
‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার, কে বলেছে কে বলেছে, স্বৈরাচার স্বৈরাচার,’ স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস। সোমবার রাতে রাজাকার রাজাকার স্লোগানের বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঠিক এক বছর আগে এ রাতে কি ঘটেছিল তার এক লমহর্ষক বর্ণনা তুলে ধরেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।
সোমবার মধ্যরাতে উপদেষ্টা তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে লেখেন, ‘১৪ ই জুলাই রাতে স্বপ্ন বিল্ডিং এ মিটিং শেষে বাসায় ফেরার কিছুক্ষণ পর নাহিদ কল দিয়ে বলল- ভাই, হল থেকে ছেলে-মেয়েরা নেমে গেছে। ক্যাম্পাসে আসেন। ক্যাম্পাসে গেলাম। রাজুতে মিছিল হচ্ছে, মেয়েরা আসছে। বিভিন্ন হল থেকে। রাজুতে দাঁড়িয়ে যতটুকু পারা যায় রাজাকার শ্লোগানকে হাসিনা ও স্বৈরাচারবিরোধী শ্লোগানে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টাই করা হয়েছে। রাজু থেকে মিছিল নিয়ে ভিসির দিকে গেলাম। রাতে স্টে করার প্ল্যান ছিল। হল না। অনেকেই সরাসরি কনফ্রন্টেশনে আগ্রহী ছিল না। রাত দুইটায় আমরা ক্যাম্পাস ছাড়লাম।’
তিনি লেখেন, ‘ছাত্রলীগ প্রোগ্রাম দিল দুপুর ২ টায়। আসিফ আর বাকের সবসময় ডুয়ার। তারা রাত চারটা পর্যন্ত জেগে ছিল পরেরদিনের প্রোগ্রামের জন্য। রাত্রে চারটায় আমি ১২ টায় প্রোগ্রাম রাখতে বললাম। ( যারা আন্দোলনে বিএনপি জামাতের ষড়যন্ত্র দেখছিল তারা এ প্রোগ্রামে নাখোশ ছিল)। রাজুতে প্রোগ্রাম শুরু হল দুপুরে। বাসা থেকে রিকশা করে ক্যাম্পাসে ঢোকার সময় দেখলাম বাসে করে টোকাই আনছে ছাত্রলীগ। মনে হচ্ছিল আজকেই ছাত্রলীগের দফারফার শুরু।’
তিনি আরো লেখেন, ‘বাকেরসহ অন্যরা বিজয় '৭১ এ আটকে পড়েছে শুনে মিছিল গেল হলপাড়ায়। সূর্যসেন এবং হলপাড়ায় বারবার সংঘর্ষ হল। একবার প্ল্যান ছিল মারামারি করতে করতে মহসিন হলের দিকটা ক্লিয়ার করে বের হওয়া। কিন্তু, একজন মেয়ে সমন্বয়ক বোকামি করে এফবিএসের সামনে দিয়ে মিছিল নেয়ার জন্য মাইক কেড়ে নিল। গত ৫ বছরের সব মিছিলের মতই আমরা মিছিলের সামনে থেকে কমুনিকেট করতাম। আমরা মানা করলাম এফবিএসের রাস্তা না নিতে। কিন্তু, মিছিল পিজি হার্টগের মোড় ঘোরার আগেই মধুর ক্যান্টিনের দিক থেকে হেলমেটধারীরা হামলা করল। মেয়েরা আহত হল। সবাই ছত্রভঙ্গ হয়ে গেল।’
উপদেষ্টা লেখেন, ‘মল চত্বর দিয়ে সবাই বের হয়ে ভিসি চত্বরে জড়ো হওয়ার চেষ্টা করলাম। পারলাম না। পরাজিত অপমানিত মনে হল ফুলার রোড দিয়ে বের হতে হতে। সলিমুল্লাহ হলে অনেক ছেলে মেয়ে আটকা শুনে কল দিলাম সাংবাদিক সমিতির সভাপতি সাদী কে। ও সলিমুল্লাহ হলের আটকে পড়াদের বের করে আনল। আমি, বাকের, নাহিদ, আসিফ গেলাম বুয়েটের ক্যান্টিনে। ১৬ ই জুলাই প্রোগ্রাম নিয়ে পরিকল্পনা হল।’