
এখনো গাজার উপকণ্ঠে পৌঁছাতে পারেনি গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার জাহাজ কনসায়েন্স। গতরাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ফ্রিডম ফ্লোটিলা অ্যান্ড কনসায়েন্স ট্র্যাকারের সর্বশেষ তথ্যে দেখা গেছে, জাহাজটি গাজা থেকে আনুমানিক ৫০০ কিলোমিটার দূরে ভূমধ্যসাগরে নোঙ্গর করে আছে। মূল পরিকল্পনা অনুযায়ী গতকালই জাহাজটির গাজা বা তার কাছাকাছি পৌঁছানোর কথা ছিল। তবে জাহাজের স্থির অবস্থান থেকে ধারণা করা হচ্ছে যে, নৌবহরের ছোট নৌযানগুলোর সঙ্গে সমন্বয় বজায় রাখতে কনসায়েন্সের গতি কমিয়ে আনা হয়েছে। এক্ষেত্রে জাহাজটির বর্তমান অবস্থান এবং গাজা থেকে এটির আনুমানিক দূরত্ব বিবেচনা করলে, স্বাভাবিক গতিতে (৯ নটিক্যাল) এই পথ পাড়ি দিতে প্রায় ৩০ ঘণ্টা সময় লাগার কথা। তবে গতি কমানোর কারণে এ সময় আরও দীর্ঘ হবে।
গত সপ্তাহে বিলম্বে যাত্রা শুরু করে ফ্লোটিলা নৌবহরের এই জাহাজ। এই নৌযানেই অবস্থান করছেন বাংলাদেশি মানবাধিকার কর্মী ও ফটোগ্রাফার শহিদুল আলম। গতকাল নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে পোস্ট করে সর্বশেষ পরিস্থিতি জানান তিনি। সেখানে ইসরাইলি বাহিনী (আইডিএফ) কর্তৃক আটক বা কারাবাসের প্রবল আশঙ্কা করছেন তারা। অর্থাৎ জাহাজটি গাজায় পৌঁছাতে পারবে কিনা তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েই গেছে। এর আগে গাজার উপকণ্ঠে পৌঁছানো ৪০টির বেশি জাহাজ এবং সেগুলোর যাত্রীদের আটক করে ইসরাইল।
রোববার এক পোস্টে শহিদুল আলম বলেন, যেহেতু আমি কনসায়েন্সে একমাত্র বাংলাদেশি, তাই আমাকে মালয়েশিয়া অ্যাফিনিটি গ্রুপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। গ্রুপের মোহাম্মদ আলাউদ্দিন মোহাম্মদ আলী রোববার সকালে আমাদের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করতে এসেছিলেন, যাতে আইডিএফ আমাদের গ্রেপ্তারের সম্ভাবনা সম্পর্কে কর্মপরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করা যায়। গতরাতে আকাশে বেশ কয়েকটি ড্রোন ছিল। কিন্তু কোনো আগ্রাসন দেখা যায়নি।
এর আগের এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, মানুষ বারবার জিজ্ঞাসা করছে, তুমি ঠিক কোথায়? আর কতোক্ষণ লাগবে? প্রথম প্রশ্নের উত্তর, সবচেয়ে ভালো উপায় হলো ট্র্যাকার ব্যবহার করে আমাদের যাত্রা অনুসরণ করা। ফরেনসিক আর্কিটেকচার, যার সঙ্গে আমরা শহীদ আবু সাঈদের হত্যার ওপর তদন্তমূলক চলচ্চিত্র তৈরির জন্য অংশীদার হয়েছিলাম, তারা গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার সাইটের মাধ্যমে কনসায়েন্স এবং হাজার ম্যাডলিন নৌবহর উভয়কেই ট্র্যাক করছে। দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর নির্ভর করছে আইডিএফ আমাদের পদক্ষেপের প্রতি কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানায় তার উপর। অতীত ইতিহাস বিবেচনা করলে, এটা খুবই সম্ভাবনাহীন যে, তারা আমাদের যেতে দেবে। আমাদের গ্রেপ্তার করা হবে এবং নির্বাসিত করা হবে অথবা কারাগারে পাঠানো হবে। কখন এবং কোথায় তা ঘটবে তা আগে থেকে নির্ধারণ করা অসম্ভব।
এটি অবশ্যই আমাদের হাতে নেই। এখানেই আমাদের আপনার সাহায্য প্রয়োজন। যদি আপনি এমন পদক্ষেপ নিতে পারেন, যা আমাদের গাজায় পৌঁছানোর অনুমতি দেয়ার জন্য চাপ তৈরি করে, তাহলে এটিই হবে সর্বোত্তম ফলাফল। তবে এটি ঘটতে পারে একমাত্র উপায় হলো যদি ইসরাইলের উপর পর্যাপ্ত জনসাধারণের চাপ থাকে। তাই এটিই আপনার জন্য পদক্ষেপ নেয়ার সুযোগ। সংগঠিত হও, প্রতিরোধ করো। পদক্ষেপ নাও। এটি অধিকার ও ন্যায়বিচারের জন্য একটি প্রচারণা এবং আমাদের একসঙ্গে এটি করতে হবে। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছ থেকে একটি বার্তা পেয়ে আমি আনন্দিত। আমার দেশবাসী, বিশ্ব জুড়ে বন্ধুবান্ধব এবং শুভাকাঙক্ষীদের কাছ থেকে সংহতি ও সমর্থনের বার্তা পেয়ে খুব ভালো লাগছে।