
শেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট চন্দন কুমার পাল ৭ মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিন নেওয়ার পর ভারতে পালিয়েছেন।
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে শেরপুর জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন এবং মুক্তির পর ভারতে পালিয়েছেন। এমন খবরে শেরপুরে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে জেলা বিএনপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া নেতাকর্মীদের মধ্যে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা চলছে। বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে এখানে পুলিশের ভূমিকা রহস্যজনক।
জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মামুনুর রশীদ পলাশ জানান, আমরা ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় জামিন পেলেই পুলিশ আমাদের বিভিন্ন মামলা দিয়ে জেলগেট থেকেই আবারও আটক করে নতুন নতুন মামলা দিয়ে জেলে দিয়েছে। অথচ হত্যা মামলাসহ সাত মামলার আসামি কিভাবে জামিন নিয়ে দেশ ছাড়ে?
অন্যদিকে সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক হজরত আলী জানান, শেরপুরের পুলিশ বিএনপির কোনো অভিযোগ পেলেই তাকে আটক করে মামলা দেয়। তারপরও জেলা আওয়ামী লীগের এত বড় নেতা কিভাবে ছাড়া পায়? টাকা দিয়ে পুলিশসহ নানা সুবিধাভোগীরাই চন্দন উকিলের দেশ ছাড়তে সহযোগিতা করেছে। এ ব্যাপারে সরকারের তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
কারাগার সূত্র জানায়, ৫ আগস্টে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম মাস্টারমাইন্ড ও হত্যা মামলাসহ ৭ মামলার আসামি গত ৯ সেপ্টেম্বর উচ্চ আদালতের আদেশে শেরপুর জেলহাজত থেকে মুক্তি পান। মুক্তির পরে জেলগেট থেকে ওই দিনই ১৯৭৪ সালে বিশেষ ক্ষমতা আইনের একটি মামলায় পুলিশ চন্দন পালকে আবারও গ্রেফতার করে।
২৮ সেপ্টেম্বর উচ্চ আদালত থেকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে চন্দন কুমার পালের জমিন হলে সোমবার সকালে তিনি মুক্তি পান। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শেরপুর জেলা কারাগারের জেলার আব্দুস সেলিম। এ জামিনের বিষয়টি মঙ্গলবার সকালের দিকে শহরে জানাজানি হলে শহরে টক অব দ্য টাউনে পরিণত হয়।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছেন- এমন একজন শীর্ষ নেতার গোপনে জামিন ও মুক্তিতে আমরা নিরাশ হয়েছি। আমরা শেরপুরের মানুষ এ ব্যাপারে কিছুই জানি না। আমরা প্রয়োজনে আবারও আন্দোলন করব।
শহর বিএনপির নেতা ও পিপি অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান জানিয়েছেন, উচ্চ আদালত জামিন দিয়েছেন বলে শুনেছি, এর বেশি কিছু জানি না।
এর আগে তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র হত্যা মামলাসহ বেশ কিছু মামলায় ২০২৪ সালের ২৫ অক্টোবর ভারত যাওয়ার সময় বেনাপোল বন্দরে ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে আটক করে শেরপুর পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।