Image description

পরিবারের হাল ধরতে ঢাকায় চাকরি নিয়েছিলেন ইসমামুল হক। তার আয় দিয়ে ভালোই চলছিল সবকিছু। কিছু টাকা জমিয়ে চিন্তা করেছিলেন বিদেশে যাবেন। কিন্তু তার সেই পরিকল্পনা আলোর মুখ দেখল না। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের গুলি ওলটপালট করে দিল সব। এখন তাকে হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন পরিবারের সদস্যরা।

জানা যায়, ইসমামের বাড়ি চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার দর্জিপাড়ায়। ১০ বছর বয়সে তার বাবা নূরুল হক মারা যান । এরপর অভাব ঘিরে ধরে পরিবারটিকে। সুদিন ফেরাতে ২০২৩ সালে চাকরি নেন ঢাকায় একটি জুয়েলারি দোকানে। এর মধ্যে শুরু হয় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন। গত বছরের ৫ আগস্ট তিনি যোগ দেন এক দফার আন্দোলনে। সেদিন ঢাকার চকবাজার থেকে ছাত্র-জনতার সঙ্গে শাহবাগের দিকে এগোতে থাকলে চাঁনখারপুল এলাকায় পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হন তিনি। গুলি পেট দিয়ে ঢুকে পিঠ দিয়ে বের হয়ে যায়। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে, সেখান থেকে চিকিৎসা না দিয়ে ফিরিয়ে দেওয়া হয় তাকে। এরপর তার মৃত্যু হয়।

সন্তানের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কেঁদে কেঁদে ইসমামের মা শাহেদা বেগম বলেন, ‘কত স্বপ্ন দেখত ছেলেটা। সব স্বপ্নই রয়ে গেল। আমার মনি আমাকে বলত, আমি বিদেশ যাব। অনেক টাকা আয় করব। তুমি পাকা বাড়ি করতে পারবে, মা। আমার কষ্ট কমাতে আমার ছেলে ঢাকায় চাকরি নিয়েছিল। টাকা জমিয়ে বিদেশ যাবে। অথচ, আমার ছেলে ফিরেছে লাশ হয়ে। আমার সব স্বপ্ন ধ্বংস হয়ে গেছে। জীবনে আর কিছুই বাকি নেই।’

শাহেদা বেগম জানান, তার বড় ছেলে মুহিবুল আমিরাবাদে একটি গ্যাসের দোকানে পাঁচ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করে। এখন তার পক্ষে পরিবারের খরচ চালানো খুবই কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন পর্যন্ত সরকারি কোনো আর্থিক সহযোগিতা পায়নি পরিবার। সরকারের পক্ষ থেকে ১০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র দেওয়া হয়েছে। যা পাঁচ বছর পূর্ণ হলে পাওয়া যাবে।