Image description

রংপুরে সিভিল সার্জনকে ‘মবের’ হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা আহ্বায়ক ইমরান আহমেদের বিরুদ্ধে। রোববার জেলা প্রশাসনের আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় এই হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সিভিল সার্জন। 

তবে ইমরান আহমেদ বলেন, ‘তারাগঞ্জের একটা ইস্যু ছিল। এটা নিয়ে আমি আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়ে তুলেছি। আমাদের ছেলেদের ওপর একধরনের অন্যায় হয়েছে। এটা যেন সমাধান করে দেন, এভাবে বলছিলাম ওখানে। আমি বলছি, যদি আমাদের ওপর অন্যায় হয়, তাহলে মবেই ভালো ছিল।’ 

গত ১১ এপ্রিল তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে রাধারানী মহিলা ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক আতাউর রহমান বুকে ব্যথা নিয়ে চিকিৎসা নিতে আসেন। এ সময় চিকিৎসক সাবরিনা মুসরাত জাহান তাকে চিকিৎসাসেবা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। এ সময় আতাউর রহমানের ছেলে তাহমিদ সরকার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তারাগঞ্জের সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে আরও চার থেকে পাঁচজনসহ চিকিৎসক সাবরিনাকে গালাগাল ও শরীরে আঘাত করেন বলে অভিযোগ। এ ঘটনায় তাহমিদসহ অজ্ঞাতনামা চার থেকে পাঁচজনের বিরুদ্ধে তারাগঞ্জ থানায় মামলা করেছেন ওই চিকিৎসক। 

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, রোববার সকালে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সালের সভাপতিত্বে জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক বৈঠক হয়। জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে বেলা ১১টার দিকে শুরু হওয়া এই সভা চলে বেলা দেড়টা পর্যন্ত। সভায় বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতা ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। 

বেলা ১টার দিকে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সালের বক্তব্যের আগে জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক ইমরান আহমেদ তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা সাবরিনা মুসরাত জাহানের করা একটি মামলার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। 

আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় উপস্থিত এক সদস্য বলেন, ‘ইমরান আহমেদ সিভিল সার্জনের মাধ্যমে তারাগঞ্জের মামলাটি তুলে দেওয়ার কথা বলছিলেন। এ সময় সিভিল সার্জন শাহিন সুলতানার মন্তব্য জানতে চান জেলা প্রশাসক। সিভিল সার্জন তখন বলেন, “কেস (মামলা) বিচারাধীন। বিচারে যা হবে, তা–ই।” তখন ইমরান রেগে গিয়ে বলেন, “সিভিল সার্জন চাইলে কেস উঠতে পারে। মামলা তুলে না নিলে আমরা প্রকাশ্যে মব করব।”’

বিষয়টি নিশ্চিত করে সিভিল সার্জন শাহিন সুলতানা বলেন, মবের হুমকি দেওয়ায় তিনি ও তারাগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক, নার্স ও কর্মকর্তা–কর্মচারীরা শঙ্কিত।

তবে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল বলেন, ‘কেউ কাউকে কোনো হুমকি দেননি। কথা–কাটাকাটি হয়নি। এসব গুজব কেন ছড়াচ্ছে, আমি জানি না।’