Image description
সাধারণ মানুষও কৌতূহলী হয়ে উঠেছে

জাতির উদ্দেশে ভাষণে আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতে (২০২৬ সাল) ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার এমন ঘোষণার মধ্য দিয়ে দেশ নির্বাচনী ট্রেনে উঠেছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও নির্বাচন কমিশন নড়েচড়ে বসেছে। বিএনপিসহ বেশিরভাগ দল নির্বাচনের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছে। কিছু দল অবশ্য নির্বাচনের বিষয়ে সন্দেহ এবং হতাশার কথা জানিয়েছে। কোনো কোনো দল নির্বাচনের শর্তও জুড়ে দিয়েছে। বিশেষ করে জুলাই সনদের ভিত্তিতে আগামী নির্বাচন হওয়ার কথা বলছে জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি দল।

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) বলেছে, নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে তাদের আপত্তি নেই। তবে নির্বাচনের আগে সংস্কারকে দৃশ্যমান করা ও সংস্কার বাস্তবায়ন করা এ সরকারের অবশ্য কর্তব্য। প্রধান নির্বাচন কমিশনার জানিয়েছেন, চ্যালেঞ্জ থাকলেও তারা ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন—এমনটা মাথায় রেখেই প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, নির্বাচনের প্রস্তুতিমূলক বড় কাজগুলোর মধ্যে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ শেষ পর্যায়ে, সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণের খসড়া প্রকাশ করা হয়েছে, নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের কাজ চলছে, কেনাকাটাও চলছে। আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে বড় প্রস্তুতিমূলক কাজগুলো শেষ হয়ে যাবে। নির্বাচন কমিশন একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায়, ভোটারদের ব্যাপক অংশগ্রহণ চায়। এদিকে নির্বাচন আয়োজনে এরই মধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে (সিইসি) আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দেশের বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচন নিয়ে সাধারণ মানুষও কৌতূহলী হয়ে উঠেছেন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাজনৈতিক দলগুলো এখন নির্বাচনী ট্রেনে উঠে গেছে। তবে সেই ট্রেনে কোন দলের অবস্থান কেমন হবে? সবাই কি ট্রেনযাত্রায় সমান সুবিধা পাবে? এমন প্রশ্নও আছে রাজনৈতিক অঙ্গনে। যদিও এবারের নির্বাচনে কতটি দল অংশ নেবে, সে বিষয়ে এখনই স্পষ্টভাবে বলা যাচ্ছে না। এমন অবস্থায় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচন নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার তার সদিচ্ছা পোষণ করেছে, এখন দলগুলোকে নির্বাচনের বিষয়ে ঐকমত্য হতে হবে। দেশে স্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক পুনর্জাগরণ ঘটানোর জন্য নির্বাচন একটি অপরিহার্য বিষয়। কেননা দলগুলোর মাঝে অনৈক্যে ফ্যাসিবাদ আবারও সুযোগ নেবে। সে বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা নিজেও আশঙ্কার কথা তার ভাষণে বলেছেন। সুতরাং এখন নির্বাচনী ট্রেন চালিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব রাজনৈতিক দলগুলোকেও নিতে হবে।

প্রসঙ্গত, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতনের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে গত মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দীর্ঘ ভাষণে তিনি তার সরকারের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন। বিশেষ করে জাতির সবচেয়ে আকাঙ্ক্ষার জায়গা ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে বেশকিছু কথা বলেন। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা এবার একটি নির্বাচিত সরকারের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু করব। অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে আমি প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে চিঠি পাঠাব, যেন নির্বাচন কমিশন আগামী রমজানের আগে, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।

নির্বাচন নিয়ে কী বলছে বিএনপি:

নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার দিকনির্দেশনাকে ঐতিহাসিক বিষয় মনে করছে বিএনপি। দলটি মনে করে, এ ঐতিহাসিক ঘোষণা বাংলাদেশে রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটিয়ে উঠবে এবং গণতন্ত্র উত্তরণের পথকে সুগম করবে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, গণতান্ত্রিক পথ পরিষ্কার করতে আমরাসহ গোটা জাতি মনে করে অতিদ্রুত নির্বাচনই একমাত্র পথ। যার মধ্য দিয়ে আমরা গণতন্ত্রে উত্তরণ ঘটাতে পারি। নির্বাচনকে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ এবং সবার কাছে গ্রহণযোগ্য করার জন্য সরকার, নির্বাচন কমিশন সব ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। একটি কার্যকরী জাতীয় সংসদ গঠনের জন্য বিএনপি সব রাজনৈতিক দল ও জনগণের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছে। কেননা, এই নির্বাচনটা দেশের জনগণই চায়। জনগণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সবচেয়ে বড় প্রহরী হয়ে দাঁড়াবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া হয়তো তারা (যেসব দল অসন্তুষ্ট) এখনো দেয়নি, তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় হতাশার কথা তারা বলেছে। তবে আমরা আশা করব, তারা একটি পজিটিভ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেবে।

বিএনপি চেয়ারপারসনের ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যাডভাইজরি কমিটির বিশেষ সহকারী বদরুল আলম চৌধুরী শিপলু কালবেলাকে বলেন, প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে নির্বাচনের বিষয়ে যেসব কথা উচ্চারিত হয়েছে, তা আশাব্যঞ্জক। কেননা, দেশের চলমান সংকট নিরসনে দরকার অবিলম্বে নির্বাচনী রোডম্যাপ। এটি একমাত্র সমাধানের পথ। এখন সরকার ও নির্বাচন কমিশন কত দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ দেবে, সেটিই দেখার বিষয়।

জুলাই সনদের ভিত্তিতে নির্বাচন চায় জামায়াত:

এদিকে জুলাই সনদের ভিত্তিতে আগামী ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন চায় জামায়াতে ইসলামী। দলটির মতে, নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার আগে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করার দীর্ঘদিনের যে ঐতিহ্য, তা উপেক্ষা করে জুলাই ঘোষণার দিনেই নির্বাচনের সময়সীমা ঘোষণা করা হয়েছে। তবু জাতীয় স্বার্থে প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখে জামায়াত। দলটির নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের গতকাল কালবেলাকে বলেন, জামায়াতে ইসলামী একটি নির্বাচনমুখী দল। অতীতে সব গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীর অংশগ্রহণ ও জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব ছিল। সারা দেশে জামায়াতের নির্বাচনী প্রস্তুতি চলছে। আমরা লক্ষ করছি, নির্বাচনের উপযুক্ত যে পরিবেশ থাকার কথা ছিল, তা সরকার এখনো নিশ্চিত করতে পারেনি। এজন্য প্রধান উপদেষ্টা ঘোষিত টাইমলাইন অনুযায়ী অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে হলে জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। এলক্ষ্যে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন যে জুলাই জাতীয় সনদ প্রণয়ন করতে যাচ্ছে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে তার আইনি ভিত্তি দিতে হবে। অতীতে বিভিন্ন অভ্যুত্থান ও আন্দোলন হয়েছে, পরবর্তী সময়ে তার আইনি ভিত্তি দেওয়ার দৃষ্টান্ত রয়েছে। যেমন ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের পর লিগাল ফ্রেম ওয়ার্কের ভিত্তিতে ৭০-এর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সে নির্বাচনে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের নিয়ে গঠিত গণপরিষদে ১৯৭২ সালের সংবিধান অনুমোদন হয়েছিল।

এখনই কেন নির্বাচন—প্রশ্ন চরমোনাই পীরের

নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য ঘিরে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। গতকাল বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, আমাদের নির্বাচনে যাওয়া কঠিন হবে। কারণ বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রশাসন যথাযথ ফাংশন করছে না এবং বর্তমান সরকার প্রশাসনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। এখনো ভোটের জন্য যেখানে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হয়নি, সেখানে এ অবস্থায় নির্বাচন করতে গেলে প্রার্থীদের নিরাপত্তার ঝুঁকি থেকে যায়, এই ঝুঁকিতে কেন নির্বাচনে যাব, সে প্রশ্ন আপনাদের কাছে রাখলাম। সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচন না হলে, ইসলামী আন্দোলন নির্বাচন অংশগ্রহণ করবে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে মুফতি সৈয়দ রেজাউল করীম বলেন, পিআর আমাদের দাবি। এর মাধ্যমে কালো টাকার দৌরাত্ম্য কমবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের সম্ভাবনা তৈরি হবে। কিন্তু বিএনপি এককভাবে ক্ষমতায় যেতে চায় বলে পিআর নিয়ে শিষ্টাচারবহির্ভূত কথাবার্তা বলে। ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের আগে জামায়াতে ইসলামীসহ সমমনা দলগুলোর সঙ্গে দৃশ্যমান কোনো ঐক্য হবে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে ইসলামী আন্দোলনের আমির বলেন, যারা ইসলামপ্রেমী বা দেশপ্রেমী তাদের সঙ্গে নির্বাচনী জোট বা সমঝোতা হওয়ার খুবই সম্ভাবনা রয়েছে।

নির্বাচনের আগে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড চায় এনসিপি

এনসিপির সদস্য সচিব আখতার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশে ভাষণে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের সময়ের কথা উল্লেখ করেছেন। আমাদের তাতে আপত্তির কোনো জায়গা নেই। কিন্তু নির্বাচন আয়োজনের আগে সরকারের অবশ্যপালনীয় কিছু কর্তব্যের জায়গা রয়েছে। গণহত্যাকারীদের বিচার ও রাষ্ট্রকাঠামোর গুণগত পরিবর্তনের জন্য সংস্কার নিয়ে এ সরকারের যাত্রা শুরু হয়েছে। তাই নির্বাচনের আগে সংস্কারকে দৃশ্যমান করা ও সংস্কার বাস্তবায়ন করা এ সরকারের অবশ্যকর্তব্য। একই সঙ্গে নির্বাচনের আগেই মাঠ প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত ও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। তিনি বলেন, আমরা সরকারের কাছে প্রতিশ্রুতি চাই যে, নির্বাচনের আগেই সংস্কার ও বিচার দৃশ্যমান করা হবে, প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা হবে, নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা হবে।

অন্যান্য দলের প্রতিক্রিয়া

বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান ও ১২ দলীয় জোটের সমন্বয়ক সৈয়দ এহসানুল হুদা গতকাল কালবেলাকে বলেন, আমরা অনেক ত্যাগের বিনিময়ে একটি কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথে রয়েছি। আজকে শেখ হাসিনাবিরোধী যে ঐক্য ছিল, তাতে ফাটল ধরানোর চক্রান্ত চলছে। আমরা বিভক্ত হলে ফ্যাসিবাদ আবারও ফিরে আসবে। ফলে আমাদের ঐক্য ধরে রাখতে হবে। যে কোনো মূল্যে আওয়ামী লীগকে রুখে দিতে হবে। আমরা ফ্যাসিবাদ ও দখলদারমুক্ত সুশাসনের বাংলাদেশ চাই। তিনি বলেন, দেশের মানুষ কিন্তু একটি ভোট দেওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। আমার নির্বাচনী এলাকা কিশোরগঞ্জ-৫ আসনের গণসংযোগ করতে গেলে মানুষ জানতে চায় নির্বাচন কবে। সুতরাং নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে আমরা গণতন্ত্রে উত্তরণের পথ পেয়েছি। নির্বাচনের ট্রেন লাইনে উঠে গেছে।

বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম যিনি লক্ষ্মীপুর-১ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী, তিনি কালবেলাকে বলেন, ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন হচ্ছে। বহুআকাঙ্ক্ষিত নির্বাচন। বলতে পারেন নির্বাচনের ট্রেন চলা শুরু হয়ে গেছে। তিনি বলেন, মাসের পনেরো দিনই এলাকায় থাকি। এখন আরও বেশি থাকব, পুরো সময়টাই নির্বাচনের মাঠ গোছানোর কাজে সময়টা ব্যয় করব।

আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, রমজানের আগে ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচনের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে এবি পার্টি। একই সঙ্গে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরির পাশাপাশি দৃশ্যমান বিচার ও জুলাই সনদের ভিত্তিতে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে দলটি। বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান ভূঁইয়া মিল্টন কালবেলাকে বলেন, প্রধান উপদেষ্টা তার ভাষণে নির্বাচন নিয়ে যেসব কথা বলেছেন তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমার এলাকার চট্টগ্রাম-৩ (সন্দ্বীপ) মানুষ সবসময় জানতে চায় ভোট কবে? আমরা এখন প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের বাস্তবায়ন দেখার অপেক্ষায়।

প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণা বাস্তবায়নই চ্যালেঞ্জ: বিশ্লেষক

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. মো. সাহাবুল হক গতকাল বুধবার কালবেলাকে বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসের ভাষণে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য সময়সীমা ঘোষণা একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক অঙ্গনে যে অনিশ্চয়তা ও জল্পনা-কল্পনা চলছিল, তা এই ভাষণের মাধ্যমে অনেকটাই দূর হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে, রোজার আগেই নির্বাচন হবে—এটি একটি সময়োপযোগী ও গ্রহণযোগ্য সিদ্ধান্ত হিসেবে প্রতীয়মান হচ্ছে। ভাষণে নির্বাচন কমিশনের প্রতি দায়িত্ব অর্পণের কথাও ছিল, যা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে কেন্দ্রীয় ভূমিকা দেওয়ার ইঙ্গিত বহন করে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এ ঘোষণাকে স্বস্তির চোখে দেখছে এবং ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দিচ্ছে বলে বোঝা যাচ্ছে। এখন মূল প্রশ্ন হলো—সরকার ও নির্বাচন কমিশন কীভাবে একটি অংশগ্রহণমূলক, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করবে। জনগণের আস্থা অর্জন এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য এই ঘোষণার বাস্তবায়নই হবে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এই মুহূর্তে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ ও আস্থা গড়ে তোলা জরুরি, যাতে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব হয়। তা না হলে পতিত স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদ আবারও মাথাচাড়া দেবে।