Image description

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘সংবিধান পরিবর্তনের অধিকার শুধু নির্বাচিত প্রতিনিধিদের। কোনো অনির্বাচিত ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর পক্ষে সংবিধানের ওপর প্রভাব বিস্তার করা গ্রহণযোগ্য নয়।’ বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের ৩৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, “বর্তমান সরকার একটি ‘জুলাই সনদ’ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠিয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক দলের ঐকমত্যে যে সনদ গৃহীত হবে, সেটি নাকি সংবিধানের ওপরে স্থান পাবে। এটি তো কখনো হতে পারে না। সারা পৃথিবীতে সংবিধান প্রণয়ন করে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা। বাংলাদেশেও তাই হয়েছে, ভবিষ্যতেও ইনশাআল্লাহ তাই হবে।”

তিনি বলেন, ‘দেশবাসী একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রত্যাশায় আছে। অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে সেই নির্বাচন হলে নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই ভবিষ্যতের সংবিধান নির্ধারণ করবেন।’

 

নিজের মুক্তিযুদ্ধের অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘১৯৭১ সালে আমি ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের একটি ব্যাটালিয়নের কমান্ডার ছিলাম। আমার অধীনে ৮০০ সৈনিক ছিল, যাদের অনেকেই ছাত্র। দেড় মাসের প্রশিক্ষণ নিয়েই তারা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। তাদের মধ্যে ১০০ জন শহীদ হয়েছে। আজও তাদের মুখ আমার চোখের সামনে ভেসে ওঠে। অথচ এ আত্মত্যাগের যথাযথ মূল্যায়ন এই রাষ্ট্রে হয়নি।’

 

তিনি অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে। শেখ হাসিনা তার ফ্যাসিবাদী শাসন দিয়ে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছেন, প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছেন। আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই।

 

আলোচনা সভায় জামায়াতে ইসলামী ও নতুন গড়ে ওঠা কয়েকটি দলের সমালোচনা করে হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘একটি দল স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছে, আরেকটি ১৯৪৭-এর বিরোধিতা করেছে। এরা আজ জনগণের মালিক সাজতে চায়। তারা জানে নির্বাচনে তাদের কোনো সুযোগ নেই, তাই শুধু বিএনপিকে ক্ষমতা থেকে দূরে রাখতেই ব্যস্ত।’

জামায়াতকে একসময় জোটে নেওয়ার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘আমরা এতো বছর জামায়াতকে আশ্রয় দিয়েছি, এমনকি তাদের মন্ত্রী বানিয়েছি। অথচ এখন তারাই বিএনপিকে আক্রমণ করছে।’

মেজর হাফিজ বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামীকে আমরা এতো বছর আশ্রয় দিয়েছি, আমাদের প্রতীক নিয়ে তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে, তাদের মন্ত্রী হিসেবে স্থান দিয়েছি। আমাদের এখানে ফারুক আছে, আলাল আছে, সরোয়ার আছে। এরকম মন্ত্রী হতে পারত। এদের জায়গা আমরা দিয়েছি জামায়াতকে। ঠিক আছে, বন্ধু প্রতীম দল। আজকে তারপর তারা আমাদের প্রতি কি বলছে? দুই সাপের একই বিষ। নৌকা আর ধানের শীষ। এজন্য এদের মন্ত্রী বানিয়েছিলাম?’

হাফিজ উদ্দিন আরও বলেন, ‘পিআর পদ্ধতির কথা বাংলাদেশের মানুষ চিনেই না। বিদেশি কনসেপ্ট। পাকিস্তানে নাই, ভারতে নাই, যুক্তরাজ্যে নাই, যুক্তরাষ্ট্রে নাই, কোথাও নাই। দুই একটা দেশে থাকতে পারে, আরও অনেক দেশে থাকতে পারে, যেখানে গণতন্ত্র অন্যরকম, শিক্ষা ব্যবস্থা অন্যরকম, কালচার অন্যরকম, তাদের শিক্ষাগত ব্যবস্থা অন্যরকম। ইসরায়েলে আছে এ ধরনের।’

জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন ফারুক, মজিবুর রহমান সরোয়ার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ।