
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বামপন্থি রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নির্বাচনী জোট গঠনের আলোচনা চলছে। আপাতত প্রাথমিক স্তরের আলোচনা চলছে। বাম গণতান্ত্রিক জোট ও গণতন্ত্র মঞ্চ-এই দুই প্ল্যাটফরম ছাড়াও বাইরে থাকা কয়েকটি বাম ও প্রগতিশীল দলের সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনা হচ্ছে। লক্ষ্য ভোটে ও আন্দোলনের মাঠে নিজেদের শক্ত অবস্থান তৈরি করা।
বাম গণতান্ত্রিক জোট ও গণতন্ত্র মঞ্চ সমপ্রতি একাধিক বৈঠকে বসেছে। পাশাপাশি গণফোরাম, বাংলাদেশ জাসদ, সাম্যবাদী দল, ঐক্য ন্যাপ, ন্যাপ ভাসানীসহ আরও কিছু বাম ঘরানার দলকেও আলোচনায় টানা হচ্ছে। এসব বৈঠকে জাতীয় ঐকমত্য গড়ে তোলার পাশাপাশি আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণের রূপরেখা নিয়েও কথা হচ্ছে।
আগামী ১৪ই নভেম্বর ঢাকায় সমাবেশ করবে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-(সিপিবি)। গত সপ্তাহে নতুন নেতৃত্ব ঘোষণা হওয়ার পর থেকে এ নিয়ে তৎপরতা বেড়েছে। সংশ্লিষ্টদের মতে, সিপিবি’র নতুন নেতৃত্বের ওপরই অনেকাংশে নির্ভর করবে জোটের চূড়ান্ত রূপরেখা। পরিস্থিতি বিবেচনায় জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে এই জোট গঠনের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সিপিবি’র নবনির্বাচিত সভাপতি কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ ক্বাফী রতনসহ বেশ কয়েকটি বামপন্থি দলের নেতারা প্রাথমিক পর্যায়ের আলোচনা করেছেন। ওই আলোচনায় মূলত কুশল বিনিময় ও জোট গঠনের প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। এ ছাড়া ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবে ভিন্নমত ও বিতর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে কথা হয়েছে।
জানা গেছে, নির্বাচনী প্রস্তুতির পাশাপাশি বাম গণতান্ত্রিক জোটেরও পরিধি বাড়ানোর উদ্যোগ চলছে। বাংলাদেশ জাসদ, ঐক্য ন্যাপ, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-ন্যাপসহ একাধিক বাম প্রগতিশীল ঘরানার রাজনৈতিক দলের সঙ্গে এ নিয়ে প্রাথমিক আলোচনার খবর জানা গেছে।
আলোচনায় বাংলাদেশ জাসদ, গণফোরাম, বাসদসহ আরও কয়েকটি রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশ নেন। সেখানে আসন্ন নির্বাচনে সম্ভাব্য সমঝোতা ও একক প্ল্যাটফরমে কাজ করার বিষয়ে নীতিগত একমত পোষণ করা হয়। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের কথাও জানান নেতারা।
এসব বিষয়ে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) নবনির্বাচিত সভাপতি কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন মানবজমিনকে বলেন, ঐকমত্য কমিশনের যে ভিন্নমত ও বিতর্কিত বিষয় রয়েছে। সেগুলো নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী ও উদার গণতান্ত্রিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তবে জোট গঠনের বিষয়ে তেমন কোনো আলোচনা হয়নি। ভবিষ্যতের রাজনীতি নিয়ে করণীয় এসব বিষয়েই আলোচনা হয়েছে।
এ বিষয়ে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক মানবজমিনকে বলেন, জোট গঠনের বিষয়ে তেমন কোনো আলোচনা হয়নি। মূলত জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা করেছি। বৈঠকে রাজনীতি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। ভবিষ্যতে একসঙ্গে দাঁড়ানোর এমন নানা কথাবার্তা হয়েছে। গণতন্ত্র মঞ্চের পক্ষ থেকে আমরা আলোচনা অব্যাহত রাখতে চাই।
গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক ডা. মিজানুর রহমান মানবজমিনকে বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে আলোচনা হয়েছে বামপন্থি দলগুলোর সঙ্গে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও উদার গণতান্ত্রিক দলগুলোর সঙ্গে আমাদের আলোচনা অব্যাহত আছে।