Image description

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ দেশের স্বাস্থ্যখাত সংস্কারের দাবিতে গত দুই সপ্তাহ ধরে আন্দোলন চলছে 
ছাত্র-জনতার। আর টানা ৫ দিন ধরে চলছে কঠোর আন্দোলন। গতকালও সড়ক অবরোধ করেছে শিক্ষার্থীরা। অনশনে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। এতে শেবাচিম হাসপাতালসহ বরিশালের প্রধান সড়কগুলোতে কার্যত অচলাবস্থা বিরাজ করছে। এই অবস্থায় সেবার মান উন্নয়নে কঠোরতা অবলম্বন করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বরখাস্ত করা হয়েছে স্বেচ্ছাসেবী ৪৬ জন ট্রলি অপারেটরকে। রোগী সেবার মান উন্নয়নে নেয়া হয়েছে নানামুখী পদক্ষেপ। নার্সদের সতর্ক করা হয়েছে। হাসপাতাল চত্বর থেকে আটক করা হচ্ছে দালালদের। ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের হাসপাতালে প্রবেশে জারি করা হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। এ নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. এ কে এম মশিউল মুনীর মেডিকেল কলেজের সকল বিভাগীয় প্রধান, অধ্যাপক, সহকারী ও সহযোগী অধ্যাপক ছাড়াও হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও স্টাফদের নিয়ে পৃথক বৈঠক করেছেন। পাশাপাশি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক, সিভিল সার্জন, জেলা প্রশাসক ও বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে হাসপাতালের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। 

জানা যায়, মঙ্গলবার (১২ই আগস্ট) বেলা ১২টার দিকে নগরীর নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনাল এলাকায় ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা। এ ছাড়া কয়েকটি স্কুলের শিক্ষার্থী নগরীর সদর রোড অবরোধ করেছে। অবরোধের সঙ্গে চলছে অনশনও। শেবাচিম হাসপাতালে অনশনরত দুই শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ার ঘটনাও ঘটেছে। এ সংবাদে অবরোধের ব্যাপ্তি আরও বেড়েছে। শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে বরিশাল নগরী। আন্দোলনে একাত্মতা জানিয়ে সদর রোড স্কুলের শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করেন। তাদের ৭ দফা দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ না ছাড়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে আন্দোলনকারীরা। তাদের ৭ দাবি হচ্ছে- দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের অপসারণ ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, ট্রলি সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ও সিন্ডিকেট বন্ধ করা, বেসরকারি ডায়াগনস্টিক দালালদের হাসপাতালে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা, রোগীদের সেবার মান উন্নয়নে স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন ও সুপারিশ বাস্তবায়নে ছাত্র প্রতিনিধি নিয়ে কমিটি গঠন, কোনো রোগীকে যেন বাইরে যেতে না হয়, ওষুধ ও পরীক্ষা হাসপাতালে থাকা, অনিয়ম ও দুর্নীতি চিহ্নিত করা, স্বাস্থ্যখাত সংস্কারের সব দাবি মানা এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে স্বাস্থ্য উপদেষ্টাকে বরিশালে আসা। 

সরজমিন দেখা গেছে, গত ৫ দিনের অবরোধের কারণে নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালে অসহনীয় যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। অবরোধ এড়িয়ে বড় বাসগুলো শহরের মধ্যদিয়ে চলাচলের চেষ্টা করছে। রিকশা, অটোর শহর বরিশাল নগরীর মধ্যে বাস চলাচলের বড় কোনো সড়ক নেই। ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেছে মানুষ। 

এর আগে, রোববার হাসপাতাল নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে সংস্কারে তিন মাসের সময় চেয়েছেন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার এ কে এম মশিউর মুনীর। তবে বেশ কিছু দাবি তিনি এরই মধ্যে পূরণ করেছেন বা করার চেষ্টা করছেন।