Image description

লক্ষ্মীপুরে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা একই পরিবারের সাতজন নিহতের ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। গাড়িটা যখন খালে ডুবছিল তখন চালককে লকগুলো খুলতে বলা হলেও তিনি তা করেননি। বরং নিজেই জানালার কাঁচ নামিয়ে নিজে বের হয়ে পালিয়ে যান। এমনটাই জানালেন বেঁচে ফেরা যাত্রী ওমান প্রবাসী বাহার উদ্দিন।

নিহতরা সবাই লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার উত্তর জয়পুর ইউনিয়নের চৌপল্লী এলাকার কাশারি বাড়ির বাসিন্দা।  

সূত্র জানায়, আড়াই বছর পর ওমান থেকে দেশে আসেন প্রবাসী বাহার উদ্দিন। তাকে আনতে পরিবারে ১১ সদস্য মাইক্রোবাসযোগে রাজধানীতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যান। সেখান থেকে ফেরার পথে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাইক্রোবাস খালে পড়ে পরিবারটির সাত সদস্য প্রাণ হারান।

এ ঘটনায় আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীরা শোকে কাতর হয়ে পড়েছেন। স্বজনদের অনেককেই কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা গেছে। 

বেঁচে ফেরা প্রবাসী বাহার উদ্দিন এবং তার বাবা আব্দুর রহিম জানান, ঘুম চোখে নিয়ে মাইক্রোবাস চালাচ্ছিলেন চালক রাসেল। বার বার বলার পরও গাড়ি থামিয়ে সামান্যও বিশ্রাম নেননি তিনি।

এর আগে কুমিল্লাতেও একবার  দুর্ঘটনার কবল থেকে বেঁচে যান তারা। কিন্তু বাড়ি থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার আগেই ঘুমন্ত চালক গাড়িটি সড়কের পাশে খালে ফেলে দেন। 

তারা বলেন, ‘গাড়ি তাৎক্ষণিক ডোবেনি, ধীরে ধীরে ডুবছিল। তখন চালককে গাড়ির লক খুলতে বললেও খুলে দেয়নি। তবে সে নিজে গাড়ির কাঁচ নামিয়ে বের হয়ে পালিয়ে যায়।

কাউকে বাঁচানোর চেষ্টাও করেনি।’ 

একপর্যায়ে গাড়ি থেকে প্রবাসী বাহার, তার বাবা আব্দুর রহিম, শ্বশুর ইস্কান্দার মীর্জা, ভাবী সুইটি ও শ্যালক রিয়াজ বের হয়ে আসেন। তবে বাঁচতে পারেননি বাহারের স্ত্রী কবিতা আক্তার (২৪), মেয়ে মীম আক্তার (২), মা মুরশিদা বেগম (৫০), নানী ফয়জুন নেছা (৭০), ভাতিজি রেশমা আক্তার (৯), লামিয়া আক্তার (৮) ও বড় ভাইয়ের স্ত্রী লাবনী আক্তার (২৫)। 

বুধবার (৬ আগস্ট) ভোরে নোয়াখালী বেগমগঞ্জ উপজেলার আলাইয়াপুর ইউনিয়নের পূর্ব বাজার এলাকায় লক্ষ্মীপুর-ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে খালে পড়ে দুর্ঘটনাটি ঘটে। এর আগে মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) রাতে বাহারকে আনার জন্য মাইক্রোবাসযোগে পরিবারের সদস্যরা বিমানবন্দরে যান। 

চন্দ্রগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোবারক হোসেন ভূঁইয়া বলেন, চালক ঘুমিয়ে পড়ায় গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খালে পড়ে যায়। কয়েকজন বের হতে পারলেও সাতজন ভেতরে আটকা পড়ে মারা যান। তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহগুলো বাড়িত নিয়ে গেছে স্বজনরা।