
জুলাই আন্দোলন দমনে ঢাকার আকাশে চক্কর দেওয়া র্যাবের হেলিকপ্টারগুলোর বিস্তারিত তথ্য উদ্ধার করা হয়েছে। কল রেকর্ডের সূত্র ধরে উদ্ধার করা হয়েছে হেলিকপ্টারগুলোর লগ বই। এতে হেলিকপ্টার থেকে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার ওপর কোন ধরনের লেথাল ইউপেন ব্যবহার করা হয়েছে, তার তালিকা পাওয়া গেছে। এমনকি সে হেলিকপ্টার থেকে র্যাবের কারা আন্দোলনকারীদের ওপর অস্ত্র-গ্রেনেড ছুড়েছিল পাওয়া গেছে তাদের নাম-পদবিও।
গতকাল রোববার শেখ হাসিনাসহ তিন জনের বিরুদ্ধে মানবতারিরোধী অপরাধের মামলায় ৫৪তম সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলমগীর। জবানবন্দিতে তিনি এসব তথ্য জানান।
গতকাল জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থানের সময় ঢাকাসহ সারা দেশে সংঘটিত নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ১৮টি ভিডিও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রদর্শন করা হয়। এর মধ্যে অন্যতম একটি ছিল ঢাকার আকাশে র্যাবের হেলিকপ্টার থেকে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি-গ্রেনেড দিয়ে আক্রমণের দৃশ্য।
ভিডিওটি শেষ হওয়ার পর শেখ হাসিনার আইনজীবী আমির হোসেন ট্রাইব্যুনালে দাঁড়িয়ে বলেন, হেলিকপ্টার থেকে আক্রমণের কোনো দৃশ্য প্রতীয়মান হয়নি। তখন প্রসিকিউশনের আবেদনে ভিডিও জুম করলে দেখা যায়, হেলিকপ্টার থেকে গুলি-গ্রেনেড মারার পর সঙ্গে সঙ্গে আওয়াজ ও ধোঁয়া বের হচ্ছে, যা স্পষ্টা বোঝা যাচ্ছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল-১-এ প্রদর্শন করা এসব ভিডিওতে চানখাঁরপুল, যাত্রাবাড়ী, আশুলিয়া, রামপুরাসহ বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক নৃশংস হত্যার দৃশ্য দেখা যায়। এ সময় ট্রাইব্যুনালে এক শোকাবহ পরিবেশ সৃষ্টি হয় ।
দুপুরের বিরতির পর তদন্তকারী কর্মকর্তা আলমগীর ট্রাইব্যুনালে তার আনুষ্ঠানিক জবানবন্দি শুরু করেন। এতে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, পঙ্গু হাসপাতাল, মিটফোর্ড হাসপাতাল, মুগদা হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে গুলি, পিলেট ও ময়নাতদন্ত রিপোর্ট জব্দ করার কথা ট্রাইব্যুনালে জানান।
ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম। সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর বিএম সুলতান মাহমুদ, ফারুক আহাম্মদ, তানভীর হাসান জোহাসহ অন্যরা ।