Image description
 

চারদিকে নারী ও শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ এবং নিপীড়নের মধ্যেই চলছে উৎসবের আয়োজন। সামনে ঈদ, পোশাকে তাই নজর কাড়ছে জমকালো ও স্টাইলিশ উপস্থাপনা। তবে ফ্যাশন শুধু পোশাকের নকশাতেই আটকে থাকে না; তুলে ধরতে পারে সমসাময়িক সমাজের রূপরেখা। ঈদ উপলক্ষে ফ্যাশন হাউস মানাসের আনা পোশাকগুলো সে কথাই মনে করিয়ে দিচ্ছে। 

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন (বাঁ থেকে) অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির, উইশ-বাংলাদেশ ডটকমের খণ্ডকালীন সহায়তাকারী নিতা মান্নাফ, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সিউতি সবুর ও মানাসের কর্ণধার ফায়জা আহমেদছবি: সুমন ইউসুফ

২১ মার্চ সন্ধ্যায় ঘরোয়া আয়োজনে মানাসের নতুন শাখার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন ডিজাইনার ফায়জা আহমেদ। পাশাপাশি তুলে ধরেন ক্রেতাদের জন্য ঈদপোশাকের সংগ্রহ। এই পোশাকগুলোকে ফেস্টুন বলতেই বেশি আগ্রহী ফায়জা। উজ্জ্বল রঙের টপগুলোর ওপর লেখা আছে প্রতিবাদের কথামালা। ‘চোখ নামা’, ‘জবাব দে’, ‘মুক্তি’, ‘শান্তি চাই’–এর মতো শব্দগুলো প্রতিবাদের স্লোগান। এই সংগ্রহের মাধ্যমে ফায়জা নারীর ওপর সহিংসতা ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়েছেন। পোশাকের ওপর সাহসী কথার উপস্থাপন সচেতনতা বৃদ্ধির আরেকটি মাধ্যম হয়ে উঠল। এসব পোশাক পরে কেউ যখন বের হবেন, কোনো একটা পরিবর্তন কোথাও হবে, আশা এমনটাই। এই সংগ্রহটি ন্যায়বিচার, সমতা এবং সুরক্ষার লড়াইয়ে অবদান রাখবে। আর এতেই প্রমাণ হয় যে ফ্যাশনও দিনবদলের শক্তি হতে পারে।

মানাসের পোশাকে তুলে ধরা হয়েছে সমসাময়িক সমাজের রূপরেখা
মানাসের পোশাকে তুলে ধরা হয়েছে সমসাময়িক সমাজের রূপরেখাছবি: সুমন ইউসুফ

অনুষ্ঠানে ফায়জা আহমেদ বলেন, ‘ঈদের আগে আমি কী পোশাক আনছি, তা জানতে মুখিয়ে থাকেন অনেকে। যে সময়টা আমরা যাপন করি, এর বাইরে গিয়ে কিছু তৈরি করতে পারি না। এ সময় চারদিকে চলছে ধর্ষণ, নির্যাতন, নিপীড়ন। কিন্তু এর মধ্যেও আমাদের ঈদের আয়োজন করতে হচ্ছে। নিজের সঙ্গে কোনোভাবেই আপসে যেতে পারিনি। আমি লেখক নই, ডিজাইনার। আমি আমার কথা বলতে চাই ফ্যাশন ও পোশাকের মাধ্যমে। যে বক্তব্য তুলে ধরতে চেয়েছি, সেটা একদম নিজের মতো করেই ফুটিয়ে তুলেছি হ্যান্ডপেইন্টের মাধ্যমে। বক্তব্যগুলোর সঙ্গে যাঁরা সমমনা আছেন, তাঁরাই হয়তো পছন্দ করবেন।’

এই পোশাকগুলোকে ফেস্টুন বলতেই বেশি আগ্রহী ফায়জা
এই পোশাকগুলোকে ফেস্টুন বলতেই বেশি আগ্রহী ফায়জাছবি: সুমন ইউসুফ

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সিউতি সবুর ও উইশ-বাংলাদেশ ডটকমের খণ্ডকালীন সহায়তাকারী নিতা মান্নাফ। উদ্যোগটির প্রশংসা করেন তাঁরা। বক্তব্যের মাধ্যমে তুলে ধরেন, কোনোভাবেই সহিংসতাকে সমর্থন করা যাবে না। নারীদের এখন হেনস্তা করা হচ্ছে নানাভাবে। ছেলেশিশুদের কীভাবে বড় করছেন, সেটাও দেখার বিষয়। সমাজের সব জায়গায়ই যে অবক্ষয় হচ্ছে, সেটা রোধ করতে অনেক বেশি কাজ করতে হবে।

হ্যান্ডপেইন্টের মাধ্যমে পোশাকে তুলে ধরা হয় প্রতিবাদের ভাষা
হ্যান্ডপেইন্টের মাধ্যমে পোশাকে তুলে ধরা হয় প্রতিবাদের ভাষাছবি: সুমন ইউসুফ

মূল অনুষ্ঠান শুরুর আগে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয় ধর্ষণের শিকার হয়ে মৃত্যুবরণকারী শিশু আছিয়ার জন্য। বেশ কয়েকটি দেশীয় ব্র্যান্ডকে এক ছাদের নিচে নিয়ে এসেছে ‘৮পৌরে’ (আটপৌরে)। বিকিকিনির এই নতুন কেন্দ্রটি গুলশান ১-এর ১২৮ সড়কের ১৯ নম্বর বাড়িতে।

৮পৌরের একাংশ
৮পৌরের একাংশছবি: সুমন ইউসুফ

আর এতে নতুন সদস্য হিসেবে যুক্ত হয়েছে মানাস। আরও কয়েকটি ব্র্যান্ড আছে ৮পৌরেতে। এর মধ্যে ইন্দুবালা, রোজ বাই নিঝু, বেগম বাই ইশরাত, রোজানা অ্যান্ড রুবানা, সাশিকো, আচার, ডেকর আইডি উল্লেখযোগ্য।