
উত্তরের বিভিন্ন সীমান্তপথ দিয়ে আসছে মাদক। হালে সবচেয়ে বেশি আসছে হোরোইন। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বলছে, এখন যেসব সীমান্ত হেরোইন চোরাচালানে ব্যবহার হচ্ছে, তার মধ্যে রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও কুষ্টিয়া অন্যতম। তবে শিগগিরই সেই রুট বদলে যেতে পারে।
এ ছাড়া বিভাগের কারাগারগুলোতে মোট বন্দির একটা বড় অংশও মাদক মামলার আসামি। কারা সূত্র বলছে, মোট বন্দির ২৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ মাদক মামলার আসামি। রাজশাহী মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, রাজশাহীর গোদাগাড়ী, চাঁপাইনবাবগঞ্জের চরবাগডাঙা এবং কুষ্টিয়ার সীমান্তপথ ব্যবহার করে দেশে আসছে হেরোইন। ২০২৩ সালে দেশে মোট মাদকের মামলা হয়েছে ২ হাজার ৫৯৮টি। হেরোইন উদ্ধার হয়েছে ৭০০ কেজি। এর মধ্যে রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় মামলা হয়েছে ১ হাজার ৪২৭টি। ২০২৪ সালে ১ হাজার ৫৭২টি মামলার মধ্যে ৭৭২টি হয়েছে রাজশাহী বিভাগে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক জিললুর রহমান জানান, দেশের তিনটি সীমান্ত এলাকা এখন হেরোইন চোরাচালানের রুট হিসাবে ব্যবহার করছে মাদক কারবারিরা। তবে শিগগিরই সেই রুট বদলে যেতে পারে বলে জানান এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, আগে আফগানিস্তানে হেরোইনের কাঁচামাল উৎপাদন হতো। এখন মিয়ানমার কাঁচামাল বেশি উৎপাদন করছে। সেই কাঁচামাল দেশের বিভিন্ন পথ দিয়ে ভারতে যাচ্ছে। ভারতে বাংলাদেশ সীমান্তের কাছাকাছি কিছু কারখানা গড়ে উঠেছে। সেখান থেকে হেরোইন তৈরি হয়ে আবার দেশে চলে আসছে। সম্প্রতি তারা এমন গোয়েন্দা তথ্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।
শুধু হেরোইন উদ্ধার আর মামলা নয়, রাজশাহীর কারাগারগুলোতে যে পরিমাণ বন্দি আছেন, তার একটা বড় অংশ মাদক মামলার আসামি। কারা সূত্র জানায়, রাজশাহী অঞ্চলের ৮টি কারাগারে মোট বন্দি আছেন ৮ হাজার ৯৬৬ জন। এর মধ্যে মাদক মামলায় বন্দি ২ হাজার ৫৬২ জন। এর মধ্যে রাজশাহী কারাগারে ৪৩৬ জন, বগুড়ায় ৩৬০, সিরাজগঞ্জে ৪১১, নওগাঁয় ৩১৩, পাবনায় ৪০৭, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ২৬২, নাটোরে ১৯৯ ও জয়পুরহাটে ১৭৪ জন বন্দি আছেন। গড় বন্দির হারে মাদক মামলায় সবচেয়ে বেশি ৪৬.৩৭ শতাংশ বন্দি আছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ কারাগারে।
রাজশাহীর ডিআইজি প্রিজন কামাল হোসেন জানান, বন্দিদের একটা বড় অংশ মাদক মামলার আসামি। বিভাগের ৮ কারাগারে যে পরিমাণ বন্দি আছেন, তার ২৮.৫৭ শতাংশ বন্দি মাদক মামলার আসামি। একজনের নামে একাধিক মাদক চোরাচালানের মামলাও আছে।