Image description
 
চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (সিইপিজেড) এলাকায় কারখানার আগুন পাঁচ ঘণ্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। পুরো ভবন অগ্নিগর্ভ হয়ে গেছে। ধোঁয়ার কুণ্ডলিতে পুরো এলাকা অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। কেমিক্যাল থাকার কারণে কিছুক্ষণ পরপরই শোনা যাচ্ছে বিস্ফোরণের প্রচণ্ড শব্দ। কোনোভাবেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আসছে না বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
 
 
আগুন লাগার খবর পাওয়ার মাত্র দুই মিনিটের মধ্যেই ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছে। উদ্ধার কাজে যোগ দিয়েছে নৌ ও বিমানবাহিনী। বর্তমানে ২১টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। আগুন দেখতে উৎসুক জনতা ভবনটির আশপাশে ভিড় করছেন। এতে আগুন নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খেতে হচ্ছে। 
 
 
বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ৭টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আগুন নিন্ত্রয়ণে আসেনি। এ ঘটনায় হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
 
 
 
জানা যায়, বৃহস্পতিবার বেলা ২টার দিকে ৯ তলাবিশিষ্ট কারখানার সপ্তমতলায় আগুনের সূত্রপাত হয়। সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় এ রিপোর্ট লেখার সময় আগুন চারতলা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিসের ২১টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।
 
 
ফায়ার সার্ভিস ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানিয়েছে, সিইপিজেডের ৫ নম্বর রোডে অবস্থিত ‘অ্যাডামস ক্যাপ অ্যান্ড টেক্সটাইল লিমিটেড’ নামে একটি কারখানার সপ্তমতলায় আগুনের সূত্রপাত হয়। এটি দেশি-বিদেশি মালিকানাধীন একটি প্রতিষ্ঠান। 
 
 
প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, এ কারখানায় রেইনকোট, মেডিকেল এক্সেসরিজসহ বিভিন্ন ধরনের রপ্তানি পণ্য তৈরি করা হয়। এ প্রতিষ্ঠানের একপাশে পেনিনসুলা ও আরেক পাশে স্মার্ট জ্যাকেট নামে দুটি পোশাক কারখানা রয়েছে।  
 
 
বেলা ২টার দিকে ষষ্ঠতলায় হঠাৎ আগুন লাগে। আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে কর্মরত শ্রমিকরা যে যেভাবেই ছিলেন সেই পোশাকেই দ্রুত নিচে নেমে যান। প্রথমে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় কারখানা কর্তৃপক্ষ আগুন নেভানোর চেষ্টা করলেও পরে ৯৯৯ নাম্বারে ফোন করে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। বিকাল ৩টার পরপরই ইপিজেড ও আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন স্থান থেকে একে একে ২১টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে নেমে পড়ে। ফায়ার সার্ভিস ছাড়াও সশস্ত্র বাহিনীও আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে।
 
 
সরেজমিন রাত সাড়ে ৭টায় ঘটনাস্থলে দেখা যায়, আগুন উপর থেকে নিচ পর্যন্ত কারখানার প্রতিটি ফ্লোরে ছড়িয়ে পড়েছে। আগুনের লেলিহান শিখা দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে। ধোঁয়ার কুণ্ডলিতে পুরো এলাকা অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। কেমিক্যাল থাকার কারণে কিছুক্ষণ পরপরই শোনা যাচ্ছে বিস্ফোরণের প্রচণ্ড শব্দ।
 
 
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ওই কারখানায় পাঁচ শতাধিক শ্রমিক কাজ করেন। আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে প্রায় সব শ্রমিকই নেমে যেতে সক্ষম হন। তাই হতাহতের কোনো ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ওই কারখানার আগুনে নিয়ন্ত্রণের পাশপাশি আশপাশের কোনো কারখানায় যাতে আগুন ছড়িয়ে না পড়ে সেই চেষ্টা করছিলেন।
 
চট্টগ্রামের ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক আলমগীর হোসেন জানান, তাদের ১৫টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। তবে কিভাবে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে তা বলা যাচ্ছে না। কোনো হতাহতের খবরও নেই। আগুন নেভানোর কাজে সহযোগিতা করছে নৌবাহিনীর ৬টি ইউনিট। বিমানবাহিনীর ফায়ার সার্ভিসের ইউনিটও কাজ করছে।