
আলটিমেটাম না দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে সহনশীল আচরণ করার আহ্বান জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক। আজ শুক্রবার (২৩ মে) নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিলসহ চার দাবিতে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর মতো বৃহৎ রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।
রাজনৈতিক সংকট সমাধানের জন্য বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আলটিমেটাম বা টাইমফ্রেম নির্ধারণ না করে সহনশীল অবস্থানে আসুন, প্রত্যেকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করুন।’
ছাত্রনেতাদের রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে অপ্রয়োজনীয় বাগ্বিতণ্ডায় জড়ানো উচিত নয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তোমাদের ত্যাগ, জুলাই-আগস্টের বিপ্লবে ঐতিহাসিক নেতৃত্ব এ দেশের মানুষ হাজার বছর স্মরণ রাখবে। কাজেই তোমরা দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করো।’
মামুনুল হক বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষমতার দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও এখনো দেশের কাঙ্ক্ষিত সংস্কার বাস্তবায়নের কোনো রূপরেখা দেখা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানকে বলতে চাই, অনতিবিলম্বে সংবিধান, রাজনৈতিক ব্যবস্থা এবং নির্বাচন ব্যবস্থাসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিটি সংস্কারের রোডম্যাপ ঘোষণা করুন। রোডম্যাপ অনুযায়ী একটি উপযুক্ত সময়ে নির্বাচনের পরিকল্পনা দিন। আর সেই নির্বাচন বাস্তবায়নের আগে বিদায়ী ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।’
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনি জাতির অভিভাবকের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। আমাদের সেনাপ্রধান বাংলাদেশের অন্যতম স্তম্ভ। যার যার জায়গা থেকে সবাই দায়িত্ব পালন করুন। ব্যক্তিগত মান-অভিমান ১৮ কোটি মানুষের স্বপ্নকে ধ্বংস করতে পারে না। শহীদের রক্ত এখনো রাজপথে শুকায়নি, এখন ক্ষমতা নিয়ে হানাহানিতে লিপ্ত হওয়া সমীচীন নয়।’
নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কার প্রসঙ্গে মামুনুল বলেন, ‘দুর্বৃত্তায়নের এই ব্যবস্থায় মানুষ বিশ্বাস করে না। এই ব্যবস্থায় কিছু দুর্বৃত্ত সংসদে যেতে পারে, কিন্তু ভালো মানুষেরা যেতে পারে না। মব তৈরি করে দাবি আদায়ের কালচার চলতে থাকলে দেশ ধ্বংসের মুখে পড়বে।’
বিগত সরকার ও তাদের পৃষ্ঠপোষকদের উদ্দেশ্য করে মামুনুল বলেন, ‘আমরা দ্বন্দ্ব-সংঘাত উসকে দিয়ে তাদের রক্ষা করছি। বাংলাদেশকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। কাজেই আসুন, আমরা ঐক্যবদ্ধ হই, ষড়যন্ত্র প্রতিহত করি।’
নারীর উত্তরাধিকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রতিটি ঘরে নারীর ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে সামাজিক, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক আন্দোলন গড়ে তুলব। রাষ্ট্র যদি ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়, হেফাজত সেই দায়িত্ব পালন করবে।’ সমাবেশ শেষে একটি মিছিল পল্টন হয়ে বিজয়নগর পানির ট্যাংক এলাকায় গিয়ে শেষ হয়।