Image description

গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদ এবং ফিলিস্তিনের মানুষের প্রতি সংহতি জানিয়ে বের হওয়া বিক্ষোভ মিছিল থেকে দেশের কয়েকটি জেলায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলার ঘটনা ঘটেছে। ইসরাইলি পণ্য রাখা বা ইসরাইলকে সমর্থন দেয়ার অভিযোগে এসব প্রতিষ্ঠানে হামলা চালানো হয়। চেইন খাবারের দোকান কেএফসি, পিৎজা হাট ও বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান বাটা’র শোরুমে হামলা হয়েছে বিভিন্ন স্থানে। কোমল পানীয় কোকা-কোলা, সেভেন আপ রাখায় দেশীয় প্রতিষ্ঠানও হামলার শিকার হয়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। গাজায় নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি বাহিনীর বর্বর হামলার প্রতিবাদে সোমবার বিশ্বব্যাপী ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচি বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে বাংলাদেশের জেলায় জেলায় শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ ও ধর্মঘট পালন করেন।

সকাল থেকে সারা দেশের জেলা-উপজেলা শহর ছিল প্রতিবাদমুখর। সাধারণ শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ যার যার অবস্থান থেকে পথে নেমে এসে ফিলিস্তিনের নিপীড়িত মানুষের প্রতি সংহতি জানিয়েছেন। 

বিক্ষোভ মিছিল থেকে কোমল পানীয় কোকা-কোলা বিক্রির কারণে সিলেট নগরীতে ফাস্ট ফুড চেইন কেএফসিতে ভাঙচুর চালানো হয়। পাশাপাশি থাকা বাটাতেও হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়। দোকানের পণ্য লুটপাট করতেও দেখা যায়। 

সোমবার বিকাল ৩টার দিকে নগরীর মিরবক্সটুলার কেএফসি এবং দরগা গেইট এলাকার বাটা’র শো-রুমে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে বলে সিলেট মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি থানার ওসি মো. জিয়াউল হক জানান।

বিক্ষোভ মিছিল থেকে কক্সবাজার পর্যটন জোনের অন্তত পাঁচটি রেস্টুরেন্টে ভাঙচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার বেলা ১২টার দিকে কক্সবাজার পাবলিক লাইব্রেরির শহীদ দৌলত ময়দান থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে হলিডে মোড় হয়ে ঘুরে লাবণী হয়ে কলাতলী যায়। এ সময় ভাঙচুর চালানো হয়।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি মো. ইলিয়াস খান বলেন, পুলিশ মিছিলের আগেপিছে ছিল। মিছিলের দৈর্ঘ্য বেশি হওয়ায় মাঝখান থেকে কিছু অতি উৎসাহী মানুষ ইসরাইলি পণ্য রাখার অভিযোগে কয়েকটি রেস্টুরেন্টে পেপসির সাইনবোর্ড নামিয়ে ফেলেছে। কিছু ঢিল ছোড়ার ঘটনা ঘটেছে। তবে মিছিলে উপস্থিত মুরুব্বিরা তাদেরকে তৎক্ষণাৎ নিয়ন্ত্রণ করেন। কক্সবাজার রেস্তরাঁ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাবেদ ইকবাল বলেন, ইসরাইলি পণ্য রাখার অজুহাতে কেএফসি, পিৎজা হাটের পাশাপাশি কাঁচা লংকা, পানসি রেস্টুরেন্ট এবং মেরিন ফুড রেস্টুরেন্টে ভাঙচুর চালানো হয়। এ সময় কাঁচ লেগে কয়েকজন পর্যটক আহত হয়েছেন।

ফিলিস্তিনের গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে বের হওয়া মিছিল থেকে বগুড়ার বাটা’র শো-রুমে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। রোববার দুপুরের দিকে বিক্ষোভকারীরা শহরের সাতমাথায় এসে বাটা’র শো-রুমে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে এবং গ্লাস ভাঙচুর করে।

প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে তারা সেখানে ইসরাইলি পণ্য বয়কটের দাবিতে স্লোগান  দেয় এবং ভাঙচুর চালায়। সেখানে সাধারণ শিক্ষার্থী ছাড়াও নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ ছিলেন। কিছুটা দূরে পুলিশ দাঁড়িয়ে থাকলেও বিপুল সংখ্যক মানুষের সামনে তাদের কিছুই করার ছিল না।

বিক্ষোভ মিছিল থেকে চট্টগ্রামে কেএফসি’র দুটি রেস্তরাঁর সাইনবোর্ড ভাঙচুর করা হয়েছে। সোমবার বিকালে ‘মার্চ ফর গাজা’ মিছিল থেকে নগরীর নাসিরাবাদ ও চেরাগী পাহাড় মোড়ে এ ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া জিইসি মোড়ে কোমল পানীয় কোকা-কোলার সাইনবোর্ডও ভাঙচুর করা হয়।

গাজীপুরের বোর্ড বাজার এলাকায় বাটা শো-রুমসহ কয়েকটি দোকানের সামনে বিলবোর্ড, ব্যানার, ভাঙচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) নূর মোহাম্মদ নাসিরুদ্দীন বলেন, বিক্ষোভকারীরা বিকালে বাটা শো-রুমের বাইরের ব্যানার ভাঙচুর করেছে। তবে শো-রুমের ভেতরে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার বেলা ৩টার দিকে গাজীপুরের বোর্ড বাজার এলাকা থেকে সর্বস্তরের মুসলিম তৌহিদী জনতার ব্যানারে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। এতে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ অংশ নেন। এ সময় সেখানে বাটা শো-রুমে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।