Image description

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রবেশ পর্যায়ে শিক্ষক হতে গত ২০ বছরে এক কোটি ১৭ লাখের বেশি প্রার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন। তাদের মধ্যে চাকরির জন্য সুপারিশ পেয়েছেন মাত্র দেড় শতাংশ প্রার্থী।

গত মঙ্গলবার বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আয়োজিত এক কর্মশালায় সংস্থাটির সার্বিক কার্যক্রম তুলে ধরা হয়। তুলে ধরা পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

কর্মশালার উদ্বোধন করেন এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান মো. আমিনুল ইসলাম। এ সময় উপস্থাপক ছিলেন, এনটিআরসিএ সদস্য (শিক্ষাতত্ত্ব ও শিক্ষামান) এরাদুল হক। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এনটিআরসিএ’র সদস্য (পরীক্ষা মূল্যায়ন ও প্রত্যয়ন) নূরে আলম সিদ্দীকি। সঞ্চালনায় ছিলেন এনটিআরসিএর সচিব এ এম এম রিজওয়ানুল হক।

কর্মশালায় এনটিআরসিএ জানিয়েছে, ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত একটি বিশেষ ও ১৮টি নিয়মিত শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা নিয়েছে সংস্থাটি। মোট ১৯টি নিবন্ধন পরীক্ষায় অংশ নিতে আবেদন করেছিলেন এক কোটি ১৭ লাখ ৪৯ হাজার ২৯৬ জন। তাদের মধ্যে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগ সুপারিশ পেয়েছেন এক লাখ ৭৭ হাজার ৫৭১ জন। শতকরায় যা ১ দশমিক ৫১ শতাংশ।

প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী নিবন্ধন পরীক্ষায় অংশ নেওয়া একটি বিশেষসহ ১৮টি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন ৭ লাখ ৩৭ হাজার ২৯৬ জন। সে অনুযায়ী নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণের হার ৬ দশমিক ২৭ শতাংশ। আর উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মধ্যে নিয়োগ সুপারিশ পাওয়ার হার ২৪ দশমিক ০৮ শতাংশ। তবে সুপারিশপ্রাপ্তদের মধ্যে কত শতাংশ প্রার্থী যোগদান করেছেন সেই তথ্য জানাতে পারেনি এনটিআরসিএ।

কর্মশালায় এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, সবশেষ প্রকাশিত ৬ষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তিতে ৩৪ হাজার ৩৪৩ জন যোগদান করেছেন। যোগদান করতে গিয়ে অনেকে নানা ভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের কাছে অভিযোগ আসছে। শিক্ষকদের হয়রানি করা যাবে না। যোগদানের এক মাসের মধ্যে শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির ফাইল অধিদপ্তরে পাঠাতে হবে। এ বিষয়ে আমরা নির্দেশনা দিয়েছি। এ নির্দেশনা অমান্য করলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান প্রধানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করা হবে।

প্রতিষ্ঠান নিয়োগ প্রসঙ্গে এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান বলেন, ‘প্রতিষ্ঠান প্রধান নিয়োগের জন্য সরকার একটি কমিটি গঠন করেছে। কমিটির আহবায়ক করা হয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবকে। কমিটিতে তিন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং এনটিআরসিএর প্রতিনিধি রয়েছে। এ কমিটি শিগগিরই সভা করে প্রতিষ্ঠান প্রধান নিয়োগ নীতিমালা তৈরি করবে।’

মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘এনটিআরসিএ নাকি পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান নিয়োগ হবে সেটি এই মুহূর্তে বলা কঠিন। বিষয়টি কমিটি চূড়ান্ত করবে। তবে এতটুকু নিশ্চিত করে বলতে পারি, ম্যানেজিং কমিটির মাধ্যমে আর প্রতিষ্ঠান প্রধান নিয়োগ হবে না।’

তিনি বলেন, ‘আমরা প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে শূন্য পদের তথ্য সংগ্রহ করি। তবে অনেক প্রধান শিক্ষক ভুল তথ্য দেন। এতে করে সুপারিশপ্রাপ্ত প্রার্থী নানা বিড়ম্বনার শিকার হন। এজন্য এখন থেকে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের কাছে শূন্য পদের তথ্য সংগ্রহ করা হবে না। এখন থেকে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের কাছে শূন্য পদের তথ্য চাওয়া হবে।’

মো. আমিনুল ইসলাম আরও বলেন, ‘নিবন্ধন পরীক্ষা নিয়ে আমরা একটি প্রস্তাবনা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। সেখানে মাদ্রাসার ক্ষেত্রে ১৪০ নম্বর সাবজেক্টিভ এবং ৬০ নম্বর জেনারেল (বাংলা, ইংরেজি, গণিত, সাধারণ জ্ঞান) বিষয়ে পরীক্ষা হবে। এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে প্রার্থীকে ৮০ নম্বর পেতে হবে। সাবজেক্টিভ এবং জেনারেলে আলাদা আলাদা ৪০ পেলে হবে না। দুটো মিলিয়ে তাকে ৮০ নম্বর পেতে হবে।’