Image description

বিবিসি বাংলাকে দেওয়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাক্ষাৎকার সম্পর্কে রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বহুদলীয় রাজনীতি ও প্রতিযোগিতাকে তিনি গণতন্ত্রের অপরিহার্য অংশ হিসেবে দেখছেন। সাক্ষাৎকারে তাঁর প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার ধরন, ভাষার ধরন, শিষ্টাচার ও কমিটমেন্ট থেকে তাঁর রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও কৌশলগত অবস্থান সর্ম্পকে একটি স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়। তাঁর রাজনৈতিক বক্তব্যে পশ্চিমা প্রভাব লক্ষণীয়। পাঠক বিভ্রান্ত হবেন এমন শব্দ বা বাক্য ব্যবহার করেননি, বরং অত্যন্ত স্পষ্ট ও নমনীয়ভাবে প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন।

সাক্ষাৎকারে তারেক রহমানের শরীরী ভাষা ও বাক্য গঠন—সবই উন্নত রাজনৈতিক সংস্কৃতির প্রভাব। জুলাই আন্দোলন সম্পর্কে তিনি বলেছেন, এটি ছিল বাংলাদেশের জনগণের আন্দোলন, যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে, তারা এই আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড। কোনো দল, কোনো ব্যক্তি নয়, এই আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী জনগণ। এতে তাঁর রাজনৈতিক প্রজ্ঞার পরিচয় স্পষ্ট হয়েছে।
 
তিনি সঠিকভাবে চিহ্নিত করেছেন যে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির মূল চ্যালেঞ্জটিই এসেছে ঘৃণা বা বিদ্বেষের জায়গা থেকে। এর বিপরীতে তিনি দেশপ্রেমকে প্রাধান্য দেওয়ার কথা বলেছেন।

অধ্যাপক ড. এ কে এম মহিউদ্দিন : তারেক রহমানের সাক্ষাৎকার সম্পর্কে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. এ কে এম মহিউদ্দিন গতকাল সোমবার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বিশেষ পরিস্থিতিতে দেশ ত্যাগ করার পর দীর্ঘ ১৭ বছর পর কোনো গণমাধ্যমে (বিবিসি বাংলা) মুখোমুখি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তাঁর সাক্ষাৎকারে যেসব বিষয় এসেছে তার মধ্যে রয়েছে—১. বাকস্বাধীনতা ও গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ; ২. জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ও তাঁর ভূমিকা; ৩. দেশে ফেরা ও নির্বাচনের প্রস্তুতি; ৪. বিএনপির প্রার্থী মনোনয়ন কৌশল; ৫. নির্বাচনে দল কোন কোন বিষয়ে অগ্রাধিকার দেবে; ৬. তিনি প্রধানমন্ত্রী হতে চান কি না; ৭. দুর্নীতি মোকাবিলার কৌশল; ৮. জামায়াতের সম্ভাব্য জোট গঠনের বিপরীতে বিএনপি কী কৌশল নেবে ইত্যাদি।

এসব প্রসঙ্গে তিনি কী বলেছেন পাঠকরা এরই মধ্যে তা জেনেছেন। আমি সেগুলোর বিস্তারিত উল্লেখ করতে চাই না, তবে তাঁর বক্তব্যের মূল বিষয়বস্তু তুলে ধরতে চাই।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে কার কী ভূমিকা ছিল, তা নিয়ে দেশে-বিদেশে আমরা বিস্তর আলোচনা করেছি। অনেকেই নিজেকে অভ্যুত্থানের নায়ক বা মাস্টারমাইন্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছেন। কিন্তু তারেক রহমান নিজেকে ‘মাস্টারমাইন্ড’ হিসেবে স্বীকার করেননি, বরং এই অভ্যুত্থানকে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী জনগণের সম্মিলিত আন্দোলন হিসেবে দেখেছেন।

এই সাক্ষাৎকারে তারেক রহমান নিজের অবস্থানকে তুলে ধরেছেন একজন নির্যাতিত কিন্তু দৃঢ় রাজনীতিক ও গণতন্ত্রকামী জনগণের সম্মিলিত আন্দোলনের অংশীদার হিসেবে। জামায়াতে ইসলামী প্রসঙ্গে তিনি প্রাতিষ্ঠানিক ও আইনগত অনুষঙ্গকে গুরুত্ব দিয়ে জোটশক্তিকে অগ্রাহ্য করছেন না।

দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি স্বীকার করেন যে দুর্নীতি বাংলাদেশের একটি সামাজিক ব্যাধি এবং এটি রাতারাতি দূর করা সম্ভব নয়। তিনি অতীতের অভিযোগ অস্বীকার না করে ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের চেষ্টা করছেন, এটি প্রতিষ্ঠিত গণতান্ত্রিক দেশের রাজনৈতিক নেতার বৈশিষ্ট্য।

জামায়াতে ইসলামী বা অন্য দলের সঙ্গে জোট গঠন প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, সংবিধান যদি কোনো দলকে বৈধতা দেয়, তবে তারা রাজনীতি করতে পারবে। বহুদলীয় রাজনীতি ও প্রতিযোগিতাকে তিনি গণতন্ত্রের অপরিহার্য অংশ হিসেবে দেখেন। একই সঙ্গে ১৯৭১ সালের যুদ্ধাপরাধের দায়কে তিনি ‘ব্যক্তিগত ও প্রাসঙ্গিক’ হিসেবে দেখেন, অর্থাৎ কোনো দলের সামগ্রিক দায় নয়।

বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তারেক রহমানকে দেশের ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ভাবা হয়। বিশেষ করে বিএনপির বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী তাঁকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান। কিন্তু দল বিজয়ী হলেও তিনি নিজেকে সরাসরি ‘প্রধানমন্ত্রী দাবি’ করবেন না—এমনটি জোরের সঙ্গে বলেছেন। তিনি সিদ্ধান্তটা জনগণ ও দলীয় প্রক্রিয়ায় ছেড়ে দিয়েছেন—এটি পপুলার লিগিটিমেসি অর্জনের কৌশল হতে পারে।

এই সাক্ষাৎকারের গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তারেক রহমান পাঠকের সঙ্গে কিভাবে যোগাযোগ স্থাপন করছেন, সেটা বুঝতে পারা জরুরি। দীর্ঘ ১৭ বছর প্রবাসে থাকার ফলে তাঁর রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক চিন্তার যে পরিবর্তন হয়েছে সেটা বোঝাও জরুরি। পুরো সাক্ষাৎকারে তাঁর প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার ধরন, ভাষার ধরন, শিষ্টাচার ও কমিটমেন্ট থেকে তাঁর রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও কৌশলগত অবস্থান সম্পর্কে একটি স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়।

২০০৮ সালের পর থেকে তারেক রহমান লন্ডনে স্বনির্বাসিত জীবন যাপন করছেন। এই সময়কালটি বাংলাদেশের রাজনীতিতে নানাভাবে গুরুত্বপূর্ণ এবং সেই সঙ্গে সংকটে আবর্তিত ছিল—তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্ত করে দেওয়া; শেখ হাসিনার ধারাবাহিকভাবে ক্ষমতায় থাকা এবং বিএনপির সাংগঠনিক ভাঙন ও সীমাবদ্ধতার সময়। দীর্ঘ ১৭ বছর তাঁর লন্ডনবাস শুধু ব্যক্তিগত আশ্রয় নয়, বরং নিজেকে আগামী দিনের জন্য প্রস্তুত করা রাজনীতির হালচাল পর্যবেক্ষণের সময়কাল।

পাঠকের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগভঙ্গি ও রাজনৈতিক বক্তব্যে পশ্চিমা প্রভাব লক্ষণীয়। বিশেষ করে সাক্ষাৎকারে দেখা যায় তাঁর ভাষা সংযত, পরিমিত ও যুক্তিসংগত, যা পশ্চিমা রাজনৈতিক সংস্কৃতির একটি বড় বৈশিষ্ট্য। পাঠক বিভ্রান্ত হবেন এমন শব্দ বা বাক্য ব্যবহার করেননি, বরং অত্যন্ত স্পষ্ট ও নমনীয়ভাবে প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। তিনি নিজে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছেন না, জনগণের ওপর দায়িত্ব ছেড়ে দিচ্ছেন। যেমন তিনি বলেছেন, ‘আমি মনে করি, জনগণের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত’, ‘আমাদের কাজ হবে প্রমাণের মাধ্যমে বিশ্বাস অর্জন করা’—এই বাক্যগুলোতে পশ্চিমা রাজনৈতিক নেতাদের শিষ্টাচারের ছাপ স্পষ্ট, বাংলাদেশি রাজনীতির প্রচলিত কনফন্ট্রেশনাল টোন থেকে একেবারে আলাদা।

লন্ডনে দীর্ঘ সময় থাকা তাঁকে সরাসরি জনগণের সঙ্গে যোগাযোগহীন করে তুলেছে, তবে এর বদলে তিনি ‘মিডিয়া-সেন্ট্রিক পলিটিকস’-এর দক্ষতা অর্জন করেছেন। তিনি গণমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের মাধ্যমে বক্তব্য প্রকাশে দক্ষ হয়েছেন, প্রবাসে থেকেও জাতীয় রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করে আছেন, নিজের দল পরিচালনা করছেন, যা তাঁর রাজনৈতিক যোগাযোগ দক্ষতার প্রমাণ দেয়। তারেক রহমান সাক্ষাৎকারে বারবার জনমত, নীতি, আইন ও প্রক্রিয়ার ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি জোরের সঙ্গে বলেছেন, রাজনৈতিক দলের কাজ অবশ্যই পুলিশিং করা নয়, বরং তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, যাদের কাজ পুলিশিং করা তারা কেন তাদের কাজটি করছে না। তারা কেন তাদের কাজে ব্যর্থ?

লন্ডনের সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটে রাজনীতিকদের বক্তব্য সাধারণত সংযত ও প্রটোকলনির্ভর হয়ে থাকে। তারেক রহমানের শরীরী ভাষা (যেমন—ভিডিও সাক্ষাৎকারে হাত নাড়ার সীমিত ব্যবহার, স্থির দৃষ্টি, মৃদু স্বর) ও বাক্য গঠন—সবই উন্নত রাজনৈতিক সংস্কৃতির প্রভাব।

ডা. জায়েদ উর রহমান : ‘তারেক রহমান বাংলাদেশের ডি-ফ্যাক্টো লিডার। সে কারণে তারেক রহমানকে আমাদের অবজার্ভ করতে হবে। আমি তাঁকে ক্রিটিক্যালি দেখার চেষ্টা করি। তারেক রহমানের বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি। সে কারণেও তাঁর বক্তব্য, তাঁর কর্মসূচিকে আমরা খুব ক্রিটিক্যালি দেখার চেষ্টা করব। তিনি বেশ কিছুদিন থেকে নিয়মিত আমাদের সামনে (দলীয় কর্মসূচিতে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে) আসছেন এবং খুবই ম্যাচুয়েড আচরণ করছেন। ডিফারেন্স হচ্ছে, সেগুলো ইন্টারভিউ ছিল না। পাল্টা প্রশ্ন ছিল না। তিনি তাঁর মতো করে বক্তব্য দিয়ে গেছেন। এবার ইন্টারভিউ দিয়েছেন।’

বিবিসি বাংলাকে দেওয়া তাঁর ইন্টারভিউটা পড়া ছাড়াও দেখার পরামর্শ দিয়ে ডা. জায়েদ উর রহমান বলেন, ‘পড়লে যতটা বোঝা যায়, দেখলে আরো বেশি বোঝা যায়। তাঁর বডি ল্যাঙ্গুয়েজ, এক্সপ্রেশনে আরো বেশি বোঝা যাবে তারেক রহমানকে। কেন এত দিন মিডিয়ায় ইন্টারভিউ দেননি, তার জবাবে তারেক রহমান খুব চমৎকারভাবে আওয়ামী লীগের নিষেধাজ্ঞাকে দায়ী করেছেন। উনি ফিরে আসবেন কি না, এই প্রশ্নে তিনি নির্বাচনের আগে দেশে ফিরবেন এবং নির্বাচনে অংশ নেবেন বলে নিশ্চিত করেছেন। আমার ধারণা, তিনি হয়তো নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কিছুদিন আগেই আসবেন এবং তাঁকে ঘিরে জনগণের মধ্যে যে উৎসাহ ও উদ্দীপনা তৈরি হবে সেটিকে দিয়েই তিনি নির্বাচনকে অ্যাড্রেস করবেন। প্রধানমন্ত্রী হবেন কি না—এ রকম প্রশ্নে তিনি বলেছেন, এ বিষয়ে দল সিদ্ধান্ত নেবে। এটিও স্মার্ট জবাব। উনি টেকনিক্যালি নিজের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার কথা বলতে পারেন না। বিবিসি বাংলার প্রশ্নে চমৎকার উত্তর ছিল জুলাই আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড বিষয়ে। তারেক রহমান বলেছেন, এই আন্দোলন ছিল বাংলাদেশের জনগণের আন্দোলন, যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন তাঁরা এই আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড। কোনো দল কোনো ব্যক্তি নয়, এই আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী জনগণ। দ্রুত নির্বাচন কেন চেয়েছেন—এ প্রশ্নের জবাবেও পরিমিতিবোধ দেখিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া তিনি বলেছেন, নির্বাচন হলেই সব সমস্যার রাতারাতি সমাধান হয়ে যাবে না। কিন্তু নির্বাচিত সরকার যখন ক্ষমতায় আসেব এই সমস্যাগুলো ধীর ধীরে কমে আসবে। এটি যথাযথই বলেছেন। বিএনপির নেতাদের বুঝতে হবে, জনগণের মধ্যে উচ্চাশা তৈরি করে তাদের হতাশ করা যাবে না। এমপি প্রার্থী নমিনেশন নিয়ে তিনি বলেছেন, দলের নয় জনগণের মতামতও দেখতে চাই। কারণ এমপি তো দলের না, জনগণের হতে হবে। এটি ভালো কথা। কিন্তু এমপিদের স্থানীয় সমস্যা দেখার যে যোগ্যতার কথা বলেছেন তা আমি ব্যক্তিগতভাবে পছন্দ করিনি। কারণ আমি দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছি, স্থানীয় সমস্যা দেখবে স্থানীয় সরকার। এমপিদের কাজ হবে পার্লামেন্টে আইন প্রণয়নের কাজ করা।’

পরিবারতন্ত্র, চাঁদাবাজি, জামায়াত ও আওয়ামী লীগ নিয়ে তারেক রহমান যে কথাগুলো বলেছেন তা-ও যুক্তিযুক্ত বলে মনে করেন ডা. জায়েদ উর রহমান। তবে বিএনপি সরকার গঠন করলে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হবে—এমন কঠোর বক্তব্য প্রত্যাশা করেন তিনি।

ডাকসু নির্বাচন নিয়েও তারেক রহমান চমৎকার জবাব দিয়েছেন, মন্তব্য করে জায়েদ উর রহমান বলেন, ‘এই নির্বাচনে যাঁরা বিজয়ী হয়েছেন তাঁদের অভিনন্দন জানিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে বলেছেন, একটা অগ্রযাত্রা শুরু হলো, কিন্তু আমরা চাইছিলাম না যে কোনো বিতর্কের মধ্যে এগুলা পড়ুক। আমরা আশা করব যে পরবর্তী সময়ে যেগুলোর নির্বাচন হবে সেগুলো বিতর্কবিহীন হবে।’

অধ্যাপক কাজী মাহবুবুর রহমান : তারেক রহমানের বক্তব্য সম্পর্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কাজী মাহবুবুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে এসেছে এবং এটি ছিল সময়োপযোগী। একজন প্রধান রাজনৈতিক দলের নেতা হিসেবে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও ভবিষ্যৎ নিয়ে তাঁর বক্তব্যগুলো তুলে ধরা জরুরি ছিল। সাক্ষাৎকারে তারেক রহমান বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উত্থাপন করেছেন, যা বাংলাদেশের রাজনীতির উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হলো তিনি ঘৃণার রাজনীতি বন্ধের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি সঠিকভাবে চিহ্নিত করেছেন যে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির মূল চ্যালেঞ্জটিই এসেছে ঘৃণা বা বিদ্বেষের জায়গা থেকে। এর বিপরীতে তিনি দেশপ্রেমকে প্রাধান্য দেওয়ার কথা বলেছেন। তারেক রহমান জনগণকে ক্ষমতার মূল শক্তি হিসেবে উল্লেখ করেছেন এবং জনগণের বিশ্বাস ও সিদ্ধান্তকে বিচারক মানার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। এটি গণতন্ত্রে জনগণের আস্থার গুরুত্বকে প্রতিফলিত করে।’