
বৃষ্টি ও পূজার ছুটির অজুহাতে কাঁচা মরিচের দাম আবার ৩০০ টাকা ছাড়িয়েছে। খুচরা বাজারে এখন এক কেজি কাঁচা মরিচের দাম ৩২০ টাকার আশপাশে। সাধারণ ক্রেতাদের ২৫০ গ্রাম কাঁচা মরিচ কিনতে তাদের অন্তত ৭৫-৮০ টাকা খরচ করতে হচ্ছে। পাঁচদিন আগেও এক কেজি মরিচের দাম ছিল ২০০-২২০ টাকা। অর্থাৎ এ সময়ের মধ্যে প্রতি কেজিতে কাঁচা মরিচের দাম বেড়েছে ১০০-১২০ টাকা করে। গত আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে কাঁচা মরিচের দাম কেজি প্রতি ৩০০ টাকা ছাড়িয়েছিল। বৃহস্পতিবার রাজধানীর কাওরানবাজার সহ বিভিন্ন বাজারে ঘুরে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ সব তথ্য জানা গেছে। বিক্রেতারা বলছেন, গত তিনদিনে দেশে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। প্রায় একই সময়ে পূজার ছুটিতে পণ্য আমদানির পরিমাণ কমেছে। এতে সব মিলিয়ে বাজারে কাঁচা মরিচসহ সবজির সরবরাহ কমেছে। এ কারণে দাম বেড়েছে।
বৃহস্পতিবার সরজমিনে মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, এখানে স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলিয়ে প্রায় ১৫টির মতো সবজির দোকান রয়েছে। কোনো সবজির দোকানেই ৩২০ টাকা কেজি’র নিচে কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে না। আর মান একটু ভালো হলে সেই দাম আরেকটু বেশি রাখা হচ্ছে।
সবজির দামও বেড়েছে: শুধু কাঁচা মরিচ নয়; বাজারে বেশির ভাগ সবজির দামও বাড়তি। এক সপ্তাহের ব্যবধানে অধিকাংশ সবজির দাম কেজিতে ২০-৩০ টাকা করে বেড়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের মাছ, মুরগি, ডাল ও চালের দাম উচ্চমূল্যে স্থিতিশীল রয়েছে। বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৫০ টাকায়, যা সপ্তাহখানেক আগে ছিল ১০০ টাকার আশপাশে। আর ছয়-সাত দিন আগে ধরনভেদে এক কেজি বেগুন ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল, যা বৃহস্পতিবার বিক্রি হয়েছে ১২০-১৪০ টাকায়। যদিও সবচেয়ে চড়া দাম তাল বেগুনের; কেজি ২২০ টাকার ওপরে। এছাড়া অন্যান্য সবজির দাম কেজিতে ২০-৩০ টাকা করে বেড়েছে। দাম বাড়ার পরে পটোল, চিচিঙ্গা, ঝিঙে, ধুন্দুল, লাউ প্রভৃতি সবজি ৭০-৮০ টাকায় এবং কাঁকরোল, করলা, ঢেঁড়শ, বরবটি ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অর্থাৎ ৭০-৮০ টাকার নিচে তেমন কোনো সবজি কেনা যাচ্ছে না। টাউন হল বাজার ও কলমিলতা বাজার ঘুরেও কাছাকাছি দাম দেখা গেছে। অবশ্য কাওরান বাজারে এসব পণ্যের দাম কিছুটা কম থাকে।
মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের সবজি বিক্রেতা আব্বাস আকন্দ বলেন, বর্তমানে বাজারে দেশে উৎপাদিত কাঁচা মরিচ ও টমেটো নেই বললেই চলে। যেসব কাঁচা মরিচ ও টমেটো বিক্রি হচ্ছে, তার প্রায় পুরোটাই ভারত থেকে আমদানি করা। কিন্তু পূজার ছুটির কারণে এসব পণ্যের আমদানি কমেছে। অন্যদিকে দুই-তিনদিন বৃষ্টির কারণে দেশীয় সবজির সরবরাহও কিছুটা কম। এসব কারণে সবজির দাম এতটা চড়া।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা ও একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী সাইয়েদ হুদা বলেন, সবজির দামে কোনো লাগাম নেই। তিন-চার পদের সবজি কিনলেই ৪০০ টাকার ওপরে চলে যাচ্ছে। এর একটা সুরাহা হওয়া উচিত। প্রশাসনকে বাজার নজরদারি বাড়াতে হবে। মধ্যবিত্তরা খুব কষ্টে আছে কিছু হলেই বিক্রেতারা দাম বাড়িয়ে দেয়।