
রাজধানীর মিন্টো রোড এলাকা থেকে গ্রেপ্তার বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক এনায়েত করিম চৌধুরীর কাছে অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক তথ্য মিলেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
তিনি দেশের বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তির সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তার মোবাইল ফোন থেকে পাওয়া বিভিন্ন ক্লু ধরে এসব ব্যক্তিকে শনাক্ত করতে তদন্তে নেমেছেন পুলিশ ও গোয়েন্দারা।
গত শনিবার সকালে রাজধানীর মন্ত্রিপাড়া হিসেবে পরিচিত মিন্টো রোড এলাকা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক এনায়েত করিম চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি একটি প্রাডো গাড়িতে করে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরি করছিলেন। তার দুটি মোবাইল ফোনের তথ্য বিশ্লেষণ করছেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।
এ বিষয়ে গতকাল বিকেলে ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম বলেন, এনায়েত করিমকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা প্রাথমিকভাবে তার ফোন বিশ্লেষণ করেছি, যেখানে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক তথ্য মিলেছে। এসব বিষয় খতিয়ে দেখতে তাকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদনও করা হয়েছে। এ ব্যক্তি কিছু রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে গোপনে সাক্ষাৎ করেছেন বলেও প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আমাদের জানিয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশে এনায়েত করিমের কার্যক্রমের তথ্য গুরুত্ব দিয়ে পর্যালোচনা করছে পুলিশ।
এদিকে, আজ সোমবার আদালতে তার রিমান্ড শুনানির কথা রয়েছে। এর আগে শনিবার তাকে আটকের পর ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। গতকাল তার বিরুদ্ধে রাজধানীর রমনা থানায় মামলা করে পুলিশ।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রোববার সন্ধ্যায় বলেন, এনায়েতের বিরুদ্ধে করা মামলার তদন্ত আমরা করব। তবে এখনো মামলার নথি আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি। আমরা এরই মধ্যে তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সংশ্লিষ্ট তথ্যগুলো নিয়ে কাজ শুরু করেছি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যও যাচাই করা হচ্ছে। বেশকিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছি। তবে তদন্তের স্বার্থে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। রিমান্ডে নিয়ে তথ্যগুলো সামনে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
তিনি বলেন, এ ষড়যন্ত্রমূলক কার্যক্রমে আরও কারা জড়িয়েছেন, তারা কতদূর এগিয়েছেন, তা গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে। জড়িতদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
রমনা থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশে আসার পর গত ৬ ও ৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে অবস্থান করেন এনায়েত করিম। পরবর্তী সময়ে তিনি রাজধানীর গুলশানের একটি ফ্ল্যাটে উঠেন। এরই মধ্যে তিনি উচ্চপদস্থ একাধিক সরকারি কর্মকর্তা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী নেতা ও ব্যবসায়ী মহলের সঙ্গে গোপনে বৈঠক করেছেন।
জানা গেছে, এনায়েত করিম ১৯৮৮ সালে আমেরিকায় যান। ২০০৪ সালে সে দেশের পাসপোর্ট পান। গত ৬ সেপ্টেম্বর তিনি নিউইয়র্ক থেকে বাংলাদেশে আসেন।