Image description

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সারা দেশের এক হাজার ৯৪১ জন সম্ভাব্য সংসদ সদস্য (এমপি) প্রার্থীর নাম ও জীবনবৃত্তান্ত সংগ্রহ করেছে পুলিশ। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন এমন প্রত্যেক প্রার্থীর ১১টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছাড়াও ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এসব প্রতিবেদনে প্রার্থীর আরো কয়েকটি বিষয় নথিতে সংযুক্ত করে নির্বাচনি কাজে নিয়োজিত সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হবে।

 

পুলিশ জানিয়েছে, গত ৪ জুলাই থেকে মাঠপর্যায়ে কাজ শুরু করে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি)। নির্বাচন করতে পারেন এমন প্রার্থীদের বাড়ি এবং ব্যবসায়িক কার্যালয়ে গিয়ে পুলিশ এসব তথ্য সংগ্রহ করে। কিছু প্রার্থী পুলিশকে নিজ উদ্যোগে ব্যক্তিগত তথ্য দিয়েছেন এবং কেউ কেউ কিছু বিষয় গোপন করার চেষ্টা করেছেন। পুলিশ প্রথাগত সোর্স ও মাঠপর্যায়ের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীর কাছ থেকে বাকি তথ্যগুলো সংগ্রহ করে।

বেশি প্রার্থী হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে ঢাকা বিভাগে। এই বিভাগের ৭০ আসনে ৫৮০ ব্যক্তি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আগ্রহী। এছাড়া ভোট করতে ইচ্ছুক এমন এক হাজার ৯৪১ জনের মধ্যে ৭০ জন ঋণখেলাপি হওয়ার প্রাথমিক তথ্য পেয়েছে পুলিশ। পুলিশের প্রতিবেদন যাতে কোনো ধরনের নেতিবাচক না হয়, সেক্ষেত্রে কিছু প্রার্থীর পুলিশের দারস্থ হওয়ার খবরও পাওয়া যাচ্ছে। তবে পুলিশ জানিয়েছে, মাঠপর্যায়ে যে তথ্য পাওয়া যাবে, ওই তথ্যগুলো এখানে লিপিবদ্ধ করা হবে।

এ বিষয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম জানান, প্রার্থীদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সারণি আকারে জমা দিতে বলা হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজশাহী বিভাগের এক পুলিশ সুপার (এসপি) আমার দেশকে বলেন, সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা করে সেগুলো ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

সূত্র জানায়, ময়মনসিংহ বিভাগের ২৪ আসনে ১২০ জন প্রার্থী রয়েছেন। প্রতি আসনে গড়ে ছয়জন করে প্রার্থীর খবর পাওয়া গেছে। পুলিশের প্রতিবেদনে ওই বিভাগের অধিকাংশ প্রার্থীই তরুণ বলে জানা গেছে।

পুলিশ জানায়, রংপুর বিভাগের ৩৩ আসনে ১৯৮ প্রার্থীর খবর পেয়েছে পুলিশ। ওই বিভাগে বিএনপির প্রার্থী বেশি বলে জানা গেছে। এছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগের ৫৮ আসনে ৩৪৮ জন এবার ভোটের লড়াইয়ে অংশ নেবেন বলে তালিকায় উঠে এসেছে। বরিশালে বিভাগের ২১ আসনে ১৪৭ জন ভোট করবেন বলে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, খুলনা বিভাগের ৩৬ আসনে এবার ২১৬ জন ভোট করবেন। রাজশাহী বিভাগের ৩০ আসনে ১৮০ জনের ভোট করার কথা জানানো হয়েছে। ওই বিভাগে বিএনপির প্রার্থী বেশি বলে জানা গেছে। এছাড়া সিলেটের ১৯ আসনে ১৫২ জন সম্ভাব্য প্রার্থী এবার ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। পাশাপাশি বরিশাল বিভাগের ২১ আসনে ১৪৭ জন ভোট করবেন বলে পুলিশের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

সূত্র জানায়, মোট এক হাজার ৯৪১ জন সম্ভাব্য এমপি প্রার্থীর মধ্যে ৭০ জনের ঋণখেলাপির তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগে ২৫ জন সম্ভাব্য প্রার্থীর ঋণখেলাপির খবর পেয়েছে পুলিশ।

পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, পুলিশের বায়োডাটায় প্রার্থীর পেশাগত পরিচয়, রাজনৈতিক ইতিহাস ও ভূমিকা, সামাজিক ও ধর্মীয় প্রভাব, কোনো উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার রেকর্ড, বিচারাধীন মামলা বা আগের সাজা, মোবাইল নম্বর, ব্যবসা-বাণিজ্যের ধরন ও আর্থিক লেনদেন, বিদেশে যাতায়াত ও সম্পদের বিবরণ, অপরাধমূলক রেকর্ড, পুলিশের খাতায় থাকা তথ্য, শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং সহিংসতায় জড়াতে পারেন কি না, তা জানতে চাওয়া হয়।

সূত্র জানায়, আসন্ন নির্বাচনে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা ঠেকাতে এ উদ্যোগ নিয়েছে পুলিশ। কারণ, নির্বাচন বানচাল করতে ফ্যাসিবাদের একটি গোষ্ঠী মাঠে সক্রিয় হতে পারে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ মাঠপর্যায়ে টহল বাড়ানোসহ অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করবে।