Image description

‘বিদেশে উচ্চশিক্ষার সুযোগ’—এমন প্রতিশ্রুতিতে ২০১৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সময়ে শত শত শিক্ষার্থীর কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্কের কর্ণধার খায়রুল বাশার বাহার এবং তার চক্রের সদস্যরা। ক্যামব্রিয়ান এডুকেশন গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্ক। বিদেশে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন দেখিয়ে শত শত শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতে অভিযুক্ত বাশারকে মানি লন্ডারিং মামলায় গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গতকাল সোমবার দুপুরে সিআইডির ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটের বিশেষ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে একটি টিম রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে তাকে আটক করে।

প্রাথমিক অনুসন্ধানে ভিত্তিতে সিআইডি কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, খায়রুল বাশার দীর্ঘদিন ধরে তার স্ত্রী খন্দকার সেলিমা রওশন ও ছেলে আরশ ইবনে বাশারকে সঙ্গে নিয়ে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারণা চক্র পরিচালনা করছিলেন। চটকদার বিজ্ঞাপন, ভুয়া ভিসা প্রসেসিং, বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুয়া প্রতিনিধিত্বের নাম ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সরাসরি অফিসে এবং বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে টাকা আদায় করে চক্রটি। তদন্তে দেখা যায়, প্রতারিত অনেক শিক্ষার্থীর নামে কোনো আবেদনই বিদেশি প্রতিষ্ঠানে করা হয়নি, আবার অনেকেই বিদেশে গিয়ে প্রতারণার শিকার হয়ে পড়েছেন বিপদের মধ্যে।

সিআইডির এই পুলিশ সুপার জানান, মামলার প্রাথমিক তদন্তকালে এখন পর্যন্ত ৪৪৮ জন ভুক্তভোগীর কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের তথ্য পাওয়া গেছে। তবে প্রতারিতের

প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভুক্তভোগীদের অনেকেই এনআই অ্যাক্টসহ প্রতারণা ও জালিয়াতির মামলায় অভিযোগ করেছেন।

সিআইডির অনুসন্ধানে জানা গেছে, অভিযুক্তরা গ্রাহকদের কাছ থেকে আদায় করা অর্থ নিজেদের নামে ও অন্যদের নামে পরিচালিত বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে উত্তোলন করে তা দিয়ে স্থাবর সম্পদ ক্রয়, ব্যবসা পরিচালনা এবং অবৈধভাবে অর্থ স্থানান্তর ও রূপান্তর করেন। ভুক্তভোগীদের মধ্যে অনেকেই প্রতারণার শিকার হয়ে রাজধানীর গুলশান থানাসহ দেশের অন্যান্য জায়গায় একাধিক মামলা করেছেন।

সিআইডি অভিযুক্তের বিরুদ্ধে প্রতারণা এবং অর্থ আত্মসাতের অপরাধগুলো অনুসন্ধান করে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে গত ৪ মে গুলশান থানায় মামলা হয়েছে। এ মামলার তদন্তে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই খায়রুল বাশারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।