Image description

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা অভিমুখে যাত্রারত ‘কনসায়েন্স’ জাহাজ থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দুটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন বাংলাদেশের বিশিষ্ট আলোকচিত্রী ড. শহিদুল আলম। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় একটি স্ট্যাটাসে তিনি সমুদ্রযাত্রার উত্তাল আবহাওয়ার পরিস্থিতি ও ইসরায়েলি হামলার শঙ্কার কথা উল্লেখ করেন।

ড. শহিদুল আলম লিখেছেন, ‘আজ রাতে সমুদ্র উত্তাল হয়ে উঠেছিল। বজ্রপাত আর ঝড়ের সঙ্গে লড়াই করে আমরা (ফ্লোটিলা বহর) এগিয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু আমাদের গতি বাড়ানোর আরেকটি কারণ হচ্ছে- খবর আসে, ইসরায়েলি জলদস্যুরা বহরের সামনের জাহাজ আলমার দিকে ছুটে আসছে। এভাবেই তারা আতঙ্ক ছড়াতে চায়। আমরা বহরের সবচেয়ে বড় জাহাজ ‘কনসায়েন্সে’ রয়েছি, তাই আলমায় আক্রমণ চালিয়ে আমাদের ভয় দেখানোর অপচেষ্টা করছে তারা। তবে আমরা মোটেও ভীত নই। আমরা ডেকে বের হয়েছি ঝড়ো রাতে বিবৃতি দিতে এবং গান গেয়ে সংহতি প্রকাশ করতে। আমরা জানি, আপনারাও সবসময়ই আমাদের পাশে রয়েছেন। উঠে দাঁড়ান, দৃঢ়ভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন। ন্যায়বিচারের জন্য আমরা লড়াই ছাড়ব না।’

সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (বাংলাদেশ সময় দুপুর সোয়া ২টার দিকে) দেওয়া স্ট্যাটাসে তিনি নিজেদের কঠিন পরিস্থিতি ও যাত্রার চ্যালেঞ্জের কথা জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, “জাহাজ ‘কনসায়েন্সে’ ঘুমানোর জন্য পছন্দসই আর কোনো জায়গায় আমার আর কোনো স্থান ছিল না, কারণ আমি শেষ যাত্রী হিসেবে এতে উঠেছি।”

‘গত রাতে খোলা ডেকে ঘুমিয়েছিলাম, কিন্তু ঝড়ের কারণে তা সম্ভব হয়নি। তাই বের হবার রাস্তায় একটি ছোট্ট কোণে জায়গা নিয়েছি। আলো-শব্দের ভিড়ে ঘুমের অসুবিধা হলেও রিমান্ড ও কারাগারের অভিজ্ঞতা আমাকে এমন প্রতিকূল অবস্থায় অভ্যস্থ করে দিয়েছে। ফলে গভীর ঘুম হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শুভেচ্ছা ও দোয়া আসছে। সবার বার্তায় সাড়া দিতে না পারায় আমি দুঃখিত, তবে সঙ্গীদের কাছে সেগুলো পৌঁছে দিয়েছি।

গণমাধ্যমের বন্ধুদেরও দুঃখিত হওয়ার বার্তা জানাচ্ছি-এতো অনুরোধ আসছে যে, ব্যক্তিগতভাবে সাড়া দেয়া সম্ভব নয়। দয়া করে কনটেন্টের জন্য দৃকের সহকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

আলোচনার তুঙ্গে- ইসরায়েলি জলদস্যুদের হাতে আন্তর্জাতিক জলসীমায় সুমুদ ফ্লোটিলার নৌযান দখলের প্রসঙ্গে। আমাদের এখনো গাজায় পৌঁছাতে বেশি সময় বাকি নেই, তাই আমরা নজর রাখছি কী ঘটে এবং সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নিয়ে নিচ্ছি।

আজ উত্তাল ঢেউ দুই মিটার পর্যন্ত উঠতে পারে বলা হয়েছে, তবে ঝড় থেমে গেছে, আর বজ্রপাতও নেই। ঝড় এড়াতে ক্যাপ্টেন জাহাজের গতি বাড়িয়ে দিয়েছিলেন এবং তা কার্যকর হয়েছে। অসুস্থতার জন্য ব্যাগ দেয়া হয়েছিল, তবে দরকার হয়নি।

আমরা গাজায় (ইসরায়েলি) অবরোধ ভাঙব। আপনাদের উপস্থিতি ও সংহতি আমাদের কাছে অমূল্য কিছু। ফিলিস্তিন মুক্ত হবে।’

প্রসঙ্গত, এর আগে স্থানীয় সময় গত মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ইতালির ওট্রান্টো থেকে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ফ্লোটিলার অভিযাত্রী হন আলোকচিত্রী ড. শহিদুল আলম। ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজার উদ্দেশে এগিয়ে চলা ত্রাণবাহী নৌ-বহর গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলায় যোগ দেন বাংলাদেশের খ্যাতিমান আলোকচিত্রী ও মানবাধিকারকর্মী ড. শহিদুল আলম।