
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বুধবার মধ্যরাতে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে সেখানে তাকে ভর্তি করা হয়। তার বর্তমান শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আজ হাসপাতাল থেকে তিনি ছাড়া পেতে পারেন।
বৃহস্পতিবার রাতে খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের একজন সদস্য বলেন, ম্যাডামের শারীরিক দুর্বলতার কারণে দ্রুত পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়। কেন দুর্বলতা অনুভব করছিলেন, এর কারণ খুঁজতে বেশ কয়েকটি পরীক্ষা করা হয়। বলা যায় রুটিন চেকআপ। সব রিপোর্টই বেশ ভালো। শুক্রবার ম্যাডাম বাসায় ফিরতে পারবেন বলে আশা করছি। আর চিকিৎসা আগের মতোই বাসা থেকে চলবে। ফলোআপ চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়া আবারও লন্ডনে যাবেন কিনা- এসব প্রশ্নের জবাবে এই চিকিৎসক বলেন, না। এমন কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
বুধবার গুলশানের বাসভবন ফিরোজা থেকে রওয়ানা হয়ে রাত ১২টা ২০ মিনিটে হাসপাতালে পৌঁছান খালেদা জিয়া। এরপর তার বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। রাত ১টার দিকে হাসপাতালের সামনে বিএনপির চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ বলেন, খালেদা জিয়ার বর্তমান অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। তার পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে আরও দুই-একদিন রাখা হতে পারে।
ডা. জাহিদ জানান, আওয়ামী সরকারের আমলে খালেদা জিয়াকে সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। যখন তিনি জেলখানায় ছিলেন, তখন চিকিৎসা রেস্ট্রিক্টেড ছিল, দেশে বা বাইরে চিকিৎসার ব্যাপারে অনেক প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করা হয়েছিল। তখন যথাযথ চিকিৎসা করতে না পারার কারণে বর্তমানে পরিস্থিতি একটু জটিল হয়ে পড়েছে। ডা. জাহিদ জানান, খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যসহ সার্বিক খোঁজ রাখছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। নিকটাত্মীয়রা সার্বক্ষণিকভাবেই সব বিষয়ে তদারকি করছেন।
এর আগে ২৮ আগস্ট রাতে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে যান খালেদা জিয়া। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে রাতেই বাসায় ফেরেন। তারও আগে গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর চিকিৎসা শেষে এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় ফেরেন তিনি। এরপর উন্নত চিকিৎসার জন্য ৭ জানুয়ারি লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন। ১৭ দিন লন্ডন ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন থাকার পর তিনি ২৫ জানুয়ারি ছেলে তারেক রহমানের (বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান) বাসায় যান। সেখানে রেখে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। ৬ মে দেশে ফেরেন খালেদা জিয়া। দীর্ঘদিন তিনি লিভারসিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ নানা অসুস্থতায় ভুগছেন।