Image description

মানবাধিকারকর্মী শহিদুল আলমের পাশাপাশি আরেক বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করলেন আরেকজন অধিকারকর্মী। তিনি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বৃটিশ মানবাধিকারকর্মী ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ রুহি লোরেন আখতার। এর মধ্য দিয়ে তিনি হলেন- প্রথম কোনো বাংলাদেশি বা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বৃটিশ নারী, যিনি গাজার অনাহারে মৃত্যুর মুখে থাকা মানুষের জন্য প্রতীকী ত্রাণ নিয়ে গিয়েছেন। গাজার জনগণের জন্য ত্রাণ সহায়তা নিয়ে এগিয়ে যাওয়া গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা নৌবহরে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত রুহি লোরেন আখতারকে নিয়ে তাই বাংলাদেশে ব্যাপক আগ্রহের সৃষ্টি হয়েছে। ইংল্যান্ডের নর্থাম্বারল্যান্ডের মোরপেথে তার জন্ম। রুহি গত ১৮ই সেপ্টেম্বর থেকে এই নৌবহরের সঙ্গে রয়েছেন।

বুধবার (১লা অক্টোবর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে রুহি লোরেন লিখেছেন, গাজাবাসীর জন্য ত্রাণ নিয়ে এগিয়ে যাওয়া গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’র অন্যান্য নৌযানের ঠিক পেছনে ‘সামারটাইম জং’ নামের একটি জাহাজে তিনি অবস্থান করছেন। তিনি আরও লিখেছেন, আমরা চরম অনিশ্চয়তার মধ্যেও দৃঢ়প্রতিজ্ঞা এবং আশা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। নৌবহরের এই দলটি মানবিক সহায়তা নিয়ে ইসরাইলি বাধা উপেক্ষা করে গাজায় পৌঁছানোর শেষ চেষ্টা করছে। একটি সহযোগী সংবাদ মাধ্যমের খবর, রুহি লোরেন আখতার ‘রিফিউজি বিরিয়ানি অ্যান্ড ব্যানানাস’ (আরবিবি) নামের একটি মানবিক সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা। এই সংস্থাটি যুদ্ধ ও সংঘাত থেকে পালিয়ে আসা বাস্তুচ্যুত মানুষদের জন্য জরুরি খাদ্য, স্বাস্থ্যসামগ্রী, দক্ষতা উন্নয়ন এবং নেতৃত্ব প্রশিক্ষণের মতো কার্যক্রম পরিচালনা করে। বর্তমানে সংস্থাটির কার্যক্রম গাজা ও গ্রিসে চালু রয়েছে। বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীর পাশে থাকার অঙ্গীকারের স্বীকৃতিস্বরূপ রুহি ২০২৫ সালের অক্টোবরে নর্থ ইস্ট বাংলাদেশি অ্যাওয়ার্ডে ‘পারসন অব দ্য ইয়ার’ সম্মাননা লাভ করেন।

ফ্লোটিলা থেকে তিনি ভিডিও কয়েকটি ভিডিও বার্তা দিয়েছেন। তাতে বলেছেন, একজন বাংলাদেশি হিসেবে আমি গর্বিত যে আমার সহযোদ্ধা বাংলাদেশি শহিদুল আলম এবং বৃটিশ বাংলাদেশি রুহি লরেন আখতার গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলায় আছেন। একইসঙ্গে বাংলাদেশের তরুণরাও ফ্লোটিলার সমর্থনে সংহতি সমাবেশ ও বিক্ষোভ করছেন। আমরা সবাই একদিন মুক্ত হবো!

তিনি আরেক ভিডিওতে বলেন, 

প্রিয় সবাই
আমি গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা নিয়ে একটি জরুরি আপডেট শেয়ার করতে চাই। গত রাতে শুধু খাদ্য, শিশু খাদ্য (বেবি ফর্মুলা) এবং জরুরি সরঞ্জাম বহনকারী ত্রাণবাহী জাহাজগুলোকে আন্তর্জাতিক পানিসীমায় ইসরাইলি দখলদার বাহিনী আটক করেছে এবং অংশগ্রহণকারীদের অপহরণ করেছে। এটা একটি ভয়ঙ্কর আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন। কিন্তু এখানেই শেষ নয়। গাজার মানুষ এখনো আমাদের পাশে চায় এবং যারা আটক হয়েছেন বা এখনো যাত্রাপথে আছেন, তাদের আমাদের সমর্থন দরকার।

এখনই আমরা যা করতে পারি:
আপডেটগুলো শেয়ার করতে থাকুন এবং খবর ছড়িয়ে দিন।

রিফিউজি বিরিয়ানি অ্যান্ড বানানাস গেস গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার মতো সংগঠনগুলোকে ফলো করুন এবং তাদের সমর্থন করুন, যেখান থেকে রিয়েল-টাইম তথ্য পাওয়া যায়।

সরকার ও নেতাদের প্রতি দাবি তুলুন যাতে গাজায় ত্রাণ পৌঁছাতে দেয়া হয়, নিরাপদ পথ নিশ্চিত করা হয় এবং আটককৃত সহযোদ্ধাদের মুক্তি দেয়া হয়।
এই সংগ্রাম এখানেই শেষ নয়। আমাদের কণ্ঠস্বর গুরুত্বপূর্ণ। একসঙ্গে আমরা চাপ অব্যাহত রাখতে পারি যতক্ষণ না অবরোধ ভেঙে যায় এবং অবাধে ত্রাণ গাজায় প্রবাহিত হয়।

দয়া করে এই ভিডিওটি শেয়ার করুন এবং গাজাকে সবার নজরে রাখুন।