Image description

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সংকট কাটাতে চায় অন্তর্বর্তী সরকার। ৬৫ হাজার ৫৬৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩৭ হাজার ৮২৬টি শিক্ষক পদ শূন্য। এরমধ্যে প্রধান শিক্ষকের পদই শূন্য প্রায় ৩২ হাজার। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী কমার পেছনেও এই শিক্ষক সংকট দায়ী বলে মনে করা হচ্ছে। ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে শিক্ষার্থী প্রায় ৮ লাখ কমেছে। শিক্ষক সংকট দূর করতে শূন্য পদের চাহিদা সাপেক্ষে প্রায় ৫০ হাজার শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এটি হতে পারে চলতি বছরের আগস্টেই।

এবারই প্রথম নারী কোটা ছাড়া বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই)। বাতিল হওয়ার পথে পোষ্য কোটাও। পূর্বের বিধিমালা অনুযায়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৬০ শতাংশ নারী কোটা, ২০ শতাংশ পোষ্য কোটা এবং ২০ শতাংশ পুরুষ কোটা রয়েছে। নতুন প্রস্তাবিত বিধিমালায় এ তিন কোটার একটি কোটাও থাকবে না। তবে ২০ শতাংশ পদে বিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে। উচ্চ আদালতের রায় মেনে কোটা থাকবে ৭ শতাংশ। এরমধ্যে থাকবে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী ও প্রতিবন্ধী কোটা।

তথ্য মতে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩২ হাজার প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য। সহকারী শিক্ষকদের পদোন্নতির মাধ্যমে এ পদগুলো পূরণ করা হবে। বর্তমানে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ৮ হাজার ৪৩টি পদ ফাঁকা রয়েছে। অবসরজনিত কারণে এই পদ এখন প্রায় ১২ হাজার। এ ছাড়া সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের জন্য ৫ হাজার ১৬৬ সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে। ফলে সবমিলিয়ে প্রায় ৫০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হতে পারে। নিয়োগের বিষয়টি নিয়ে সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। নারী ও পোষ্য কোটা বাতিলে অর্থ মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয় এবং সরকারি কর্ম কমিশনের মতামত নেবে ডিপিই। এদিকে ডিপিই মঙ্গলবার এক নির্দেশনায় স্কুলগুলোর শূন্যপদের তথ্য চেয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করে।

সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেন, দেশের প্রায় ৩২ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে, যা প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থাকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করছে। 

তিনি আরও বলেন, প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে আগের কোটা ব্যবস্থা থাকছে না। উচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী কোটাব্যবস্থা চালু থাকবে। এ ছাড়া সহকারী শিক্ষকদের মধ্যে থেকে প্রধান শিক্ষক পদে যোগ্য প্রার্থী পাওয়া সাপেক্ষে শতভাগ পদোন্নতির ব্যবস্থা করার প্রস্তাব করা হয়েছে নিয়োগবিধিতে।

এদিকে প্রাথমিক শিক্ষার মান পরিবীক্ষণ, মূল্যায়ন ও প্রাতিষ্ঠানিক জবাবদিহি নিশ্চিত করতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে আরও একটি নতুন অধিদপ্তর হচ্ছে। বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ইউনিটকে রূপান্তর করে হচ্ছে নতুন এই অধিদপ্তর। এর নাম প্রস্তাব করা হয়েছে ‘প্রাথমিক শিক্ষা পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন অধিদপ্তর’। এই অধিদপ্তরের কাজ হবে প্রাথমিক শিক্ষার মান পরিবীক্ষণ, মূল্যায়ন ও গবেষণা এবং সুপারিশ প্রণয়ন।