
রাজধানীর সদরঘাটে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের ওপর লঞ্চ কর্মীদের হামলার ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ৪৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এদের মধ্যে গ্রেপ্তারকৃত কিরন, সাদ্দাম, বিল্লাল ও মানিক নামে চারজনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছে আদালত। শুক্রবার (৮ আগস্ট) রাতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজহারে বলা হয়, ৭ আগস্ট আনুমানিক সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় জগন্নাথ বিশ্ববিলয়ের ১৯ ব্যাচের ছাত্র আনিস ঢাকা সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালের পল্টুনে ঘোরাঘুরির সময় সুন্দরবন-১২ লঞ্চের স্টাফ জসিম ছাত্র আনিসকে যাত্রী ভেবে টান মেরে তার পরিচালিত লঞ্চের টিকিট কাটার জন্য বলে। কিন্তু ছাত্র আনিস নিজেকে ছাত্র পরিচয় দেয়ায় লঞ্চের স্টাফ জসিম তার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে সেখান থেকে চলে যেতে বলেন। কিন্তু আনিস তাৎক্ষণিক না যাওয়ায় জসিম তাকে ধাক্কা দিয়ে যেতে বলিলে আনিস নিজের পরিচয় দেওয়ার পরও এহেন আচরণে মন খারাপ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসে। বিশ্ববিদ্যালয়ে আসলে তার বন্ধুরা ঘটনার বিষয়ে জানার জন্য লঞ্চ ঘাটে যায়। সেখানে যাওয়ার পর সুন্দরবন ১২ লঞ্চের স্টাফকে জসিমের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তারা ছাত্রদের সাথে খারাপ আচরণ করে।
এতে আরো বলা হয়, সুন্দরবন ১২ লঞ্চের স্টাফদের সাথে তর্ক-বিতর্ক চলমান অবস্থায় ১নং বিবাদী মুফতিজুল কবির কিরন নিজেকে ঘাট কর্তৃপক্ষের পরিচয় দিয়ে অন্যান্য বিবাদীসহ প্রায় ২০/২৫ জন অজ্ঞাতনামা বিবাদীরা সন্ধ্যা ৭টার সময় দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানাধীন সদরঘাটস্থ সুন্দরবন ১২ লঞ্চের ৯নং পল্টুনের উপর পিস্তল, রড, ছুরিসহ লাঠি-সোডা নিয়ে হাজির হয়ে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের উপর চড়াও হয়ে কথা-বার্তা বলতে থাকে। আমাদের বিশ্ববিদ্যায়ের ছাত্ররা নিজেদের পরিচয় দেওয়ার পরও ১ নং বিবাদী ছাত্রদের গালিগালাজ করতে থাকে। ছাত্ররা গালি-গালাজ করতে নিষেধ করলে ১নং বিবাদী আরো ক্ষিপ্ত হয় এবং তার নির্দেশে অন্যান্য বিবাদীরা অতর্কীতভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের উপর হামলা করে।
এ বিষয়ে সদরঘাট নৌ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সোহাগ রানা বলেন, ‘শুক্রবার ৪ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে নেওয়া হয়। এ ঘটনার তদন্তের স্বার্থে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। তদন্ত চলছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এর আগে, গত ৭ আগস্ট পুরান ঢাকার সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সুন্দরবন-১২ লঞ্চের কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি), কবি নজরুল কলেজ এবং সোহরাওয়ার্দী কলেজের অন্তত নয়জন আহত হন।