
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনায় অনুমোদন দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি); আজ সেটির ঘোষণা দেওয়ার কথা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয়ার্ধে অংশীজনদের সঙ্গে ইসির সংলাপ শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে। ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ভোট গ্রহণ করা হবে। ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে কমিশন।
এদিকে গতকাল আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিন এবং চার নির্বাচন কমিশনার আবদুর রহমানেল মাছউদ, তাহমিদা আহমদ, মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ ও ইসি সচিব আখতার আহমেদ এ নিয়ে বৈঠক করেছেন। বেলা ১টায় সিইসির কক্ষ থেকে বেরিয়ে নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘কর্মপরিকল্পনার সবকিছু চূড়ান্ত হয়ে গেছে। অনুমোদন হয়েছে, এখন শুধু টাইপিং চলছে।’
এদিকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা (রোডম্যাপ) আজ ঘোষণার ইঙ্গিত দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। গতকাল নির্বাচন কমিশন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। ইসি সচিব বলেন, ‘এ মুহূর্তে আমরা আরও কিছু কাজ করছি। হয়তো বৃহস্পতিবার (আজ) আপনাদের আরও কিছু বাড়তি তথ্য দেওয়ার সুযোগ পাব।’ সেটা জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ কি না-সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, ‘আমি আপনাদের এ প্রশ্নের উত্তরটা আগেই দিয়েছি। আমি বলেছি আপনাদের আরও কিছু তথ্য দেওয়ার সুযোগ পাব।’
অন্য প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, ‘আমরা যে কর্মপরিকল্পনাটা (রোডম্যাপ) করেছি, সেটা (রোডম্যাপ) আপনাদের জানাব।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি ঢাকার বাইরে থাকার কারণে একটু পিছিয়ে গিয়েছি। এটা আমার টেবিলে এখন আছে।’ এর আগে বৃহস্পতিবার ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি কর্মকর্তা বৈঠকে বসেছিলেন। ওইদিন নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেছিলেন, বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনা ও বাস্তবায়নসূচির বিষয়ে ব্রিফ করা হবে।
ভোট প্রস্তুতির বিষয়ে ইসির পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে দল নিবন্ধন, সীমানা নির্ধারণ, নির্বাচন পর্যবেক্ষক, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংস্কার, বিধিমালা ও নীতিমালা জারি, প্রবাসীদের জন্য আইটি সাপোর্টেড নিবন্ধন ও পোস্টাল ব্যালট পদ্ধতি, নির্বাচনি সরঞ্জাম কেনাকাটার বিষয়গুলো তুলে ধরা হয় রোডম্যাপে।
৫ আগস্ট জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে রোজার আগে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছেন। পরদিন নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনারও বলেছেন, ভোটের তারিখের প্রায় দুই মাস আগে তফসিল ঘোষণা করা হবে। নির্বাচন কমিশন সভায় আলোচনা শেষে জানানো হয়, ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে তফসিল দেবে ইসি।
এবারের রোডম্যাপে কী থাকছে, সেই ধারণা দিতে গিয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার জানিয়েছেন, তাঁরা অক্টোবরের মধ্যে ‘মূল প্রস্তুতি’ সেরে ফেলতে চান। এ সময়সীমার মধ্যে সীমানা পুনর্নির্ধারণ, দল নিবন্ধন, পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ সংস্কার, আচরণবিধিমালা জারি ও ভোটার তালিকার মতো বিষয় চূড়ান্ত করে ফেলার কথা রোডম্যাপে তুলে ধরা হবে। এ ছাড়া রোডম্যাপের মধ্যে সংলাপ, মতবিনিময়, মিটিং, ব্রিফিং, প্রশিক্ষণ, মুদ্রণ, বাজেট বরাদ্দ, আইটিভিত্তিক প্রস্তুতি, প্রচার, সমন্বয় সেল, আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক থেকে যাবতীয় কর্মপরিকল্পনা মাথায় রেখে উল্লেখযোগ্য খাত ও বাস্তবায়নসূচি রয়েছে।