্য সম্পর্কিত নীতিমালা–২০২৫” অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ।

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের ৪৪৪তম সভায় এই নীতিমালা অনুমোদন হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ইসলামি ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের প্রস্তাব অনুযায়ী, মালয়েশিয়া, বাহরাইন, ওমান, পাকিস্তান, ইরান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতোই বাংলাদেশ ব্যাংকে একটি স্বাধীন ও দক্ষ শরীয়াহ বোর্ড গঠন করা হবে।

বোর্ডটি ইসলামী ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ইসলামি অর্থশিল্পসংক্রান্ত শরীয়াহ বিষয়, ফিকহি মতবিরোধ ও নতুন প্রডাক্টের শরীয়াহ সামঞ্জস্যতা বিষয়ে মতামত দেবে।

নীতিমালা অনুযায়ী, বোর্ডে ৭ জন সদস্য থাকবেন, এর মধ্যে অন্তত ৫ জন শরীয়াহ বিশেষজ্ঞ। সদস্যদের মেয়াদ হবে তিন বছর, কর্মদক্ষতার ভিত্তিতে পুনঃনিয়োগের সুযোগ থাকবে। তবে কেউ টানা ছয় বছর দায়িত্বে থাকলে, পুনঃনিয়োগের আগে দুই বছর বিরতি নিতে হবে।

সদস্যদের প্র্যাকটিসিং মুসলিম হতে হবে এবং শরীয়াহ, ইসলামী ফাইন্যান্স বা ইসলামী ব্যাংকিংয়ে উচ্চতর শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

শরীয়াহ স্কলারদের দাওরা-ই-হাদিস, কামিল, ইসলামী আইন বা ফিকহ-আল-মুয়ামালাত বিষয়ে ডিগ্রি থাকতে হবে।

অন্যদিকে ইসলামী শিক্ষাবিদদের ইসলামী অর্থনীতি বা ফাইন্যান্সে পিএইচডি ডিগ্রিধারী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

কোনো ব্যাংকের শরীয়াহ বোর্ড বা ইসলামি ফাইন্যান্স প্রতিষ্ঠানে কমপক্ষে দুই বছরের বাস্তব অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। প্রকাশিত গবেষণা প্রবন্ধ বা গ্রন্থ থাকলে তা অতিরিক্ত যোগ্যতা হিসেবে বিবেচিত হবে।

বাংলাদেশে ১৯৮৩ সালে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড প্রথম ইসলামী ব্যাংক হিসেবে লাইসেন্স পায়। বর্তমানে দেশে ১০টি পূর্ণাঙ্গ ইসলামী ব্যাংক এবং ৩১টি তফসিলি ব্যাংকের ইসলামী শাখা ও উইন্ডো রয়েছে।

জুন ২০২৫ পর্যন্ত দেশের মোট ১১,৩৭২টি ব্যাংক শাখার মধ্যে ১,৬৯৯টি পূর্ণাঙ্গ ইসলামী ব্যাংক শাখা, ৪১টি ইসলামী শাখা এবং ৯০৫টি ইসলামী উইন্ডো কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, ইসলামী ব্যাংকিংয়ে জনগণের অংশগ্রহণ দ্রুত বাড়ছে। তাই শরীয়াহ মানদণ্ডের যথাযথ প্রয়োগ, প্রতারণা প্রতিরোধ এবং ইসলামী অর্থব্যবস্থার সুষ্ঠু বিকাশে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদারকি ভূমিকা আরও জোরদার করা প্রয়োজন। এই উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক ইসলামী ব্যাংকিং খাতে বিশ্বমানের নীতিমালা ও শাসন কাঠামো প্রতিষ্ঠার পথে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিল।

শীর্ষনিউজ