
কুমিল্লার মুরাদনগরে নারীকে ‘ধর্ষণ’ ও নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার নেপথ্যে মূলহোতা শাহ পরান ও তার ভাই ফজর আলীর বিরোধের তথ্য পেয়েছে র্যাব। ফজর আলীর ওপর প্রতিশোধ নিতে পুরো ঘটনা সাজিয়েছিল শাহ পরান। ভিডিও ছড়ানো ও মব সৃষ্টির পরিকল্পনাকারী মো. শাহ পরানকে (২৮) গ্রেপ্তারের পর এমনটি জানিয়েছে র্যাব-১১। র্যাব জানিয়েছে, গ্রেপ্তার শাহ পরান ও অভিযুক্ত ফজর আলী আপন দুই ভাই। দুই মাস আগে গ্রাম্য সালিশে জনসম্মুখে বড় ভাই ফজর আলী তার ছোট ভাই শাহ পরানকে চর-থাপ্পড় মারে। এ ঘটনায় শাহ পরান তার বড় ভাইয়ের ওপর প্রতিশোধ নেয়ার জন্য সুযোগের সন্ধানে থাকে। প্রতিশোধ নিতেই শাহ পরান তার দলবল নিয়ে ফজর আলী ও ভুক্তভোগী নারীকে মারধরের পর ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়।
র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন গতকাল ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, কুমিল্লার বুড়িচং থানাধীন কাবিলা বাজার এলাকা থেকে শাহ পরানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগে বাহেরচর গ্রামের শহীদের বড় ছেলে ফজর আলী ও ছোট ছেলে শাহ পরান দীর্ঘদিন ধরে ভুক্তভোগী নারীকে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। দুই মাস আগে দুই ভাইয়ের মধ্যে বিরোধের জেরে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গ্রাম্য সালিশে জনসম্মুখে বড় ভাই ফজর আলী তার ছোট ভাই শাহ পরানকে চর-থাপ্পড় মারে। তৎপরবর্তী সময় শাহ পরান তার বড় ভাইয়ের ওপর প্রতিশোধ নেয়ার জন্য সুযোগের সন্ধানে থাকে। সালিশের কিছুদিন পর ভুক্তভোগী নারীর মা ফজর আলীর কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা সুদের বিনিময়ে লোন নেয়। ঘটনার দিন ভুক্তভোগী নারীর বাবা-মা বাড়িতে না থাকার সুযোগে ফজর আলী সুদের টাকা আদায়ের অজুহাতে রাত সাড়ে ১১টার দিকে কৌশলে ওই নারীর শয়নকক্ষে প্রবেশ করে। একই সময় পূর্বপরিকল্পিতভাবে ভুক্তভোগী নারীর বাড়ির আশপাশে অবস্থান করা শাহ পরান ও ফজর আলীর পূর্বশত্রু একই গ্রামের আবুল কালামসহ অনিক, আরিফ, সুমন, রমজানসহ ৮ থেকে ১০ জন দরজা ভেঙে প্রবেশ করেই ভুক্তভোগীকে শারীরিক নির্যাতন, শ্লীলতাহানি ও অশ্লীল ভিডিওচিত্র ধারণ করে এবং পরে ওই ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। ঘটনার পর মূলহোতা শাহ পরানসহ আবুল কালাম ও অন্য আসামিরা আত্মগোপন করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শাহ পরান স্বীকার করেছে, পূর্ব শত্রুতার কারণে তার ভাই ফজর আলীর ওপর প্রতিশোধ নেয়ার জন্য পরিকল্পিতভাবে তার নির্দেশনা মোতাবেক অন্যদের সহায়তায় ভুক্তভোগী নারী ও ফজর আলীকে নির্যাতন, শ্লীলতাহানি ও অশ্লীল ভিডিওচিত্র ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার ঘটনা ঘটায়।