Image description

ব্যাংকের যেসব কর্মকর্তা শরীয়াহভিত্তিক পথে চলতে চান, তাদের জন্য শরীয়াহভিত্তিক বাড়ি ও গাড়ি কেনার লোন চালুর পরামর্শ দিয়েছেন ইসলামী আলোচক ও আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ। 

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী আমাকে জানিয়েছেন, হাউজ লোন বা গাড়ি লোনের ক্ষেত্রে ইসলামী ব্যাংকিং অনুসরণ করতে চান বা শরীয়াহ মেনে চলতে চান। তাদের জন্য যদি সেই নীতি বা পদ্ধতি চালু করা হয়, তবে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশের জন্য তা সহায়ক হবে।

মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সীরাতুন্নবী (সা.) উপলক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংক আয়োজিত সিরাত মাহফিলে আলোচনাকালে তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. জাকির হোসেন চৌধুরী। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংক কেন্দ্রীয় মসজিদ কমিটির সভাপতি মো. আনিসুর রহমান এবং অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আফতাব উদ্দিন।

শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, আমি আশা করব, যেসব কর্মকর্তা দ্বিন পালন করতে চান, কর্তৃপক্ষ এটি বিবেচনায় নেবে। তাদের জন্য ইসলামী ব্যাংকিংয়ের পথ খোলা রাখবে।

যদি চালু করা হয়, তবে তাদের হক বা অধিকার আদায় হবে।

শরীয়াহ ব্যাংকগুলোতে শরীয়াহ পালনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশে ইসলামী ব্যাংকগুলোতে ঠিকমতো শরীয়াহ মেনে চলা হচ্ছে কি না— এ ব্যাপারে জবাবদিহি নিশ্চিত করা দরকার। এক্ষেত্রে যে পদক্ষেপগুলো নেওয়া হয়েছে, আমি বিশ্বাস করি, সেগুলো দিয়েই এটি নিশ্চিত করার পথ সুগম হবে।

আহমাদুল্লাহ বলেন, গ্রাহকদের শরীয়াহ সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার বিষয়ে একটি সার্ভিস সিস্টেম চালুর কথা আমরা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছি।

অনেকেরই এসব বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারণা নেই। যেমন, শুধু সুনির্দিষ্ট পদ্ধতির কারণে বিবাহ ও জিনা—একটি হালাল, আরেকটি হারাম; তেমনি ব্যাংকিংও যদি নির্দিষ্ট নিয়মে হয়, শরীয়াহ সমর্থন করবে, না হলে করবে না। এখন আমি যদি জানি কোনভাবে শরিয়াহ ভঙ্গ হচ্ছে আর কোনভাবে হচ্ছে না—সেই জানার ব্যবস্থা করতে ব্যাংকগুলোকে কোনো না কোনো সিস্টেম চালু করার অনুরোধ জানাচ্ছি।

তিনি আরো বলেন, আমরা যখন কথা বলব, তখন আল্লাহ পাক ন্যায়সংগত আচরণের নির্দেশ দিয়েছেন। কোরআনে বহু জায়গায় ন্যায়বিচারের কথা বলা হয়েছে।

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সব ক্ষেত্রেই ইনসাফ করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, দুর্নীতি, অনিয়ম, অপশাসন আমাদের ধুকে ধুকে শেষ করে দিচ্ছে। আমরা মুহাম্মদ (সা.) এর অনুসারী দাবি করি কিন্তু যে যেখানে যতটুকু সুযোগ পাই ততটুকু অসৎ উপায় অবলম্বন করি। যে সম্পদ আপনি অবৈধভাবে উপার্জন করবেন, আপনি নিশ্চিতভাবে লিখে রাখুন ও জেনে রাখুন জীবদ্দশায় এটা আপনাকে দংশন করবে। মৃত্যু পর্যন্ত আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে না। হালাল উপার্জনের মধ্যে আল্লাহ যে সুখ রেখেছেন হারাম উপার্জনের মধ্যে তা রাখেননি। আমাদের কাছে অবৈধভাবে সম্পদের পাহাড় বানানো অনেক মানুষ আসেন যারা জীবনের শেষ সময়ে এসে আফসোস করছেন। পাপ মোচন করতে চচ্ছেন। কিন্তু উপায় খুঁজে পাচ্ছেন না। তাই হালাল উপার্জনের কোনো বিকল্প নেই।